গণঅভ্যুত্থান এবং তার পরবর্তী সময়ে সৃষ্ট অস্থির পরিস্থিতিতে দেশের অনেক মানুষ মানসিক চাপ, উদ্বেগ, হতাশা এবং আতঙ্কের মধ্যে দিন কাটাচ্ছেন। এই সংকট মোকাবিলায়, বেশ কয়েকটি মেন্টাল হেলথ সার্ভিস ও সাপোর্ট প্রতিষ্ঠান বিনামূল্যে মানসিক স্বাস্থ্যসেবা প্রদানের উদ্যোগ নিয়েছে। এই উদ্যোগের অংশ হিসেবে, চলতি মাসে ‘পাশে আছি’ শিরোনামে একটি ক্যাম্পেইন চালু করা হয়েছে। চলবে আগামী ২ মাস।
এই অনলাইন মানসিক স্বাস্থ্য সহায়তা প্রদানকারী উদ্যোগের পেছনে রয়েছে সাইকোচ বাংলাদেশ, মেন্টাল হেলথ প্রফেশনালস ফর বাংলাদেশ (এমএইচপিবি) এবং চাম ওয়েলনেস। প্রোগ্রামটির সুপারভাইজার হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন সাইকোচ বাংলাদেশের সায়মা আকতার, এমএইচপিবির জোহরা পারভীন এবং চাম ওয়েলনেসের পক্ষ থেকে রয়েছেন রাফিউল ইসলাম।
সাইকোচ বাংলাদেশের সায়মা আকতার এক বিবৃতিতে জানান- সাম্প্রতিক পরিস্থিতিতে মৃত্যুর ঘটনা, গ্রেফতার, রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক অস্থিশীলতা, আইনগত নিরাপত্তাহীনতা এবং ক্রমাগত পরিবর্তনের/ অনিশ্চয়তার ফলে অনেকের মধ্যে মানসিক চাপ ও উদ্বেগ তৈরি হয়েছে। ফলাফল হিসেবে আমরা বিভিন্ন সামাজিক অস্থিশীলতা, যেমন- পারস্পরিক শ্রদ্ধাবোধের সহমর্মিতার ও সহনশীলতার ঘাটতি দেখতে পাচ্ছি। ‘পাশে আছি’ ক্যাম্পেইনটি তাদের মানসিক শক্তি বৃদ্ধি করে এই প্রতিকূল পরিস্থিতি মোকাবিলার সক্ষমতা বৃদ্ধির প্রচেষ্টা চালাচ্ছে।
এমএইচপিবির আহ্বায়ক জোহরা পারভীন বলেন, জুলাই ২০২৪ এর নজিরবিহীন ঘটনায় বাংলাদেশের সকল মানুষ স্তম্ভিত এবং প্রভাবিত। অনেকেই মানসিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে গেছেন এবং এখনো বিপর্যস্ত আছেন। থমকে যাওয়া জীবনকে চালিয়ে নিয়ে যেতে এবং ক্রমান্বয়ে সুন্দরভাবে পরিচালনা করার জন্য কিছু মনোবৈজ্ঞানিক কৌশল জানা খুবই প্রয়োজন। এরই লক্ষ্যে আমরা এক দল ক্লিনিক্যাল সাইকোলজিস্ট নিজেদেরকে একান্তভাবে নিয়োগ করেছি। আমরা আপনাদের পাশে আছি।
চাম ওয়েলনেসের সহ-প্রতিষ্ঠাতা রাফিউল ইসলাম বলেন- আমরা আশা করি, যারা আমাদের প্ল্যাটফর্ম থেকে মানসিক সহায়তা নিচ্ছেন, তারা মানসিক চাপ কাটিয়ে ভবিষ্যৎ নিয়ে আশাবাদী হয়ে উঠছেন। আমরা আরও চাই যে, অন্য প্রতিষ্ঠানগুলোও এগিয়ে এসে আমাদের এই যাত্রায় অংশ নিক, তাতে আমরা কৃতজ্ঞ থাকব।
এই ‘পাশে আছি’ প্রোগ্রামে ৩৫ জনের অধিক ক্লিনিক্যাল সাইকোলজিস্ট যুক্ত রয়েছেন। যারা ইতোমধ্যে ৪০০-এর অধিক মানুষকে মানসিক স্বাস্থ্যসেবা প্রদান করেছেন। গত ২৩ আগস্ট ‘আশার আলো’ শিরোনামে একটি ওয়েবিনার আয়োজন করা হয়। যার মাধ্যমে আরও বেশি মানুষকে এই সেবার বিষয়ে জানানো হয়েছে।
ছাত্রসমাজ, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য, অভিভাবক, শিক্ষকসহ সকলের মানসিক স্বাস্থ্যের উন্নয়নের জন্যই এই সমাজসেবামূলক উদ্যোগটি গ্রহণ করেছে সংগঠনগুলি।
নয়াশতাব্দী/টিএ
মন্তব্য করুন
আমার এলাকার সংবাদ