গত ১৫ আগস্ট তালেবান ক্ষমতা দখলের আগে কাবুল বিমানবন্দরে ৮০ জনেরও বেশি নারী কাজ করতেন। এর মধ্যে ১২ জন নতুন করে কাজে ফিরলেন। শনিবার বিমানবন্দরের প্রবেশদ্বারে ৬ নারীকে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা গেছে। অভ্যন্তরীণ ফ্লাইটের আগে নারী যাত্রীদের তল্লাশি করছিলেন তারা। এ সময় তাদের তারা গল্প করতে এবং একে অন্যের সঙ্গে হাসি-ঠাট্টায় মেতে উঠতে দেখা যায়। অভ্যন্তরীণ ফ্লাইটের আগে নারী যাত্রীদের তল্লাশি করছিলেন তারা।
তবে দেশের ক্ষমতা গ্রহণের পর থেকেই তালেবানের পক্ষ থেকে নিরাপত্তার বিষয়ে সাধারণ মানুষকে আশ্বস্ত করা হয় এবং একই সঙ্গে নারীদেরও কাজে যোগ দিতে বলা হয়েছে। সংগঠনটির পক্ষ থেকে প্রথম আনুষ্ঠানিক ঘোষণায় নারীরা হিজাব পরে বাইরে বের হওয়া এবং নিজ নিজ কর্মক্ষেত্রেও ফিরতে পারবেন বলে নিশ্চয়তা দেয়া হয়।
তালেবানের এমন আশ্বাসের পর অনেক নারীই এখন কাজে ফেরার সাহস পাচ্ছেন। কাবুলের চরম আর্থিক সংকটের মধ্যে বাধ্য হয়েই কাজে যোগ দিয়েছেন এ ক’জন নারী। এর আগে বিমানবন্দরে কাজ করতেন তিন সন্তানের জননী রাবিয়া জামাল। তালেবান সরকার গঠনের পর সাহসী সিদ্ধান্ত নিয়ে তিনি আবারো কাজে যোগ দিলেন। এ প্রসঙ্গে রাবেয়া বলেন, ‘পরিবারকে সহায়তা করতে আমার টাকার প্রয়োজন। পরিবারের জন্য খুব চিন্তা হতো, এখন ভালো লাগছে।’
গাঢ় নীল রঙের বোরকায় মুখ ঢেকে রাখা এ নারী আরো বলেন, ২০১০ সাল থেকে কাবুল বিমানবন্দরে কাজ করছেন রাবেয়া। বাধা না পাওয়া পর্যন্ত এ কাজ চালিয়ে যাবেন বলে জানিয়েছেন তিনি। রাবেয়া বলেন, ‘আমার স্বপ্ন আফগানিস্তানের সবচেয়ে ধনী নারী হওয়া। আর ভাগ্য সব সময় আমার সঙ্গেই থেকেছে। যত দিন কপাল ভালো থাকবে, তত দিন আমি পছন্দের কাজ চালিয়ে যাব।’
গত ৭ সেপ্টেম্বর অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠনের ঘোষণা দেয় তালেবান গোষ্ঠী। ১৯৯৬ থেকে ২০০১ সাল পর্যন্ত তালেবান সরকারের অধীনে নারী অধিকারের চরমভাবে লঙ্ঘনের অভিযোগ ওঠে। এবার এসে এ বিষয়ে অনেকটা সুর নরম করেছে তারা। তবে তালেবানের কাজের সঙ্গে আদতে কথায় মিল নেই বলে জানিয়েছেন আফগানিস্তানে জাতিসংঘের নারীবিষয়ক মুখপাত্র অ্যালিসন ডাভিডিয়ান। তিনি বলেন, তালেবান এর মধ্যেই নারী অধিকারের বিষয়ে তাদের প্রতিশ্রুতি ভাঙা শুরু করেছে।
নয়া শতাব্দী/এম
মন্তব্য করুন
আমার এলাকার সংবাদ