ঢাকা, রবিবার, ১০ নভেম্বর ২০২৪, ২৫ কার্তিক ১৪৩১, ৭ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

কোনো ঘরে দরজা নেই তবু চুরি হচ্ছে না কিছুই 

প্রকাশনার সময়: ১৬ নভেম্বর ২০২৩, ২০:১২

কখনো ভেবে দেখেছেন, যেখানে বাস করছেন সেখানে যদি কোনো দরজা না থাকে তাহলে কী হবে? আপনি চুরি বা ডাকাতির কথা ভাবছেন নিশ্চয়। কিন্তু ভারতের মহারাষ্ট্রে একটি গ্রাম আছে, যেখানকার কোনো ঘরেই দরজা নেই আর সেখানে চুরিও হয় না কোনো কিছু।

গ্রামটির নাম শনি শিংনাপুর। যেখানে কোনো দরজা নেই। ফলে তালা ব্যবহারেরও ব্যবস্থা নেই। শুধু রং-বেরঙের দরজার ফ্রেম আছে ঘরে ঘরে।

ওই গ্রামের বিসান্দারা বিশ্বাস করেন, ভগবান শনির (শনি দেবতা) প্রতি তাদের অবিরাম বিশ্বাসের কারণে কেউ চুরি করবে না। শিরডি থেকে মাত্র ২ ঘণ্টার দূরত্বের এই গ্রামবাসীর বিশ্বাস এইরকম।

গ্রামবাসীর প্রচলিত ধারণা অনুসারে, প্রায় ৪০০ বছর আগে একটি কালো পাথর পানাসনালা নদীর তীরে অবতরণ করে। স্থানীয় এক ব্যক্তি ধারালো রড দিয়ে আঘাত করলে ওই পাথর থেকে রক্ত বের হতে থাকে।

পরে সেই রাতে গ্রামবাসীর স্বপ্নে হাজির হন ভগবান শনি। এরপর তাকে বলেছিলেন যে পাথরটি তারই মূর্তি। স্থানীয়রা তখন তাকে একটি মন্দির উৎসর্গ করতে চেয়েছিলেন কিন্তু ভগবান শনি সেই প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেন।

আরও প্রচলিত আছে, ভগবান শনি আশ্রয় ছাড়াই গ্রামের হৃদয়ে থাকতে চেয়েছিলেন। যাতে তিনি গ্রামটির যে কোনো ভুল বা ঘটনার দিকে নজর রাখতে পারেন। এছাড়া তিনি স্থানীয়দের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন, যে কোনো দুর্ঘটনা ও বিপদ থেকে গ্রামটিকে রক্ষা করবেন।

ওইদিন থেকে গ্রামের লোকেরা ঈশ্বরের প্রতি বিশ্বাসের জের ধরে সবার ঘরের দরজা ও তালা খুলে দিয়েছেন। এমনকি বাড়ি সেভাবে রেখেই বিভিন্ন স্থানে ঘুরতে যান। গ্রামবাসীর মধ্যে চুরির ভয় নেই। এমনকি কয়েক দিনের জন্যও তারা সেভাবেই ঘর ছেড়ে যান।

এই গ্রামের কেউ চুরি করতে সাহসও করেন না, কারণ তাদের বিশ্বাস কেউ চুরি করলে মানসিক অসুস্থতা বা সাত বছরের জন্য দুর্ভাগ্য বা অন্ধত্বের শাস্তি পাবে।

তবে গ্রামের কোনো ঘরে যাতে কুকুরসহ অন্যান্য প্রাণী ঢুকতে না পারে সেজন্য কাঠের প্যানেল স্থাপন করা হয়েছে। স্থানীয় আরও এক কাহিনি প্রচলিত আছে, এক ব্যক্তি নাকি তার ঘরের বাইরে একটি দরজা তৈরি করেছিলেন।

অতঃপর পরের দিন তার সঙ্গে বিরাট এক দুর্ঘটনা ঘটে। এই ঘটনার পর থেকে গ্রামের আর কেউই এ সাহস দেখাননি।

জানলে অবাক হবেন, এই গ্রামের পুলিশ স্টেশন ও পোস্ট অফিসেও দরজা নেই।

সেখানে আছে ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংকের একটি শাখা। আর সেটিও ‘লকলেস’। যদিও এটিতে একটি কাঁচের প্রবেশদ্বার ও একটি রিমোট-নিয়ন্ত্রিত ইলেক্ট্রোম্যাগনেটিক লক আছে। যা খুব কমই দৃশ্যমান।

সূত্র: টাইমস অব ইন্ডিয়া

নয়াশতাব্দী/একে

নয়া শতাব্দী ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

এ সম্পর্কিত আরো খবর
  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

আমার এলাকার সংবাদ