উৎপত্তিস্থল চীনে নতুন করে বাড়ছে করোনাভাইরাস। সেইসঙ্গে ইউরোপের কয়েকটি দেশেও নতুন করে করোনার উপদ্রব বাড়তে শুরু করেছে। পরিস্থিতি মোকাবিলায় ভারতও আগেভাগেই সতর্কতা জারি করেছে। সরকারের পক্ষ থেকে সবাইকে ভিড় হয়, এমন জায়গায় মাস্ক পরতে বলা হয়েছে। সেইসঙ্গে বুস্টার ডোজ নেওয়ার কথাও বলা হয়েছে।
বুধবার (২১ নভেম্বর) দেশের করোনা পরিস্থিতি নিয়ে উচ্চ পর্যায়ের বৈঠক করছেন কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী মনসুখ মাণ্ডবীয়। সেখানে আলোচনা হয়েছে- আপাতত নিয়ন্ত্রণে রয়েছে দেশের করোনা পরিস্থিতি। নতুন করে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা সেভাবে বাড়েনি। তার পরেও বিশ্বব্যাপী করোনা পরিস্থিতির দিকে নজর দিয়ে আলাদা করে সতর্ক থাকার সিদ্ধান্ত হয়েছে ওই বৈঠকে।
ভারতীয় গণমাধ্যম আনন্দবাজার এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, বুধবার থেকে ভারতের প্রতিটি আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে করোনা পরীক্ষা শুরু হচ্ছে। বিদেশ থেকে আগত বিমানের ক্ষেত্রে নজরদারি বাড়ানো হয়েছে। বিমানবন্দরগুলিকে বিভিন্ন বিধিনিষেধ মানতে নির্দেশ দিচ্ছে সরকার।
এদিকে পশ্চিমবঙ্গেও পরিস্থিতির উপর নজর রাখার নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বুধবার এ নিয়ে তিনি একটি কমিটি গড়ার নির্দেশ দিয়েছেন। সেই নির্দেশ মতো নজরদারি কমিটিও গঠন করেছে স্বাস্থ্য দফতর। স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা গেছে, মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশ মেনেই ওই কমিটির মাথায় রাখা হয়েছে রাজ্যের স্বাস্থ্যসচিবকে। এ ছাড়াও ওই কমিটিতে করোনা চিকিৎসার অভিজ্ঞতা রয়েছে এমন কোভিড বিশেষজ্ঞদের রাখা হবে।
স্বাস্থ্য দফতর সূত্রের বরাদ দিয়ে আনন্দবাজার জানায়, শিগগিরই বৈঠকে বসতে পারে ওই নজরদারি কমিটি। কোভিড পরিস্থিতির বিষয়টি নজরে ভবিষ্যতে কী কী নির্দেশিকা জারি করা যেতে পারে, ওই বৈঠকে তা নিয়ে আলোচনার সম্ভাবনা রয়েছে। মাস্ক পরা, শারীরিক দূরত্ববিধি বজায় রাখার মতো নিয়মের উপর আবার জোর দেওয়া নিয়েও আলোচনা হতে পারে।
সরকারি সূত্রের বরাত দিয়ে পিটিআই জানায়, চীনে করোনার নতুন যে রূপটি এখন আতঙ্ক ছড়াচ্ছে, অমিক্রনের সেই ‘বিএফ.৭’–এ আক্রান্ত তিন রোগীর সন্ধান ভারতে পাওয়া গেছে। এ সংক্রমণের প্রথমটি পাওয়া যায় গুজরাটে, গত অক্টোবরে। গুজরাট বায়োটেকনোলজি রিসার্চ সেন্টার ওই রূপের হদিস দিয়েছিল। দ্বিতীয় নমুনার সন্ধানও মিলেছিল গুজরাটে। তৃতীয়টির দেখা পাওয়া গেছে ওডিশায়।
এরআগে গতকাল মঙ্গলবার কেন্দ্রীয় সরকারের পক্ষ থেকে সব রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলকে কোভিডের নয়া বাড়বাড়ন্ত নিয়ে সতর্ক করে দেওয়া হয়। কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যসচিব রাজেশ ভূষণ রাজ্যগুলোকে জানান, নতুন করে সংক্রমণ দেখা দিলে প্রতিটি নমুনা জিনোম সিকোয়েন্সিংয়ের জন্য পরীক্ষাগারে পাঠাতে হবে। এসব পরীক্ষাগারে করোনাভাইরাসের নতুন রূপ ও প্রজাতি নিয়ে গবেষণা জারি রয়েছে।
তিনি বলেন, নতুন করে বিশ্বব্যাপী সংক্রমণ বাড়ছে বলে দেশে জিনোম সিকোয়েন্সিং প্রক্রিয়া দ্রুতগামী করতে হবে, যাতে নতুন প্রজাতি ভয়ংকর হয়ে ওঠার আগেই তার মোকাবিলায় নামা যায়।
ভারতে এ মুহূর্তে কোভিডের প্রকোপ নিতান্তই কম। গত ২৪ ঘণ্টায় দেশটিতে মাত্র ১১২টি নতুন সংক্রমণের খবর পাওয়া গেছে। দেশে সক্রিয় রোগীর সংখ্যা সাড়ে তিন হাজারের কম। গত ২৪ ঘণ্টায় মৃত্যু হয়েছে তিনজনের।
নয়া শতাব্দী/জেআই
মন্তব্য করুন
আমার এলাকার সংবাদ