সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে বিখ্যাত মানুষদের নামের পাশে সুন্দর একটি নীল-সাদা টিক চিহ্ন প্রায়ই দেখা যায়। সাধারণত অভিনেতা, সংগীতশিল্পী, রাজনীতিবিদ, লেখক ও ইনফ্লুয়েন্সারদের নামের পাশেই দেখা যায় এই ভেরিফায়েড চিহ্নটি। তবে বিখ্যাত কেউ না হলেও আপনার ব্যক্তিগত বা ব্যবসায়িক ফেসবুক অ্যাকাউন্টকে ভেরিফারেড করতে পারবেন আপনি নিজেই। আর এর জন্য আপনাকে ফেসবুকের কয়েকটি ধাপ সম্পন্ন করতে হবে।
এই লেখাটির মাধ্যমে আমি সেই প্রক্রিয়া তুলে ধরবো। কীভাবে পাবেন সোনার হরিণ ব্লু ব্যাজ। ফেসবুক সাধারণত সবাইকে ব্লু ব্যাজ দেয় না। বিশেষ কিছু মানুষকে দিয়ে থাকে। তবে আপনাকে ফেসবুকের কাছে এটা বুঝাতে হবে যে আপনারও ব্লু ব্যাজ দরকার এবং তাদের নিয়ম ফলো করে আবেদন করতে হবে।
প্রথম কথা ফেসবুকে ব্লু ব্যাজ পাওয়ার জন্য তাদের বেশ কিছু শর্ত রয়েছে সেগুলো আপনার থাকতে হবে। না হলে ফেসবুক কখনই আপনাকে ব্লু ব্যাজ দিবে না। তবে এ জন্য লাখ লাখ ফলোয়ার লাগবে না। শুধু মাত্র সঠিক উপায়ে আবেদনের মাধ্যমেই পেতে পারেন ব্লু ব্যাজ। ফেসবুকের নিজস্ব এই আর্টিকেল থেকেও ব্লু ব্যাজ পাওয়ার শর্ত গুলো জেনে নিতে পারেন:
প্রথমেই আপনার প্রোফাইল শতভাগ তথ্যপূর্ণ করুন। বিশেষ করে আপনার জাতীয় পরিচয় পত্র অথবা পাসপোর্ট কিনবা ড্রাইভিং লাইসেন্স এর সাথে মিল রেখে নাম এবং জন্ম তারিখ সেট রাখুন। আইডি নামের সাথে ম্যাচ রেখে আইডি ইউআরএল যুক্ত করুন। মোট কথা ফেসবুককে সঠিকভাবে সকল তথ্য দিন। এর পরে আপনার যেটা করতে হবে সেটা খুব সেনসেটিভ। কারণ আপনি যখন আবেদন করবেন তখন যদি সেখানে তাদের বুঝাতে না পারেন আপনি কেন ব্লু ব্যাজ চাচ্ছেন তখন না পাওয়ার সম্ভাবনা খুব বেশি থাকে। তাই আপনার আবেদনটি সুন্দর করে গুছিয়ে লিখে করবেন। এছাড়াও ফেসবুক চায় আপনি কোনো সেলিব্রেটি কিংবা রাজনীতিক ব্যক্তি হন। আপনার নামে উইকিপিডিয়ায় একটা প্রোফাইল ক্রিয়েট হোক। কিন্তু সবার তো আর উইকিপিডিয়াতে একাউন্ট থাকে না। এ জন্য আপনি আপনার নামে প্রকাশিত কোনো মিডিয়ার নিউজ কিনবা যেকোনো আর্টিকেলের লিংক তাদের দিন। এছাড়াও আপনার অন্যান সোশ্যাল মিডিয়ার একাউন্টও সেখানে দিন। তবে এ ক্ষেত্রে মাথায় রাখবেন প্রত্যক একাউন্টের ডিটেলস্ যেন একই থাকে।
এবার মাথা ঠাণ্ডা রেখে, সব কিছু পরিপূর্ণভাবে জমা দিয়ে আবেদন করুন।
১. প্রথমে হেল্প এন্ড সাপোর্ট অপশনে যেতে হবে। ২. এবার সার্চ বারে ব্লু ব্যাজ লিখে সার্চ দিলেই ফেসবুক জানতে চাইবে আপনি আপনার অ্যাকাউন্ট বা পেইজটি ভেরিফায়েড করতে চাচ্ছেন কি-না। চাইলে ক্লিক করুন।
৩. এরপর পেইজ বা প্রোফাইল অপশন থেকে যেকোনো একটি নির্বাচন করুন।
৪. আপনার দেশ নির্বাচন করুন।
৫. নির্দিষ্ট ক্যাটাগরি নির্বাচন করুন।
৬. আপনার ব্যক্তিগত পরিচয়পত্র যেমন- জাতীয় পরিচয়পত্র, পাসপোর্ট, ফোন বা ইউটিলিটি বিল ইত্যাদি যে কোনোটির স্ক্যান কপি নির্দিষ্ট স্থানে আপলোড করুন।
৭. কেন আপনি নির্ধারিত বক্সে ভেরিফাই করতে চাচ্ছেন তা উল্লেখ করুন।
৮. আপনার অন্যান্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের অ্যাকাউন্ট যেমন- ইন্সটাগ্রাম, টুইটার, লিংকড ইন ইত্যাদির লিংকগুলো জমা দিন।
৯. এবার সেন্ড ক্লিক করে তথ্যগুলো সাবমিট করুন।
১০. সাবমিট হয়ে যাবার পর ফেসবুক আপনার আবেদনের অবস্থা জানিয়ে দেবে। এবং সব তথ্য সঠিক থাকলে আপনার অ্যাকাউন্টটিও ভেরিফায়েড হয়ে যাবে।মার্ক জাকারবার্গের হাত ধরে ২০০৪ সালের ৪ ফেব্রুয়ারি যাত্রা শুরু করে সামাজিক যোগাযোগের এই মাধ্যমটি।ম হার্ভার্ড ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থীদের অনলাইনে একত্রীকরণের পরিকল্পনা থেকে দ্য ফেসবুক নাম নিয়ে শুরু হয় ফেসবুকের যাত্রা। ৪৭৯ বিলিয়ন ডলার বাজারমূল্যের প্রতিষ্ঠানটির বর্তমানে ব্যবহারকারীর সংখ্যা প্রায় ২৩২ কোটি। ২০১৮ সালে ফেসবুকের মোট মুনাফা ছিল ২২ দশমিক ১ বিলিয়ন ডলার, যা ২০১৭ সালের চেয়ে ৩৯ শতাংশ বেশি। ফেসবুকের বিরুদ্ধে গোপনীয়তা রক্ষা না করা এবং ক্ষতিকর কন্টেন্ট ছড়ানোয় ভূমিকা রাখার অভিযোগ উঠলেও ফেসবুক ব্যবহারকারীর সংখ্যা দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে।
মন্তব্য করুন
আমার এলাকার সংবাদ