বর্ষা মৌসুমে পাহাড়ি ঝর্ণাগুলো যেমন প্রাণ ফিরে পায় তেমনি অতিরিক্ত বৃষ্টিপাতে হয়ে ওঠে হিংস্র হয়ে ওঠে। হুট করে ঢলে ঝিরিপথগুলোতে পানির প্রবাহ বেড়ে যায়। আর স্রোত এত বেড়ে যায় যে স্রোতের তোড়ে টিকে থাকা প্রায় অসম্ভব হয়ে যায়।
আর এছাড়াও বর্ষা মৌসুমে পাহাড় পিচ্ছিল থাকে তাই যেকোনো দুর্ঘটনার ঝুঁকি থাকে। এছাড়া জোঁক ও মশার উপদ্রবও বেড়ে যায় প্রচুর। এ সময় ট্রেকে গেলে নিতে হয় বাড়তি সচেতনতা। চলুন জেনে নিই এই বর্ষায় ট্রেকে যেতে কী কী সচেতনতা নিতে হবে-
আবহাওয়ার খোঁজ নিন
পাহাড়ে ঘুরতে যাওয়ার পরিকল্পনা করার আগে আবহাওয়া কেমন থাকবে সে বিষয়ে খোঁজ নিন। ভারী বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা থাকলে কখনোই পাহাড়ে যাওয়ার পরিকল্পনা করবেন না। কারণ এই সময় পাহাড়ের রূপ বদলে যায় হঠাৎ করেই। ঝিরিতে পানি বেড়ে যায়, সৃষ্টি হয় ফ্ল্যাশ ফ্লাডের। পাহাড়ের এই রূপ যদিও সুন্দর, তবে কাছ থেকে দেখতে যাওয়া ভীষণ ঝুঁকিপূর্ণ। জীবনের ঝুঁকি নিয়ে প্রকৃতি উপভোগ করতে যাবেন না।বিপজ্জনক ট্রেইল এড়িয়ে চলুন
অভিজ্ঞতা না থাকলে ঝোঁকের বসে বিপজ্জনক ট্রেইলে ট্রেকিং করবেন না। তাতে বিপদ হওয়ার আশঙ্কা বেশি।বাড়তি সতর্কতা মেনে চলুন
ভারী বৃষ্টিপাত না হলেও বর্ষার সময় বেশ পিচ্ছিল হয়ে থাকে পাহাড়ি পথ। কারণ থেমে থেমে প্রায়ই বৃষ্টি হয়। তাই পাহাড় কিংবা পাহাড়ি ঝরনা দেখতে চাইলে অসাবধান হওয়া যাবে না। যেসব অঞ্চল বা পাড়ায় যাওয়া নিষিদ্ধ, সেখানে যাওয়ার পরিকল্পনা করবেন না। ঝরনার উপরে ওঠারও প্রয়োজন নেই বা খুব বেশি কাছে যাওয়ারও দরকার নেই। ভ্রমণে আপনার এবং আপনার সঙ্গীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সেনাবাহিনীকে সঠিক তথ্য দিন।ট্রেকিং-এর জুতা পাহাড়ি পথে স্লিপার বা স্যান্ডেল না পরাই নিরাপদ। পরতে হবে স্নিকার, রানার বা পাহাড়ে ওঠার বিশেষ জুতা। তাতে পিচ্ছিল পাহাড়ি পথে বিপদে পড়ার আশঙ্কা কমে যাবে।
অবশ্যই লোকাল গাইড নেবেন পাহাড় ভ্রমণে যেতে চাইলে লোকাল গাইড নেবেন। ভ্রমণের খরচ কমানোর জন্য গাইড ছাড়া নিজেরাই পাহাড়ি দুর্গম অঞ্চলে প্রবেশের পরিকল্পনা করবেন না।
মশা ও জোঁক থেকে বাঁচতে প্রস্তুতি রাখুন বর্ষার সময় মশার উৎপাত বেড়ে যায় প্রচণ্ড রকম। এছাড়া পাহাড়ি অঞ্চলে প্রচুর মশা থাকে। মশা তাড়াতে অডোমস লোশন বা স্প্রে রাখতে পারেন সঙ্গে। বিভিন্ন ধরনের রোলঅন বা সুগন্ধিও পাওয়া যায় মশা তাড়ানোর জন্য। রাখতে পারেন এগুলোও। বর্ষায় পাহাড় ও জঙ্গলে গেলে জোঁক তাড়ানোর জন্য লবণ সঙ্গে রাখবেন।
সাথে রাখুন প্রয়োজনীয় ওষুধ পানিবাহিত রোগের পাশাপাশি এই সময় ঠান্ডা, জ্বর, সর্দি, কাশির মতো রোগ দেখা দেয়। আবার হঠাৎ পরড়ে গিয়ে ব্যথা পাওয়ার মতো সমস্যাও দেখা দিতে পারে। তাই জ্বর, ব্যথা কিংবা প্রয়োজনীয় ওষুধ সঙ্গে রাখবেন। কারণ দুর্গম পাহাড়ে হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়লে প্রয়োজনীয় চিকিৎসাসেবা পাওয়াটা সহজ নয়।
পাহাড়িদের সাথে সৌজন্যমূলক আচরণ করুন পাহাড়ে বসবাসরত কোনো জনগোষ্ঠীর সঙ্গে অসৌজন্যমূলক ব্যবহার করবেন না। তাদের সাথে যথেষ্ট বন্ধুত্বপূর্ণ আচরণ করুন। পাহাড়ে আপনার বিপদে তারাই প্রথমে এগিয়ে আসবে মনে রাখতে হবে।
নয়া শতাব্দী/এসএম/এফআই
মন্তব্য করুন
আমার এলাকার সংবাদ