ব্রিটিশ ফটোগ্রাফার নিমা সারিখানি তার ক্যামেরায় বন্দি করেছেন ভেসে চলা হিমশৈলের ওপর ঘুমন্ত এক মেরু ভাল্লুকের অত্যাশ্চর্য সুন্দর দৃশ্য। আর তার সেই ছবি জিতে নিয়েছে ‘ওয়াইল্ডলাইফ ফটোগ্রাফার অব দ্য ইয়ার পিপলস চয়েস অ্যাওয়ার্ড’।
তবে নিমা সারিখানি কিন্তু পেশাদার আলোকচিত্রগ্রাহক নন। ন্যাচারাল হিস্ট্রি মিউজিয়ামের পরিচালক ড. ডগলাস গুর বলেন, ‘সারিখানির তোলা এ মর্মস্পর্শী এবং শ্বাসরুদ্ধ করা অপরূপ চিত্র একইসঙ্গে আমাদের এ গ্রহের সৌন্দর্য এবং ভঙ্গুরতাকে প্রকাশ করে। তার এ ছবি আমাদের চিন্তাকে গভীর ভাবে নাড়া দেয়। ভাবতে বাধ্য করে, উষ্ণায়ন আর বাসস্থানের ক্ষতি কীভাবে একটি প্রাণীর সঙ্গে তার প্রাকৃতিক আবাসস্থলের মধ্যে অবিচ্ছেদ্য বন্ধনের ওপর প্রভাব ফেলেছে।’
নরওয়ের স্যালবার্ড দ্বীপপুঞ্জে ঘন কুয়াশার মধ্যে মেরু ভল্লুকের তিন দিন ধরে খোঁজ চালানোর পর সারিখানি ছবিটি তুলেছেন।
বিশ্বজুড়ে বন্যপ্রাণী ফটোগ্রাফির অনুরাগী এবং প্রকৃতিপ্রেমীদের আমন্ত্রণ জানান হয়েছিল ২৫টি নির্বাচিত তালিকা থেকে তাদের পছন্দের চিত্রকে ভোট দেয়ার জন্য। এবার দেখে নেয়া যাক আরও চারটি অত্যাশ্চর্য সুন্দর কাহিনি—
‘দ্য হ্যাপি টার্টল’: সাহি ফিঙ্কেলস্টেইন তীরের পাখির ছবি তোলার জন্য আড়ালে লুকিয়ে ছিলেন। সে সময় লক্ষ্য করেন একটি বলকান পুকুরের কচ্ছপ অগভীর পানির ওপর দিয়ে হেঁটে যাচ্ছে। অপ্রত্যাশিতভাবে কচ্ছপের নাকের ওপর এসে পড়ে একটি ড্রাগনফ্লাই। সেই ছবি ধরা পড়েছে ক্যামেরায়।
‘স্টারলিং মার্মারেশন’: ড্যানিয়েল ডেনসেস্কু ঘণ্টার পর ঘণ্টা ধরে এক ঝাঁক স্টারলিংয়ের (এক বিশেষ প্রজাতির পাখি) পিছু করছিলেন। তাদের ধাওয়া করে ইতালির রোমের শহর আর শহরতলি ঘুরে বেড়ান তিনি। শেষ অব্দি, একটি বিশালাকৃতি পাখির আকার নেয় ওই এক ঝাঁক স্টারলিং, যা মুহূর্তে ক্যামেরাবন্দি করেন ওই চিত্রগ্রাহক।
‘শেয়ার্ড প্যারেন্টিং’: আফ্রিকার কেনিয়ার মাসাই মারায় একটি ঘন ঝোপের মধ্যে পাঁচ শাবককে রেখে রাতে শিকারে বেরিয়েছিল দুই সিংহী। সেখান থেকে খালি হাতে ফেরার পর শাবকদের তৃণভূমিতে ডেকে নিয়ে যত্ন করতে থাকে থাকে দুই মা।
‘অরোরা জেলিস’: ওউডুন রিকার্ডসেনের তার সরঞ্জামগুলোকে রাখতে নিজেই একটি পানিরোধী আস্তানা তৈরি করেছিলেন। ছবি তোলার জন্য ব্যবহার করেছিলেন সিঙ্গেল এক্সপোজারের সময় ফোকাস এবং অ্যাপারচার সামঞ্জস্য করার জন্য তিনি তার নিজস্ব সিস্টেম। উত্তর নরওয়ের ট্রমসোর বাইরে একটি খাঁড়িতে শরতের শীতল পানিতে ঝাঁক বেঁধেছিল মুন জেলিফিস। আর তাদের আলোকিত করে তুলেছিল অরোরা বোরিয়ালিস। সেই ছবি তুলে ধরেছেন ওউডুন রিকার্ডসেন। এই সেরা পাঁচটি ছবি অনলাইনে এবং লন্ডনের ন্যাচারাল হিস্ট্রি মিউজিয়ামে ৩০ জুন পর্যন্ত প্রদর্শিত হবে। বিবিসি।
মন্তব্য করুন
আমার এলাকার সংবাদ