চলতি ২০২৪ সাল লিপ ইয়ার। লিপ ইয়ার বলতে; যে বছরে থাকে একটা অতিরিক্ত দিন। জ্যোতির্বিজ্ঞান কারণে ২৯শে ফেব্রুয়ারি ‘লিপ ডে’ হলেও, এ নিয়ে বৈজ্ঞানিক আগ্রহ বেশ কমই দেখা যায়। কিন্তু কিভাবে আসে এই লিপ ইয়ার, এর ইতিহাস কী, ফেব্রুয়ারিতেই কেন? এমন অনেক প্রশ্ন মাথায় ঘুরপাক খায়। এবার তবে জেনে নেওয়া যাক, কিভাবে আসলো এই ২৯ ফেব্রুয়ারি?
ফেব্রুয়ারি মাসে একটা বাড়তি দিন যুক্ত হওয়ার জন্য মূলত দায়ী জ্যোতির্বিজ্ঞান। একরকম বলা যায়, লিপ ইয়ারের অতিরিক্ত দিনটা এসেছে সৌরজগতের 'বিশৃঙ্খল' অবস্থার জন্যই। কারণ এক বছরে পৃথিবী সূর্যের চারপাশে একটা সম্পূর্ণ কক্ষপথ ঘুরে আসতে কিন্তু ঠিক পুরোপুরি ৩৬৫ দিন লাগে না। বরং সব মিলে সময়টা ৩৬৫.২৪২২ দিনের মতো। ফলে প্রতি বছর আসলে এক দিনের চার ভাগের প্রায় এক ভাগ সময় যোগ হয়। যা প্রতি চার বছরে একটা বাড়তি দিন যোগ করে।
আজ থেকে আরও ২ হাজার ৬৬ বছর আগে অর্থাৎ খ্রিস্টের জন্মের ৪৬ বছর আগে পৃথিবীতে বছর হিসাব করা হতো একটু ভিন্নভাবে। সাধারণভাবে ধরা হত, ৩৬৫ দিনে শেষ হবে একটা বছর। কিন্তু এরমধ্যে একটা গলদ ধরা পড়লো। খ্রিষ্টপূর্ব প্রথম শতাব্দীতে গ্রীক জ্যোতির্বিদ এবং গণিতবিদ সোসিজেনেস অব আলেকজান্দ্রিয়া ক্যালেন্ডারের হিসাবের সমস্যাটি তৎকালীন রোমান সম্রাট জুলিয়াস সিজারকে বুঝালেন।
বিষয় ভালোভাবে বুঝে নিলেন সিজার। এবং তিনি একটি ক্যালেন্ডার বানাতে বললেন এবং পরবর্তী বছর (৪৬ খ্রিস্টপূর্বাব্দ) থেকেই তা কার্যকরের নির্দেশ দিলেন। সম্রাট জুলিয়াস সিজারের নামেই সেই ক্যালেন্ডারের নামকরণ হলো- ‘জুলিয়ান ক্যালেন্ডার’।
ব্রিটানিকার তথ্যমতে, জুলিয়ান ক্যালেন্ডারে বছরের হিসাবটা আগের ক্যালেন্ডারের থেকে একটু অন্যভাবে করা হল। দেখা গেল, একটা পার্থিব বছর শেষ হতে প্রকৃতপক্ষে ৩৬৫ দিনের কিছু বেশি সময় লাগে। সঠিকভাবে হিসাব করলে এক বছরে গড়ে ৩৬৫.২৪২১৯ সৌর দিবস (‘মিন সোলার ডে’) হয়। প্রতি বছরে গড়ে .২৫ দিন বেশি হিসাব করলে চার বছরে মোট একটি দিন বেশি হয়ে যায়।
দেখা গেল, পার্থিব বছরের সময়ের ক্ষয়ক্ষতির প্রায় পুষিয়ে দেওয়া যায় চার বছর অন্তর ফেব্রুয়ারি মাসের সঙ্গে একটা দিন যোগ করে দিলে। এর সেই থেকেই জন্ম হল ২৯ ফেব্রুয়ারির। যার নাম ‘লিপ ডে’। আর এই দিনটি যে বছরে যুক্ত হয় সেই বছরটার নাম ‘লিপ ইয়ার’।
নয়াশতাব্দী/ডিএ
মন্তব্য করুন
আমার এলাকার সংবাদ