সহিংসতায় বিধ্বস্ত পশ্চিম আফ্রিকার দেশ বুরকিনা ফাসোতে হামলায় প্রায় ১০০ জন নিহত হয়েছেন। নিহতদের মধ্যে নারী ও শিশুও রয়েছে। গত সপ্তাহে এই হামলার ঘটনা ঘটে। অবশ্য ভয়াবহ এই হামলার পেছনে কারা জড়িত তা স্পষ্ট নয়। এই ঘটনায় তদন্তের আহ্বান জানিয়েছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ)। সোমবার (১৩ নভেম্বর) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত সপ্তাহে বুরকিনা ফাসোতে প্রায় ১০০ জনকে হত্যার অভিযোগ তদন্তের আহ্বান জানিয়েছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন। ইইউয়ের পররাষ্ট্র নীতির প্রধান জোসেপ বোরেল এক বিবৃতিতে বলেছেন, ‘নারী ও শিশুসহ প্রায় ১০০ জন বেসামরিক লোককে গণহত্যার মাধ্যমে হত্যা করা হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।’
যুক্তরাষ্ট্রও এই হামলার নিন্দা জানিয়েছে। তবে পশ্চিম আফ্রিকার এই দেশটির জাওঙ্গো গ্রামে গত ৬ নভেম্বর হওয়া এই হামলা ও হত্যাকাণ্ডের পেছনে কারা ছিল তা এখনও স্পষ্ট নয়।
বিবিসি বলছে, নিহতদের কোন পরিস্থিতিতে মৃত্যু হয়েছে তার ওপর আলোকপাত করার জন্য বুরকিনা ফাসোর সামরিক জান্তার প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন জোসেপ বোরেল। তবে আফ্রিকার দেশটির এই জান্তা সরকার এখনও তাতে সাড়া দেয়নি।
উল্লেখ্য, ২০১৫ সাল থেকে সশস্ত্র মিলিশিয়া গোষ্ঠীগুলোর ক্রমবর্ধমান হামলা মোকাবিলায় রীতিমতো সংগ্রাম করছে বুরকিনা ফাসো। সশস্ত্র এসব গোষ্ঠীগুলোর বেশিরভাগই জঙ্গিগোষ্ঠী আল কায়দা এবং আইএস’র সঙ্গে সম্পৃক্ত। এছাড়া গত এক দশকে আফ্রিকার এই দেশটিতে সহিংসতা অনেক বেড়েছে এবং জোরালো হয়েছে।
আর এতে প্রতি বছর হাজার হাজার বেসামরিক লোক নিহত হয়েছেন। ২০ লাখেরও বেশি মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছেন এবং কয়েক হাজার মানুষ রয়েছেন অনাহারের দ্বারপ্রান্তে। সংঘাত বিশ্লেষকরা বলছেন, দেশের প্রায় অর্ধেকই সরকারি নিয়ন্ত্রণের বাইরে।
সংবাদমাধ্যম বলছে, সাম্প্রতিক মাসগুলোতে বুরকিনা ফাসোতে সহিংসতা বেড়েছে। মূলত দেশটির কর্তৃপক্ষ নিরাপত্তা কার্যক্রম বাড়ানো সত্ত্বেও সন্ত্রাসীদের নিয়ন্ত্রণে থাকা ভূমি ফিরে পেতে কার্যত সংগ্রাম করছে তারা।
যদিও জিহাদি হামলা বন্ধ করার অঙ্গীকার করে গত বছর সেনাবাহিনী দেশটির ক্ষমতা দখল করে। তারপরও সাম্প্রতিক মাসগুলোতে এই ধরনের হামলায় প্রাণহানির সংখ্যা বেড়েছে।
যুক্তরাষ্ট্র-ভিত্তিক আর্মড কনফ্লিক্ট লোকেশন অ্যান্ড ইভেন্ট ডেটা প্রজেক্ট (একলেড) অনুসারে, এ বছর এখন পর্যন্ত দেশটিতে সহিংসতার কারণে প্রায় ৮,০০০ মানুষ নিহত হয়েছেন বলে জানা গেছে।
নয়াশতাব্দী/আরজে
মন্তব্য করুন
আমার এলাকার সংবাদ