ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা ভূখণ্ডের বুরেজ শরণার্থী শিবিরে বিমান হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল। এতে অন্তত ১৫ জন নিহত হয়েছেন। বৃহস্পতিবার (২ নভেম্বর) এই শরণার্থী শিবিরের একটি আবাসিক ভবনে বিমান হামলার পর প্রাণহানির এই ঘটনা ঘটে। এছাড়া বহু মানুষ এখনও ধ্বংসস্তূপের নিচে আটকে আছেন বলেও জানানো হয়েছে।
এ নিয়ে গত কয়েকদিনে গাজার শরণার্থী শিবিরে তৃতীয় দফায় হামলার ঘটনা ঘটল। বৃহস্পতিবার রাতে এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গাজার বুরেজ শরণার্থী শিবিরে ইসরায়েলি বিমান হামলায় ১৫ জন নিহত হয়েছেন বলে কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে।
গাজা সিভিল ডিফেন্সের একজন মুখপাত্র বলেছেন, বৃহস্পতিবার মধ্য গাজার এই শিবিরে আবাসিক ভবনে হামলা চালানো হলে প্রাণহানির এই ঘটনা ঘটে এবং ধ্বংসস্তূপের নিচে বহু লোক আটকে থাকার কথা জানিয়েছেন বাসিন্দারা। হামলায় বেঁচে যাওয়া ব্যক্তি আল জাজিরাকে বলেছেন, ‘আমি এবং আমার পরিবার বসে ছিলাম, হঠাৎ আমরা বিশাল বিস্ফোরণের শব্দ শুনতে পাই। আমাদের চারপাশে সবকিছু যেন উড়ছিল। আমরা ধুলো আর ধোঁয়া ছাড়া আর কিছুই দেখতে পাইনি।
ব্যাপক হামলা হয়েছে... এক সেকেন্ডের মধ্যেই যেন পুরো এলাকা ধ্বংস হয়ে গেছে।’ ধ্বংসস্তূপের দিকে ইশারা করে তিনি বলেন, ‘ওটা আমার বাড়ি ছিল। এখন তা সম্পূর্ণ ধ্বংস হয়ে গেছে। আমি কি বলব, জানি না। আমরা অসহায়।’ আল জাজিরা বলছে, বুরেজ ক্যাম্পটি তুলনামূলকভাবে ছোট শরণার্থী শিবির যা গাজা উপত্যকার মাঝখানে অবস্থিত।
ইউনাইটেড নেশনস রিলিফ অ্যান্ড ওয়ার্কস এজেন্সি ফর প্যালেস্টাইন রিফিউজিস (ইউএনআরডব্লিউএ)-এর নিবন্ধিত প্রায় ৪৬ হাজার ফিলিস্তিনি শরণার্থীর আবাসস্থল হচ্ছে এই শিবির। মূলত গত বেশ কয়েকদিন ধরে ইসরায়েল গাজার অভ্যন্তরে শরণার্থী শিবিরগুলোতে অসংখ্য হামলা চালিয়েছে। সেগুলোও আবার প্রায়শই এমন সব এলাকায় যা অবরুদ্ধ এই ভূখণ্ডের সবচেয়ে ঘনবসতিপূর্ণ কিছু এলাকা বলে পরিচিত। ইসরায়েল বলেছে, সশস্ত্র ফিলিস্তিনি গোষ্ঠী হামাসের কমান্ডারদের লক্ষ্যবস্তু করছে তারা। যদিও ইসরায়েলের হামলায় নিহতদের বেশিরভাগই বেসামরিক নাগরিক।
ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, ইসরায়েলের নির্বিচার বোমা হামলায় এখন পর্যন্ত ৯ হাজারের বেশি মানুষ নিহত হয়েছেন এবং গাজার অর্ধেকেরও বেশি মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছেন। আল জাজিরা বলছে, বুরেজে বোমা হামলার পাশাপাশি বৃহস্পতিবার টানা তৃতীয় দিনের মতো জাবালিয়া ক্যাম্পেও হামলা চালায় ইসরায়েল।
ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, জাবালিয়ায় ইসরায়েলি হামলায় এ পর্যন্ত ১৯৫ জন নিহত হয়েছেন এবং আরও ১২০ জন নিখোঁজ রয়েছেন। জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনার বলেছেন, এ ধরনের ‘নির্বিচার হামলা’ যুদ্ধাপরাধ হিসেবে গণ্য হতে পারে।
নয়াশতাব্দী/আরজেমন্তব্য করুন
আমার এলাকার সংবাদ