এখন পুরো দিনে কয়েকবার আকাশের রং পাল্টায়। সকালে কুয়াশায় ঢেকে থাকে ভোরের আকাশ, দুপুরে ঝলমলে ওঠে রোদের কিরণ আর বিকালে দলবেঁধে নামে ছায়া-মায়ার আবরণ। এর মধ্যে তাড়াইলের বিস্তীর্ণ জমিনজুড়ে বিস্তৃত হলুদ কৃষককে আন্দোলিত করে।
কিশোরগঞ্জের তাড়াইলের বিস্তীর্ণ সরিষার ক্ষেত মানে বিস্তীর্ণ হলুদ। যতদূর চোখ যায়, শুধু হলুদ আর হলুদ। মনে হয় চোখে হলুদ চশমা। সরিষা ফুলের দেশে মৌমাছির মধু সংগ্রহের গুঞ্জনে মুখরিত ফসলের মাঠ। সরিষা ফুলে বাতাসের দোলায় দোল খাচ্ছে কৃষকের রঙিন স্বপ্ন।
দেশের অন্যতম একটি তেল ও মসলা জাতীয় খাদ্য শষ্যের নাম সরিষা। সরিষা খুবই লাভজনক ফসল। অতি অল্প সময়ে, অল্প পুঁজিতে কৃষকরা লাভবান হন।
উপজেলার কৃষকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, সরিষা কেটে ওই জমিতে আবার বোরো আবাদ করা যায়। এতে অল্প সময়ে একই জমিতে দুটি ফসলের চাষে লাভবান হচ্ছে কৃষক। একসময় কৃষকরা আমন ধান কাটার পর জমি পতিত ফেলে রাখত।
উপজেলা কৃষি অফিস জানিয়েছে, চলতি মৌসুমে উপজেলার ৭টি ইউনিয়নে ৮০০ হেক্টর জমিতে সরিষা চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে।
উপজেলার তাড়াইল-সাচাইল সদর ইউনিয়নের কালনা গ্রামের কৃষক হাবিবুর রহমান বলেন, দুই একর জমিতে সরিষা চাষ করেছি। প্রতি একর জমিতে প্রায় ৪ হাজার টাকা করে ব্যয় হয়েছে। সরিষার ক্ষেতে গেলে প্রাণটা ভরে যায়।
একই গ্রামের কৃষক ফজলুর রহমান বলেন, আমি আড়াই একর জমিতে সরিষা চাষ করেছি। আশা করছি ভালো ফলন হবে। এই সরিষা বিক্রি করে বোরো আবাদের তেল ও সার কেনার টাকা জোগাড় হয়ে যাবে।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আশরাফুল আলম বলেন, সরিষা মূলত একটি মসলা জাতীয় ফসল। স্বল্প সময়ের মধ্যে কৃষককে অধিক ফলন পেতে আমি এবং আমার উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তারা বিভিন্ন পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছি। যাতে কৃষকেরা কোনো সমস্যার সৃষ্টি না হয়। আশা করছি কোনো প্রকার প্রাকৃতিক বিপর্যয় না ঘটলে এবার এই উপজেলায় সরিষার বাম্পার ফলন হবে।
নয়া শতাব্দী/আরআর
মন্তব্য করুন
আমার এলাকার সংবাদ