ডিজিটাল বাংলাদেশের সুফল হিসেবে ইউটিউবের ভিডিও দেখে কাজ শিখে আজ সফল নারী উদ্যোক্তার তালিকায় নিজের স্থান করে নিয়েছেন বরিশাল নগরীর বাসিন্দা জিতু আক্তার নাভিলা। এজন্য তিনি (নাভিলা) প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং তার তথ্য ও প্রযুক্তি বিষয়ক উপদেষ্টা সজিব ওয়াজেদ জয় এর প্রতি গভীর কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে বলেন, ‘বাংলাদেশ আজ ডিজিটাল হয়েছে বলেই ঘরে বসে ইন্টারনেটের মাধ্যমে ইউটিউবের ভিডিও দেখে কাজ শিখতে পেরেছি।’
করোনা দুর্যোগের সময়ে ঘরে বসে অলস সময় না কাটিয়ে নিজ আগ্রহে ডিজিটাল বাংলাদেশের সুফল হিসেবে ইউটিউবের ভিডিও দেখে কাজ শিখে বেশ স্বল্পসময়ে নারী উদ্যোক্তা জিতু আক্তার নাভিলা সফল হয়েছেন।
বর্তমানে তিনি হোমমেড ফুড প্রতিষ্ঠান ছাহিল কেক হাউজের স্বত্বাধিকারী। ইন্টারনেটের বদৌলতে ফেসবুক গ্রুপের মাধ্যমেই তার ফুড প্রতিষ্ঠানের অর্ডার ও ডেলিভারী দেওয়া হয়।
জন্মদিন, প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী, বিবাহ বার্ষিকীসহ যেকোন অনুষ্ঠানে নাভিলার তৈরি সু-স্বাদু কেক না থাকলে যেন পুরো অনুষ্ঠান অসমাপ্ত থেকে যাচ্ছে। তাই দিনে দিনে নগরী ছাঁপিয়ে এখন নাভিলার তৈরি সু-স্বাদু কেক জেলার বিভিন্ন উপজেলায় সরবরাহ করা হচ্ছে।
বরিশাল নগরীতেই জিতু আক্তার নাভিলার জন্ম, পড়াশুনা ও বিয়ে। নগরীর মমতাজ মাধ্যমিক বিদ্যালয় থেকে এসএসসি, বরিশাল সরকারী মহিলা কলেজ থেকে এইচএসসি ও বিএ অধ্যায়নরত নাভিলার মেধা ও শ্রমের বিনিময়ে আজ তিনি সফল হোমমেড ফুড আইটেমের আইকন।
তার তৈরি ফুড আইটেমের তালিকায় রয়েছে- জন্মদিন, প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী, বিবাহ বার্ষিকীসহ যেকোন অনুষ্ঠানের ভ্যানিলা, চকলেট, ওভার লোটেড, মোকা, লেমন, অরেঞ্জ, সেমি ফন্ডেন্ট, ভ্যানিলা পেষ্টি, চকলেট, জার কেক ইত্যাদি।
এছাড়াও রয়েছে ইতালির নেপলস শহরে উদ্ভাবনের পর কালক্রমে সারাবিশ্বে ছড়িয়ে পরা বিশ্বের অন্যতম জনপ্রিয় খাবার পিৎজা। বিভিন্ন ধরনের বার্গার ও রামেন নুডুলস।
সফল নারী উদ্যোক্তা জিতু আক্তার নাভিলা বলেন, ‘শৈশব থেকেই ইচ্ছে ছিলো একজন ফ্যাশন ডিজাইনার হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করবো। কিন্তু পরিবারের সর্মথন না পাওয়ায় সেই ইচ্ছে আর পূরণ হয়নি। তবে হাল না ছেড়ে নিজেকে কিছু একটা করতে হবে সবসময় মনের মধ্যে এমন ইচ্ছেই ধরে রেখেছি।’
তিনি আরও বলেন, ‘রান্নাবান্নার শখ ছিলো ছোটবেলা থেকেই, তবে তা ক্যারিয়ার হিসেবে নিতে হবে তা কখনও চিন্তা করিনি।
নাভিলা বলেন, ‘করোনা দুর্যোগের সময় কলেজ বন্ধ থাকার সুযোগকে কাজে লাগিয়ে টানা কয়েকদিন ইউটিউবের ভিডিও দেখে বিভিন্ন ধরনের কেক তৈরির কাজ রপ্ত করি। পরবর্তীতে স্বামীর মাধ্যমে উপকরণ ক্রয় করে এনে ঘরে বসেই প্রাথমিকভাবে কেক তৈরি করা শুরু করি।’
তিনি আরও বলেন, প্রথম প্রথম কেকসহ অন্যান্য ফুড সামগ্রী তৈরির পর নিকট আত্মীয়-স্বজন ও প্রতিবেশীদের বাসায় বাসায় দিয়ে আসতাম মান যাচাইয়ের জন্য। মাত্র এক সপ্তাহের মধ্যেই মানের বিচারে স্বজনদের শতভাগ রায় পেয়ে উৎসাহ আরও বেড়ে যায়।
এরপর স্বামীর সহযোগিতায় ব্যবসায়ীকভাবে কাজ শুরু করে করোনার গত ১৭ মাসেই সফল হয়েছি। জিতু আক্তার নাভিলার সফল নারী উদ্যোক্তা হওয়ার পেঁছনে সবচেয়ে বেশি সহযোগিতা করেছেন তার স্বামী তানভির আহম্মেদ অভি। উৎসাহ জুড়িয়েছেন তার মা-বাবা। পরিবারের সদস্যরা সবসময় পাশে থাকার কারণেই আজ তিনি (জিতু আক্তার নাভিলা) একজন সফল নারী উদ্যোক্তা হতে পেরেছেন বলে জানান তিনি।
নয়া শতাব্দী/জেআই
মন্তব্য করুন
আমার এলাকার সংবাদ