বেঁচে থাকার তাগিদে মানুষকে কত রকমের কাজই না করতে হয়। এ কাজের মধ্যেও রয়েছে উঁচু-নিচু ভেদাভেদ। আবার অনেক কাজের মধ্যে জীবনের ঝুঁকি রয়েছে, তবুও বেঁচে থাকার তাগিদে মানুষ সেই কাজ করতে বাধ্য হচ্ছে। আধুনিক যুগে মানুষ অর্থপূর্ণ এবং তৃপ্তিকর চাকরি খোঁজেন। অনেকে তার খোঁজও পেয়ে যান। মানব সভ্যতার ইতিহাসে এমন সব চাকরির কথা উল্লেখ রয়েছে, যা শুনলে আঁৎকে উঠতে হয়। এবার জেনে নেয়া যাক এমন কিছু উদ্ভট চাকরির ইতিহাস-
প্রেইগাস্টেটর (স্বাদ গ্রহণকারী)
প্রেইগাস্টেটার অর্থ হচ্ছে যে খাবারের স্বাদ পরীক্ষা করেন। আগেকার দিনে রাজা-বাদশা দেশি-বিদেশি খাবার কিংবা পানীয় খেয়ে দেখার আগে একজনকে দিয়ে সেই খাবার ও পানীয়ের স্বাদ পরীক্ষা করে নিতো। এই কাজের জন্য তাদের প্রচুর অর্থ প্রদান করত। আপাতদৃষ্টিতে খুবই মজার চাকরি মনে হলেও তা কিন্তু নয়। কিছু কিছু খাবার ও পানীয়ের স্বাদ ছিল খুবই উৎকট ও বিশ্রি। তাকে সেই খাবার খেতেও হতো যাতে রাজা বা সম্রাট নিশ্চিত হতে পারেন এ খাবারটি নিরাপদ কিনা। অনেক সময়ে রাজা বা সম্রাটদের শত্রুরা স্লো পয়জন মিশিয়ে দিত খাবারে ফলে সহজেই খাবার টেস্ট করা ব্যক্তি বিষে আক্রান্ত হয়েছে বলে মনে হতো না।
কুৎসা রটানো
শুনতে অদ্ভুত মনে হলেও এটা সত্যি যে কুৎসা রটানোও আগেকার দিনের একটি পেশা ছিল। বর্তমানে আধুনিক যুগে এসেও কিন্তু এমন দেখা যায়। বিশেষ করে সংবাদপত্রগুলো টাকার বিনিময়ে কুৎসা রটায়। কেবল বর্তমানেই নয় প্রাচীন যুগেও গুজব ও কুৎসা রটানোর চল ছিল। এমনকি কুৎসা রটানোর বিনিময়ে তারা অর্থ ও পেতেন! সে সময়ে তারা টাকার বিনিময়ে প্রতিবেশীর সম্পর্কে আজেবাজে কথা রটাতো। তারা সব মানুষের সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য ও দিত অর্থ প্রদানকারীকে। একপ্রকার ছোটখাটো গুপ্তচরও বলা যেতে পারে তাদের।
সতীত্বের প্রতিশ্রুতি
রোমানরা ছিল অত্যধিক কুসংস্কারাচ্ছন্ন। তারা বিশ্বাস করত, তাদের এমন পরাজয়ের কারণ সতী নারী না থাকা। ভেস্তা দেবীর মন্দিরের নারী পুরোহিতদের একমাত্র কাজ ছিল মন্দিরের প্রদীপে আগুন জ্বালানো, আর এরাই ছিল রোমের একমাত্র নারী পুরোহিত। যদি কখনও ভেস্তার মন্দিরের প্রদীপের আগুন বন্ধ হয়ে যায়, রোমানরা ধরে নিতো নতুন কোনো সমস্যা কিংবা বিশৃঙ্খলা শহরে প্রবেশ করছে। হ্যানিবলের আক্রমণ এবং রোমানদের ভয়ানক পরাজয়ের পর এই বিশ্বাস আরও দৃঢ় হয়ে উঠেছিল এবং এর জন্য সেসময় কঠোর শাস্তি ঘোষণা করা হয়। এই নারী পুরোহিত বা ভেস্টালদের চিরকুমারী থাকার কথা ছিল। এসব নারীকে ৬ থেকে ১০ বছর বয়স থাকাকালীন অনেক শিশুদের মধ্যে বেছে নেয়া হতো এবং দীর্ঘ ৩০ বছর কুমারী থাকার প্রতিশ্রুতি নেয়া হতো। যদি কোনো ভেস্টাল (নারী পুরোহিত) তার ‘সতীত্বের ব্রত’ অক্ষত রাখতে অক্ষম হয় তবে তাকে কঠিন ও বেদনাদায়ক মৃত্যু দেয়া হতো।
ঘোড়ার ডেন্টিস্ট ঘোড়ার দাঁতের ডাক্তার রয়েছে। ইকুইন ডেন্টিস্ট বলা হয় এদের। দাঁত দেখে ঘোড়ার বয়স নির্ণয় করা থেকে শুরু করে দাঁতের কোনো রকমের রোগ সারিয়ে তোলা পর্যন্ত এদের কাজ।
প্রফেশনাল পুশার
আপনি কোথাও দাঁড়িয়ে আছেন আর কয়েকজন এসে আপনাকে ধাক্কা দিচ্ছে। এই ধাক্কা দেয়ার কাজটি কারও কারও পেশা। জাপান ও নিইউয়র্ক সিটিতে রেলস্টেশনে ভিড়ের সময় প্রফেশনাল পুশাররা ধাক্কা দিয়ে ট্রেনের ভিতর লোক ঢোকাতে সাহায্য করে।
মাছ গণক
একটা বড় অ্যাকুরিয়ামে কয়টা মাছ আছে? এটা বসে বসে গণনা করার সময় আপনাদের কারও কি আছে? এ কাজটি করার দায়িত্ব তাই পড়ে পেশাদার মাছ গণকের ওপরে।
নয়া শতাব্দী/আরআর
মন্তব্য করুন
আমার এলাকার সংবাদ