মিসরে বাংলাদেশ দূতাবাস হল রুমে স্বাস্থ্যবিধি মেনে ও সীমিত আকারে যথাযোগ্য মর্যাদায় বাংলাদেশের জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সহধর্মিণী বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন নেছা মুজিব এবং জ্যেষ্ঠ পুত্র শহিদ ক্যাপ্টেন শেখ কামালের যথাক্রমে ৯১তম এবং ৭২তম জন্মবার্ষিকী উদযাপন করা হয়েছে।
রাজধানী কায়রো ছাড়াও বিভিন্ন স্থান থেকে আসা প্রবাসী কর্মীদের অংশগ্রহণের সুবিধার্থে ৭ই আগস্ট শনিবার অপরাহ্নে অনুষ্ঠানটির আয়োজন করা হয়।
মুহাম্মদ ফেরদাউস এর উপস্থাপননায় পবিত্র কোরআন তিলওয়াতের পর শহিদ ক্যাপ্টেন শেখ কামাল এবং বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন নেছা মুজিবসহ জাতির পিতা, তাঁর পরিবারের অন্যান্য শহিদ সদস্য এবং মুক্তিযুদ্ধে বীর শহিদদের আত্মার শান্তি কামনা করে এবং দেশের অব্যাহত শান্তি ও সমৃদ্ধি প্রার্থনা করে বিশেষ মোনাজাতের মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠান শুরু করা হয়।
ঢাকা থেকে পাঠানো মহামান্য রাষ্ট্রপতি এডভোকেট আব্দুল হামিদ, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা এবং মহিলা ও শিশু বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী ফজিলাতুন্নেছা ইন্দিরার বানী পাঠ করে শোনান যথাক্রমে, দূতাবাসের দুতালয় প্রধান মোহম্মদ ইসমাঈল হোসাইন, তৃতীয় সচিব মোহাম্মদ আতাউল হক ও রফিকুল ইসলাম প্রমুখ।
অনুষ্ঠানে শহিদ ক্যাপ্টেন শেখ কামাল এবং বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন নেছা মুজিব-এর জীবন ও কর্মের উপর নির্মিত দুটি প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শন করার পর প্রবাসী বাংলাদেশী এবং দূতাবাসের কর্মকর্তা-কর্মচারীবৃন্দ আলোচনা পর্বে অংশগ্রহণ করেন।
বক্তারা প্রথমে শহিদ ক্যাপ্টেন শেখ কামাল এবং পরে বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন নেছা মুজিব-এর গৌরবময় জীবন সম্পর্কে আলোচনা করেন। শহিদ ক্যাপ্টেন শেখ কামাল মুক্তিযুদ্ধেও একজন বড় সংগঠক ছিলেন এবং পরবর্তীতে স্বাধীন বাংলাদেশের ক্রীড়া, শিক্ষা ও সাংস্কৃতিক অঙ্গনে তিনি যে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখে গেছেন এ বিষয়ে বক্তাগণ আলোকপাত করেন। অপরদিকে আলোচনায় উঠে আসে যে, বহুমুখী প্রতিভার অধিকারী মহীয়সী নারী বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন নেছা মুজিব ছোট বেলা থেকেই ছিলেন অত্যন্ত নম্র, শান্ত ও অসীম ধৈর্যের অধিকারী।
বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রাম ও মুক্তিযুদ্ধে নেতৃত্ব দিয়েছেন বঙ্গবন্ধু এবং বঙ্গবন্ধুর প্রতিটি পদক্ষেপ ও কার্যক্রম বাস্তবায়নের জন্য নেপথ্য শক্তি, সাহস ও বিচক্ষণ পরামর্শক হয়ে জড়িয়ে আছে বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন নেছা মুজিব। বঙ্গমাতার সততা, সাহসিকতা, মহানুভবতা, উদারতা ও ত্যাগের মহিমা বাঙালিসহ বিশ্বেও নারীদের জন্য অনুপ্রেরণার উৎস হয়ে থাকবে।
অনুষ্ঠানে রাষ্ট্রদূত জনাব মনিরুল ইসলাম বীর মুক্তিযোদ্ধা শহিদ ক্যাপ্টেন শেখ কামালের গৌরবোজ্জল কর্মময় স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করেন ও তাঁর অনুকরণীয় জীবন সম্পর্কে আলোচনা কযেন।
রাষ্ট্রদূত বলেন, বহু গুণের অধিকারী শহিদ ক্যাপ্টেন শেখ কামাল মুক্তিযুদ্ধে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করেছিলেন। এছাড়া, দক্ষ উদ্যোগী সংগঠক হিসেবে তিনি বাংলাদেশের রাজনীতি, ক্রীড়া ও সংস্কৃতির উন্নয়নে এবং বিকাশে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখে গেছেন যা বাংলাদেশের জনগণের জন্য বিশেষত যুব সমাজের কাছে অফুরন্ত অনুপ্রেরণার উৎস হয়ে থাকবে। বঙ্গমাতা সম্পর্কে তিনি উল্লেখ করেন যে, সংগ্রামী জীবনে জাতির পিতাকে বহুবার কারাবরণ করতে হয়েছে এবং এ সময় বঙ্গমাতা ফজিলাতুন নেছা মুজিব দৃঢ়তা, বিচক্ষণতা ও অসীম সাহসিকতার সাথে কঠিন পরিস্থিতির মোকাবেলা করেছেন এবং সারা জীবন বঙ্গবন্ধুকে সর্বক্ষেত্রে অনুপ্রেরণা এবং সাহস যুগিয়েছেন। তিনি আরোও বলেন যে, বঙ্গমাতা ফজিলাতুন নেছা মুজিব তাঁর প্রজ্ঞা ও বিচক্ষণতার দ্বারা বঙ্গবন্ধুকে সিদ্ধান্ত গ্রহণে, দলকে সংগঠিত করতে এবং স্বাধীনতা আন্দোলনকে সঠিক লক্ষ্যে এগিয়ে নিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিলেন। তিনি শহিদ ক্যাপ্টেন শেখ কামাল এবং বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন নেছা মুজিব-এর ত্যাগ-তিতিক্ষাপূর্ণ গৌরবময় জীবন ও আদর্শে অনুপ্রাণিত হয়ে সকলকে জাতির পিতার ‘সোনার বাংলা’ বাস্তবায়নে একযোগে কাজ করে যাওয়ার আহবান জানান।
অনুষ্ঠান শেষে অতিথিবর্গকে কেকসহ চা-চক্রে আপ্যায়িত করা হয়।
নয়া শতাব্দী/এম
মন্তব্য করুন
আমার এলাকার সংবাদ