ঢাকা, শুক্রবার, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৫ আশ্বিন ১৪৩১, ১৬ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬

পাশ ফিরলেই ঘর শেষ

প্রকাশনার সময়: ১৮ অক্টোবর ২০২৩, ১৬:২১

বড় শহরগুলোতে প্রতি দিন হাজির হচ্ছেন হাজারো মানুষ। বাড়ছে জনসংখ্যা আর কমছে থাকার জায়গা। এক চিলতে আশ্রয় খুঁজতে গিয়ে হিমশিম অবস্থা। কারও রাত কাটছে পথে। কিন্তু পরিবর্তিত এ পরিস্থিতির সঙ্গে দিব্যি মানিয়ে নিচ্ছে জাপান। করে ফেলেছে বিশেষ ব্যবস্থা। সেই ‘ব্যবস্থা’ দেখে অবশ্য ভয় পাচ্ছেন অনেকেই।

জাপানে এখন জনসংখ্যা ১২ কোটি ৫৭ লাখেরও বেশি। সীমিত জমিতে এত লোককে ঠাঁই দিতে ক্রমেই ছোট হয়েছে আশ্রয়। এক কামরার ফ্ল্যাটে সংসার পেতেছে শহরবাসী। সেই এক কামরার ফ্ল্যাটও ক্রমে ছোট হয়েছে। জাপানের রাজধানী টোকিওতে আক্ষরিক অর্থেই এক চিলতে ফ্ল্যাটে সংসার পাতছে নগরবাসী। সম্প্রতি সেই ফ্ল্যাটের ভিডিও সমাজমাধ্যমে প্রকাশ করেছেন এক ব্যক্তি। থাকা তো দূর, যা দেখেই দমবন্ধ হওয়ার জোগাড়!

নর্ম নাকামুরা নিজের ইউটিউব চ্যানেল ‘টোকিও লেনস’— এ সেই ভিডিও পোস্ট করেছেন। ইউটিউবে তার অনুগামীর সংখ্যা প্রায় ন’লাখ। তিন কোণা সেই বাড়ি রয়েছে টোকিওতে। দুই রাস্তার সংযোগস্থলে। মেরেকেটে একটা গাড়ি পার্ক করা যায়, এতটুকু জমিতে তৈরি করা হয়েছে আস্ত সেই বাড়ি। এক ঝলক দেখলে মনে হতে পারে একটা প্রাচীর খাড়া রয়েছে। ভিতরে হয়তো একটা লোকও থাকতে পারবেন না। কিন্তু ওই বাড়িতেই বাস কয়েকটি পরিবারের। কোনো মতে অনুমতি নিয়ে সেই আবাসনে ঢুকেছিলেন নর্ম। তার পর ক্যামেরাবন্দি করেছিলেন ভিতরের ছবি। নর্ম ভিতরে ঢুকে দেখেন এক চিলতে সেই ফ্ল্যাটে রয়েছে বেশ কয়েকটি তলা। একাধিক ফ্ল্যাট রয়েছে। আবাসনের ভিতরে ঢুকে নর্মকে বলতে শোনা যায়, ‘জাপানে ছোট আবাসন ভূরি ভূরি। কিন্তু এত ছোট দেখিনি কখনো।’

ভিডিওতে দেখা গেছে, আবাসনের প্রবেশমুখে দাঁড়িয়ে জুতো খোলার জায়গা পর্যন্ত নেই। এর পর আবাসনের শৌচালয়ের ভিডিও পোস্ট করেছেন নর্ম। সেখানে দেখা গেছে, একটি মানুষ কোনো মতে দাঁড়িয়ে গোসল করতে পারেন। তার বেশি এক চিলতে জায়গাও নেই। শৌচালয়ের এক কোণে আবার একটি বাথটবও রয়েছে। তবে সেখানে শুয়ে গোসল সম্ভব নয়। বসে গোসল করতে হবে। ফ্ল্যাটের ঘরের দৈর্ঘ্য ৮.২ ফুট। চওড়া তার থেকেও কম। ফ্ল্যাটের মধ্যে ঘরগুলোকে আলাদা করা হয়েছে ইটের দেয়াল দিয়ে। যদিও নর্ম টোকা দিয়ে দেখেন, সেগুলো আসল ইটের তৈরি নয়। বরং স্পঞ্জের ইটের। তার ওপর ওয়ালপেপার লাগানো হয়েছে।

নর্মের দাবি— এই আবাসনে থাকার সব থেকে বড় অসুবিধা হল শব্দ। দুই রাস্তার সংযোগস্থলে অবস্থিত। সে কারণে দিন-রাত গাড়ির শব্দে কান ঝালাপালা হয়ে যায় বাসিন্দাদের। সমাজমাধ্যম ব্যবহারকারীরা অবশ্য জানান, টোকিওতে সর্বত্রই এ সমস্যা। শব্দের জন্য কোনো আবাসনে রাতে শান্তিতে ঘুমানো যায় না। নর্ম জানান, টোকিও শহরে যত ছোট ফ্ল্যাটই হোক না কেন, ভাড়া প্রচুর। তবে এ ফ্ল্যাটের ভাড়া ততটাও বেশি নয়। মাসে এ ফ্ল্যাটের ভাড়া ৪০ হাজার জাপানিজ ইয়েন। বাংলাদেশি মুদ্রায় যা ২৫ হাজার টাকার এদিক-সেদিক।

নর্ম যে ফ্ল্যাটটির ভিডিও তুলেছেন, সেটিতে আপাতত কেউ থাকেন না। তবে ওই আবাসনের বাকি সব ফ্ল্যাটেই লোক থাকেন। এরই মধ্যে ভিডিওটি দেখেছেন ৩৪ লাখ মানুষ। ভিডিও দেখে কয়েকজন ব্যবহারকারী বলেছেন, এত ছোট ফ্ল্যাটে থাকলে মানসিক অবসাদ আসতে বাধ্য। অনেকেই আবার জানিয়েছেন, একা যদি বা থাকা যায়, সপরিবারে এখানে থাকা অসম্ভব। আনন্দবাজার।

নয়া শতাব্দী/আরআর

নয়া শতাব্দী ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

এ সম্পর্কিত আরো খবর
  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

আমার এলাকার সংবাদ