ঢাকা, রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

কোমর ব্যথা হলে...

প্রকাশনার সময়: ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২১, ১০:০৪

অনেকের কোমর ব্যথা হয়। কারো স্বল্প সময়ের জন্য, আবার কারো দীর্ঘ সময়ের জন্য এ ব্যথা হতে পারে। কোমর ব্যথা অনেক কারণে হতে পারে। এ জন্য আমরা নিজেরাই অনেকাংশে দায়ী। কারণ, অনেকেই জানেন না দেহের সঠিক অঙ্গভঙ্গি। সঠিক নিয়মে ওঠা, বসা ও কাজ করলে ৭০ শতাংশ কোমর ব্যথা ভালো হয়।

মেরুদণ্ডের নিচের দিকে অবস্থিত কোমরের অংশকে ‘লাম্বার রিজিওন’ বলে। লাম্বার রিজিওনে পাঁচটি হাড় থাকে। দেহের গঠন অনুযায়ী ৩, ৪ ও ৫ নম্বর লাম্বার কশেরুকার মধ্যে বেশি আঘাত লাগে এবং ব্যথা বেশি অনুভূত হয়। মেরুদণ্ডের প্রতিটি হাড়ের মধ্যে একটি নরম অংশ থাকে, যাকে বলে ইন্টারভার্টিব্রাল ডিস্ক। কোনো কারণে একটি কশেরুকা অপরটির ওপর চাপ দিলে স্পাইনাল কর্ডের ওপর চাপ সৃষ্টি করে। ফলে ব্যথা অনুভূত হয়। এ ছাড়া আঘাতের কারণে, অতিরিক্ত ভ্রমণ, অতিরিক্ত ওজন বহন, শুয়ে-বসে কাজ করা ইত্যাদি কারণেও ব্যথা হয়। চল্লিশ ঊর্ধ্বদের মেরুদণ্ডের হাড়ের ক্ষয়ের কারণে ব্যথা হয়ে থাকে। বেশিরভাগ কোমর ব্যথা গুরুতর নয়। প্রাথমিক চিকিৎসা যেমন বিশ্রাম, চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী কিছু ব্যথানাশক ওষুধ সেবন এবং নিয়মিত ফিজিওথেরাপি চিকিৎসার মাধ্যমে এটি ভালো হয়ে যায়। খুবই অল্প কিছু ক্ষেত্রে অস্ত্রোপচারের দরকার হয়। নানা কারণে কোমর ব্যথা হয়। সেগুলো হচ্ছে উপুড় হয়ে ভারি বস্তু ওঠানো, দীর্ঘক্ষণ বসে বা দাঁড়িয়ে অনেক দিন কাজ করা, কোমরের মাংসপেশি দুর্বল, দুর্ঘটনা বা ওপর থেকে পড়ে গিয়ে কোমরে আঘাত, কোমরের হাড়ক্ষয়, অতিরিক্ত ওজন, মেরুদণ্ডের হাড়ের গঠনগত সমস্যা, আর্থ্রাইটিস, মেরুদণ্ডের টিউমার, মেরুদণ্ডের ডিফরমিটি, নরম বিছানায় দীর্ঘক্ষণ শুয়ে থাকা, দীর্ঘক্ষণ উপুড় হয়ে শুয়ে বই পড়া অথবা সোফায় শুয়ে টিভি দেখা ইত্যাদি।

প্রতিরোধ

উপুড় হয়ে কোনো প্রকার ভারি বস্তু ওঠানো যাবে না। নরম ফোমের বিছানায় দীর্ঘক্ষণ শুয়ে থাকা যাবে না। শরীরের অতিরিক্ত ওজন কমাতে হবে। সোজা হয়ে বসতে হবে। সঠিক অঙ্গভঙ্গি বজায় রাখা জরুরি। এক অবস্থায় বসে দীর্ঘক্ষণ কাজ করা ঠিক নয়। দীর্ঘদিন কম্পিউটার, ল্যাপটপ চালাবেন না। দীর্ঘ ভ্রমণের সময় গাড়ির মাঝামাঝি বসতে হবে।

চিকিৎসা

বিশেষজ্ঞ ফিজিওথেরাপি চিকিৎসকের পরামর্শে সঠিক চিকিৎসা ও ব্যয়াম নিয়মিত করলে উপশম পাওয়া যায়। পর্যাপ্ত বিশ্রাম নিতে হবে। গরম পানির সেঁক দিতে হবে। ভ্রমণের সময় কোমরের সাপোর্ট বেল্ট ব্যবহার করুন। ভিটামিন, ক্যালসিয়াম এবং প্রোটিনজাতীয় খাবার বেশি খেতে হবে। শরীরের ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে। কোনো কোনো ক্ষেত্রে কোমর ব্যথার জন্য অস্ত্রোপচারের দরকার হতে পারে।

লেখক : মো. সাইদুর রহমান, ফিজিওথেরাপি বিশেষজ্ঞ

নয়া শতাব্দী/এসএম

নয়া শতাব্দী ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

এ সম্পর্কিত আরো খবর
  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

আমার এলাকার সংবাদ