দীর্ঘ ২০ বছর পর মার্কিন বাহিনীকে হটিয়ে আফগানিস্তানের নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে বিদ্রোহী গোষ্টি তালেবান। দেশটির সাবেক প্রেসিডেন্ট আশরাফ গানি দেশ ছেড়ে পালিয়ে আফগানকে বিজয়ী ঘোষণা করেছে। তবে বেকে বসেছেন উপরাষ্ট্রপতি আমরুল্লাহ সালেহও। সালেহও পালিয়ে গেলেও তিনি এবার নিজেকে আফগানিস্তানের রাষ্ট্রপতি ঘোষণা করেছেন।

মঙ্গলবার (১৭ আগস্ট) নিজেকে অন্তর্বর্তীকালীন রাষ্ট্রপতি ঘোষণা করে টুইটার বার্তায় সালেহ লেখেন, ‘আফগানিস্তানের সংবিধান অনুযায়ী দেশের রাষ্ট্রপতি মারা গেলে বা ইস্তফা দিলে, পালিয়ে গেলে, অথবা তার অনুপস্থিতিতে উপরাষ্ট্রপতি কেয়ারটেকার প্রেসিডেন্ট হন। আমি এখন দেশের ভেতরেই আছি আর আমি আইনত কেয়ারটেকার প্রেসিডেন্ট। সব নেতাদের সমর্থন আর সম্মতি পেতে আমি তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করছি।

আর এক টুইট বার্তায় সালেহ বলেন, ‘আমি শেষ পর্যন্ত তালেবানের বিরুদ্ধে লড়ে যাবো। আমি কখনোই তালেবানের কাছে মাথা নত করব না।’

এদিকে হিন্দুস্তান টাইমস জানায়, এরই মধ্যে তালেবানের বিরুদ্ধে যুদ্ধের প্রস্তুতি নিতে শুরু করেছে আফগানিস্তানের উত্তরে বসাবসরত বিভিন্ন জনগোষ্ঠীর যোদ্ধারা।

জানা যায়, ‘নর্দার্ন অ্যালায়েন্স নামক একটি জোট এর আগে ১৯৯৬ থেকে ২০০১ সালে তালেবানদের বিরুদ্ধে লড়াই করেছিল। আপাতত এই জোটকে ফের সংঘবদ্ধ করছেন আফগান যোদ্ধা আহমেদ শাহ মাসুদের ছেলে।’

সেই জোটের সঙ্গে আলি রাশিদ দোস্তুম নামে এক উজবেক যোদ্ধা আছেন বলেও জানা যায়। এই জোটেই যোগ দিয়েছেন সদ্য সাবেক হওয়া উপরাষ্ট্রপতি আমরুল্লাহ সালেহও। সালেহের মাসুদের অধীনেই প্রথমে সোভিয়েত পরে তালেবানের বিরুদ্ধে লড়াই করার অভিজ্ঞতাও রয়েছে বলেও জান যায়।

আমরুল্লাহ সালেহও বর্তমানে পঞ্জশিরে রয়েছেন বলে বিভিন্ন সূত্রে হতে জানা গেছে। সেখানে বসে তিনি বিভিন্ন জনজাতির যোদ্ধাগোষ্ঠীর সঙ্গে মিলে ফের তালেবানের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের ছক কষছেন!

উল্লেখ্য, ১৯৯৬ থেকে ২০০১ সালের মধ্যে আফগানে গৃহযুদ্ধ হয়। সেই সময় কখনোই হিন্দুকুশের মাঝে থাকা এই পঞ্জশির প্রদেশ নিজেদের নিয়ন্ত্রণে নিতে পারেনি তালেবান। এবারও পঞ্জশিরে এখনও পা রাখতে পারেনি তালেবান।

পঞ্জশিরের ভৌগোলিক অবস্থানের জন্য এটিকে দুর্গে পরিণত করে। পার্বত্য এই এলাকা দখলে অসমর্থ হয়েছিল সোভিয়েত ইউনিয়নও। এরই মাঝে এই দুর্গে উত্তরের যোদ্ধাদের এই জোটের পতাকা উড়িয়ে তালেবানকে স্পষ্ট বার্তা পাঠানো হচ্ছে বলেও জানা যায়।

নয়া শতাব্দী/জেআই/এম