বর্তমানে রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন শহরে বাড়ির ছাদে বাগান করা বেশ জনপ্রিয়তা পেয়েছে। অধিকাংশ বাড়ির ছাদের দিকে তাকালেই বিভিন্ন ধরনের বাগান দেখা যায়। আর গ্রীষ্মের এই তাপদাহে গৃহকে ঠান্ডা রাখতেও ছাদ বাগানের জুড়ি মেলা ভার। সংকটজনক হারে দেশে গাছের সংখ্যা কমে যাচ্ছে। পাকা বাড়ি আর রাস্তার ভিড়ে গাছ লাগানোর স্থান পাওয়া প্রায় দুস্কর। আর মাটিতে বনায়ন করাও তাই অসম্ভব হয়ে গেছে। বৈশ্বিক উষ্ণায়ন থেকে বাঁচতে ছাদ কৃষি বেশ কার্যকরী ভূমিকা পালন করছে। পরিবেশবিদরা তাই ছাদ কৃষিতে উৎসাহিত করছেন সবাইকে।
ছাদ বাগান করতে প্রথমে ছাদের সেটিং করে নিতে হয়; কাঠ বা লোহার ফ্রেমে এঁটে বেড তৈরি করে এবং টব, ড্রাম, পট কনটেইনার এসব ব্যবহার করে। প্রথম ক্ষেত্রে পুরো ছাদ বা ছাদের অংশবিশেষ ব্যবহারের ক্ষেত্রে কার্নিশের পাশে বা আলাদা ফ্রেম করে সুন্দরভাবে ডিজাইন করে সেটিং করা যায়।
ছাদে বাগান করার সময় লক্ষ রাখতে হবে, যেন গাছটি বড় আকারের না হয়। অর্থাৎ ছোট আকারের গাছ লাগাতে হবে এবং ছোট আকারের গাছে যেন বেশি ফল ধরে সেজন্য হাইব্রিড জাতের ফলদ গাছ লাগানো যেতে পারে।
আম্রপালি জাতের আম, পেয়ারা, আপেল কুল, জলপাই, করমচা, শরিফা, আতা, আমড়া, লেবু, ডালিম, পেঁপে, এমনকি কলা গাছও লাগানো যায়।
ছাদ বাগানের প্রথম শর্ত হচ্ছে, গাছ বাছাই। জেনে, বুঝে, বিশ্বস্ত নার্সারি, বন্ধুবান্ধবের কাছ থেকে গাছ সংগ্রহ করতে হবে। বেঁটে প্রজাতির অতিদ্রুত বর্ধনশীল ও ফল প্রদানকারী গাছই ছাদ বাগানের জন্য উত্তম।
বীজের চারা নয়, কলমের চারা লাগালে অতিদ্রুত ফল পাওয়া যায়। আজকাল বিভিন্ন ফলের গুটি কলম, চোখ কলম ও জোড় কলম পাওয়া যাচ্ছে। ছাদ বাগানের জন্য এসব কলমের চারা সংগ্রহ করতে পারলে ভালো হয়।
টবে আমের মধ্যে আম্রপালি, আলফানসো, বেঁটে প্রজাতির বারোমাসী, লতা, ফিলিপাইনের সুপার সুইট, রাঙ্গু আই চাষ করা যেতে পারে।
লেবুর মধ্যে কাগজিলেবু, কমলা, মালটা, নারকেলি লেবু, কামকোয়াট, ইরানিলেবু, বাতাবিলেবু (অ্যাসেম্বল) টবে খুবই ভালো হয়।
কলমের জলপাই, থাইল্যান্ডের মিষ্টি জলপাই, কলমের শরিফা, কলমের কদবেল, ডালিম, স্ট্রবেরি, বাউকুল, আপেলকুল, নারিকেলকুল, লিচু, থাইল্যান্ডের লাল জামরুল, গ্রিন ড্রপ জামরুল, আপেল জামরুল, আঙ্গুর পেয়ারা, থাই পেয়ারা, ফলসা, খুদে জাম, আঁশফল, জোড় কলমের কামরাঙা, এমনকি ক্যারালা ড্রফ প্রজাতির নারিকেলের চাষ করা যেতে পারে।
বাহারি পাতার জামরুল, পেয়ারা, সফেদা গাছও বিভিন্ন নার্সারিতে এখন কিনতে পাওয়া যাচ্ছে। ছাদে এসব গাছ লাগানো হলে ছাদ বাগানের সৌন্দর্য বৃদ্ধি পায়।
সঠিক মানের চারা হলে এক বছরের মধ্যেই ফল আসে। আজকাল বিদেশ থেকে উন্নত মানের কিছু চারা কলম দেশে আসছে। ছাদ বাগানের সাধ পূরণ করার জন্য এসব সংগ্রহ করে লাগাতে পারেন।
মৌসুমে যেসব ফুল পাওয়া যায় সেসব লাগাতে পারেন। এতে বাগান রঙীন হয়ে শোভা ছড়াবে।
এছাড়াও কাঠগোলাপ, বাগানবিলাস, জবা, গন্ধরাজ, কামিনীর মতো গাছ লাগাতে পারেন।
সবজির মধ্যে বেগুন, ক্যাপসিকাম, পুদিনা, লেমনগ্রাস, টমেটো, শসা, লেটুস, মরিচ গাছের চারা লাগাতে পারেন।
নয়া শতাব্দী/এসএম/আরআর
মন্তব্য করুন
আমার এলাকার সংবাদ