ঢাকা, রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

পৃথিবীর বুকে এক টুকরো স্বর্গ

প্রকাশনার সময়: ৩১ ডিসেম্বর ২০২২, ১১:৫৫

পৃথিবীর বুকে এক টুকরো স্বর্গ বলা হয়, যে দেশটিকে তার নাম সুইজারল্যান্ড। দেশটি প্রকৃতি রহস্যের বিশাল এক ভাণ্ডার। কখনও রূপে আবার কখনও খেয়ালি আচরণে মুগ্ধতা ছড়ায়। শ্বেতশুভ্র বরফের রাজ্য বরাবরই প্রকৃতিপ্রেমীদের আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দু। সুইজারল্যান্ডের আল্পস পর্বত অন্যতম। সেখানে, প্রাকৃতিকভাবে গঠিত বরফের গুহা পর্যটকদের বিমোহিত করে। তবে শুধু বেড়ানোর জন্যই নয়, সব দিক দিয়েই ইউরোপের ছোট্ট এই দেশটি শ্রেষ্ঠত্বের মর্যাদা পেয়েছে। আয়তনে ছোট হলেও দেশটি অপরূপ প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে অন্যতম ও স্বয়ং-সম্পূর্ণ। সুইজারল্যান্ডের আয়তনের ৭০ শতাংশ ঘিরে রয়েছে আল্পস পর্বতমালা। সুইজারল্যান্ডের সবচেয়ে উঁচু পর্বতের নাম মন্টি রোজা।

পর্যটকরা সুইজারল্যান্ডের প্রকৃতি আর প্রাকৃতিক ভূ-দৃশ্যের জন্য আকৃষ্ট হয়। এ ছাড়া স্কিইং আর পর্বত ভ্রমণের জন্য এখানে অনেক পর্যটক আসেন। বিশ্বের অন্যতম অর্থসংস্থান হওয়ায় এখানে বহু ভ্রমণকারী ব্যবসার জন্যও আসে। সুইজারল্যান্ডে বার্নের পুরাতন শহর, সাধু গলের মঠ এবং মন্টি স্যান জিওরজিওসহ ১১টি ইউনেস্কো ঐতিহ্যবাহী স্থান রয়েছে। তবে সবচেয়ে সুন্দর দেশের তালিকায় সুইজারল্যান্ড ১০ নম্বরে আছে।

আল্পস পর্বতমালা ও প্রশস্ত হ্রদ সুইজারল্যান্ডকে অনন্য প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের রূপে ভূষিত করেছে। বিশ্বের পর্যটকদের জন্য এটি বিশেষ আকর্ষণীয় একটি দেশ। সুইজারল্যান্ডের ঘড়ি, ট্রেন এবং চকলেট-খ্যাতি বিশ্বজোড়া। অবশ্য সুইস ব্যাংকসমূহ কালো টাকা নিরাপদে সংরক্ষণের জন্য কুখ্যাত। দেশটির কোনো নিয়মিত সেনাবাহিনী নেই। দেশটির রাজনৈতিক অবস্থা অত্যন্ত সুস্থির। সুইস সরকারের অন্যতম বৈশিষ্ট্য হলো প্রতি বছর ১ জানুয়ারি তারিখে এর রাষ্ট্রপতি পরিবর্তিত হয়। ছয় বছরের জন্য গঠিত মন্ত্রিপরিষদের একেক জন মন্ত্রী পালাক্রমে এক বছরের জন্য রাষ্ট্রপতির দায়িত্ব পালন করেন।

সুইডেনের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য : সুইজারল্যান্ডে মোট ২৬টি ক্যান্টন রয়েছে। ঐতিহাসিক কনফেডারেশনের সময় এর প্রতিটি স্বাধীন রাষ্ট্র ছিল, যাদের পৃথক সীমানা ও রাষ্ট্র-ব্যবস্থাও ছিল। বর্তমানে এর সব সুইজারল্যান্ড যুক্তরাষ্ট্রের অন্তর্ভুক্ত।

সুইজারল্যান্ডের রাজধানী বের্ন। এটি মূলত সরকারি এবং প্রশাসনিক শহর। শহরটি আরে নদীর বাঁক দ্বারা তিন দিকে বেষ্টিত একটি উঁচু শৈলান্তরীপের ওপর অবস্থিত। সুইজারল্যান্ডের প্রশাসনিক রাজধানী ‘বার্ন’ হলেও সবচেয়ে পরিচিত শহরগুলো হলো জুরিক এবং জেনেভা।

সুইজারল্যান্ডের আয়তন ৪১ হাজার ২৮৫ বর্গকিলোমিটার। সুইজারল্যান্ডকে জুরা, সুইজারল্যান্ডীয় মালভূমি এবং আল্পস পর্বতমালা এই তিনটি প্রধান ভৌগোলিক অঞ্চলে ভাগ করা যায়।

আল্পস পর্বতমালা : প্রকৃতি রহস্যের বিশাল এক ভাণ্ডার। কখনও রূপে আবার কখনও খেয়ালি আচরণে মুগ্ধতা ছড়ায়। শ্বেতশুভ্র বরফের রাজ্য বরাবরই প্রকৃতিপ্রেমীদের আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দু। সুইজারল্যান্ডের আল্পস পর্বত অন্যতম। সেখানে, প্রাকৃতিকভাবে গঠিত বরফের গুহা পর্যটকদের বিমোহিত করে।

আল্পস পর্বতের পুরোটাই যেন সাদা চাদরে মোড়ানো। হিমশীতল এই বরফের রাজ্যে এবার পর্যটকরা প্রকৃতির নতুন এক বৈচিত্র্যের দেখা পান। ইউরোপের সর্বোচ্চ এবং সবচেয়ে বিস্তৃত এই পর্বতে দেখা মিলেছে শ্বেতশুভ্র এক গুহার। বরফ জমে প্রকৃতিগতভাবেই তৈরি হয়েছে এটি। আরও আশ্চর্যের বিষয় এর মাঝে রয়েছে পিলার বা স্তম্ভ। যেন কোনো প্রকৌশলীর নিখুঁত নকশা।

বরফের এ গুহাটির উচ্চতা ৫ মিটার এবং গভীরতা ২০ মিটার। প্রতি বছরই এর দেখা মিলে। আর এটি দেখতে ভিড় জমান পর্যটকরা।

গুহাটিতে ঠাণ্ডা ও নির্মল বাতাসের অদ্ভুত অনুভূতি। এই বরফগুলো, এখানকার হিমবাহ সত্যিই অসাধারণ। এই বরফের গুহায় প্রবেশ করলে নিজেকে খুবই তুচ্ছ সৃষ্টি মনে হয়, এ অনুভূতি অসাধারণ।

অন্যান্য গুহার মতো যুগ যুগ ধরে এটি টিকে থাকবে না, হারিয়ে যাবে শীত শেষ হলেই। পরের শীতেই এটি নতুন কোনো আকৃতি নিয়ে আবার হাজির হবে। এর মধ্যে বসন্ত ও গ্রীষ্মে বরফ গলে গেলে গুহাটি পরিণত হবে হ্রদে। আর শরৎকালে পানি শুকিয়ে অদৃশ্য হয়ে যাবে হ্রদ কিংবা গুহার অস্তিত্ব।

নয়া শতাব্দী/আরআর

নয়া শতাব্দী ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

এ সম্পর্কিত আরো খবর
  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

আমার এলাকার সংবাদ