ঢাকা, শুক্রবার, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৫ আশ্বিন ১৪৩১, ১৬ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬

জলবায়ু পরিবর্তনের উচ্চ ঝুঁকিতে বাংলাদেশের শিশুরা: ইউনিসেফ

প্রকাশনার সময়: ২০ আগস্ট ২০২১, ২৩:৪১

বাংলাদেশসহ দক্ষিণ এশিয়ার চার দেশের শিশুরা জলবায়ু পরিবর্তনের নেতিবাচক প্রভাবে ‘অতি উচ্চ মাত্রার’ ঝুঁকিতে রয়েছে বলে উঠে এসেছে ইউনিসেফের নতুন এক প্রতিবেদনে।

বিশ্বে জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবের শিকার হওয়ার অত্যন্ত উচ্চ ঝুঁকিতে থাকা ৬৫টি দেশের মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান ১৫তম। জাতিসংঘের শিশু তহবিলের (ইউনিসেফ) নতুন এক প্রতিবেদনে একথা বলা হয়েছে। বাংলাদেশ ছাড়াও উচ্চ ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে দক্ষিণ এশিয়ার তিনটি দেশ আফগানিস্তান, ভারত ও পাকিস্তান।

ইউনিসেফের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়, তাদের এ ধরনের প্রতিবেদন এটাই প্রথম। প্রতিবেদনের তথ্য অনুযায়ী, আফগানিস্তান, বাংলাদেশ, ভারত ও পাকিস্তানের শিশুরা দাবদাহ ও বন্যার মতো জলবায়ু পরিবর্তনজনিত ঝুঁকির ক্ষেত্রে অত্যন্ত ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে। এই চারটি দেশের শিশুদের জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে স্বাস্থ্য, শিক্ষা ও সুরক্ষা হুমকির মধ্যে রয়েছে। এর পাশাপাশি বৈশ্বিক পর্যায়ে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত ৬৫টি দেশের মধ্যে রয়েছে নেপাল ও শ্রীলঙ্কা।

‘জলবায়ু সংকট মূলত শিশু অধিকারের সংকট: শিশুদের জলবায়ু ঝুঁকি সূচক (সিসিআরআই) প্রবর্তন’ শীর্ষক প্রতিবেদনে ইউনিসেফ প্রথম শিশুকেন্দ্রিক জলবায়ু ঝুঁকি সূচক উল্লেখ করেছে। এতে শিশুদের ঘূর্ণিঝড় ও দাবদাহের মতো জলবায়ু ও পরিবেশগত প্রভাবের মুখে পড়ার পাশাপাশি তাদের জরুরি পরিষেবা পাওয়ার সুযোগ কতটা ঝুঁকিতে রয়েছে, তার ওপর ভিত্তি করে প্রতিবেদনে দেশগুলোকে ক্রমানুসারে স্থান দেওয়া হয়েছে।

এই তালিকায় পাকিস্তান, বাংলাদেশ, আফগানিস্তান ও ভারতের অবস্থান যথাক্রমে ১৪, ১৫, ১৫ ও ২৬ নম্বরে। নেপালের অবস্থান ৫১, শ্রীলঙ্কা আছে ৬১তম স্থানে। ভুটান আছে ১১১তম অবস্থানে, যেখানে শিশুরা অপেক্ষাকৃত কম ঝুঁকিতে আছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বিশ্বের প্রায় ১০০ কোটি শিশু অত্যন্ত উচ্চ ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে চিহ্নিত ৩৩টি দেশে বসবাস করে। এগুলোর মধ্যে বাংলাদেশসহ দক্ষিণ এশিয়ার চারটি দেশ রয়েছে।

দক্ষিণ এশিয়ায় ইউনিসেফের আঞ্চলিক পরিচালক জর্জ লারিয়া-আদজেই বলেন, ‘প্রথমবারের মতো দক্ষিণ এশিয়ার লাখো শিশুর ওপর জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবের স্পষ্ট প্রমাণ আমরা পেয়েছি। এই অঞ্চলে খরা, বন্যা, বায়ুদূষণ ও নদীভাঙনের কারণে লাখো শিশু গৃহহীন ও ক্ষুধার্ত, স্বাস্থ্যসেবা ও পানিবিহীন অবস্থায় রয়েছে। জলবায়ু পরিবর্তন ও কোভিড-১৯ মহামারি মিলে দক্ষিণ এশিয়ার শিশুদের জন্য একটি উদ্বেগজনক সংকট তৈরি করেছে। এখনই পদক্ষেপ গ্রহণের সময়। আমরা যদি পানি, স্বাস্থ্যসেবা ও শিক্ষায় বিনিয়োগ করি, তাহলে পরিবর্তনশীল জলবায়ু এবং ক্রমশ খারাপের দিকে যাওয়া পরিবেশের প্রভাব থেকে তাদের ভবিষ্যৎকে আমরা রক্ষা করতে পারি।’

দক্ষিণ এশিয়ায় ৬০ কোটির বেশি শিশুর বসবাস এবং এই অঞ্চলে বিশ্বের সবচেয়ে বেশিসংখ্যক তরুণ জনগোষ্ঠী রয়েছে। জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে সৃষ্ট দাবদাহ, ঘূর্ণিঝড়, বন্যা, আগুন ও খরায় এই অঞ্চলের অর্ধেকের বেশি মানুষের জীবনে প্রতিবছর প্রভাব পড়ে এবং দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর অর্থনীতির ওপর অব্যাহতভাবে চাপ সৃষ্টি করে।

প্রতিবেদনে বলা হয়, দক্ষিণ এশিয়ায় তরুণেরা জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবিলায় উদ্যোগ নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছেন। বাংলাদেশে ২৩ বছর বয়সী তাসিন এ নিয়ে কাজ করছেন। তাঁর প্রতিষ্ঠিত তরুণদের একটি সংগঠন নিয়ে তিনি দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে পরিচ্ছন্নতার কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন। বৃক্ষরোপণ ছাড়াও প্লাস্টিক দ্রব্য কুড়িয়ে রিসাইকেল করা প্রতিষ্ঠানের কাছে বিক্রি করেন তাঁরা। পাকিস্তানে ১৪ বছর বয়সী জামাল প্লাস্টিক দ্রব্য পরিষ্কার করার কাজ করছেন। ভারতের দিব্বি দেশজুড়ে বৈশ্বিক উষ্ণতা নিয়ে সচেতনতামূলক কাজ করছেন।

নয়া শতাব্দী/এম

নয়া শতাব্দী ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

এ সম্পর্কিত আরো খবর
  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

আমার এলাকার সংবাদ