ভারতের উত্তর প্রদেশ রাজ্যের একটি জেলায় কমপক্ষে ৮৯ জনের দেহে জিকা ভাইরাস শনাক্ত করা হয়েছে। আক্রান্তদের মধ্যে ১৭টি শিশু রয়েছে বলে জানা গেছে। কানপুরের প্রধান মেডিকেল অফিসার ড. নেপাল সিং বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে বলেছেন, ওই জেলায় ভাইরাসটির সংক্রমণ বেড়ে গেছে।
ভারতে এর আগে ২০১৭ সালে গুজরাট রাজ্যে প্রথমবারের মতো জিকা ভাইরাসের সংক্রমণ নিশ্চিত করা হয়েছিল। মশাবাহিত এই ভাইরাসে আক্রান্ত হলে শিশুদের মস্তিষ্ক শুকিয়ে ছোট হয়ে যায় বলে চিকিৎসকরা ধারণা করে থাকেন। যদিও এই ভাইরাসটি মূলত মশার মাধ্যমে পরিবাহিত হয়, যৌন সম্পর্কের মাধ্যমেও এটি ছড়িয়ে পড়তে পারে।
কর্মকর্তারা বলছেন, উত্তর প্রদেশে এই প্রথম জিকা ভাইরাসের প্রকোপ দেখা গেল। প্রথম সংক্রমণ শনাক্ত হয় কানপুর শহরে, ২৩ অক্টোবর। স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা বলছেন, এর পর থেকে সেখানে ভাইরাসটির সংক্রমণ বেড়েই চলেছে। জিকা ভাইরাসে আক্রান্ত হিসেবে যাদের শনাক্ত করা হয়েছে তাদের মধ্যে একজন গর্ভবতী নারীও রয়েছেন।
মেডিকেল অফিসার সিং বলেন, জিকা ভাইরাসের সংক্রমণের ওপর নজর রাখা এবং এর বিস্তার ঠেকানোর জন্য কর্তৃপক্ষ বিশেষজ্ঞদের নিয়ে কতগুলো দল গঠন করেছে।
করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগীদের সামাল দিতে ভারত যখন হিমশিম খাচ্ছে, তখনই নতুন করে এই জিকা ভাইরাসের প্রকোপ দেখা দিল।
উগান্ডায় ১৯৪৭ সালে বানরের দেহে প্রথমবারের মতো জিকা ভাইরাস চিহ্নিত করা হয়েছিল। মানবদেহে এর প্রথম সংক্রমণ শনাক্ত হয় ১৯৫৪ সালে, নাইজেরিয়ায়। এর পর থেকে আফ্রিকা, দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া এবং প্রশান্ত মহাসাগরীয় দ্বীপগুলোতে জিকা ভাইরাসের প্রকোপ দেখা দিয়েছে। ব্রাজিলে ২০১৫ সালের মে মাসে এই ভাইরাসের সংক্রমণ ঘটেছিল যা খুব দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে।
যেহেতু এই রোগের কোনো চিকিৎসা নেই, তাই ঝুঁকি কমানোর একমাত্র উপায় মশার কামড় থেকে নিজেকে রক্ষা করা।
জিকা ভাইরাসে আক্রান্ত হলে মৃত্যুর ঘটনা বিরল। যারা আক্রান্ত হন তাদের পাঁচজনের মধ্যে মাত্র একজনের শরীরে এর উপসর্গ দেখা দেয়। এসব উপসর্গের মধ্যে রয়েছে- হালকা জ্বর, চোখ জ্বালাপোড়া কিংবা লাল হয়ে যাওয়া, মাথাব্যথা, হাড়ের জোড়ায় ব্যথা, ত্বকে ফুসকুড়ি পড়া প্রভৃতি।
নয়া শতাব্দী/এম
মন্তব্য করুন
আমার এলাকার সংবাদ