নীলনদ আর পিরামিডের দেশ মিশরে যথাযথ ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্য ও উৎসবমুখর পরিবেশে পবিত্র ঈদুল আজহা উৎযাপন করেছেন প্রবাসীরা।
রোববার (১৬ জুন) মিশরের রাজধানী কায়রোর প্রাচীন ঐতিহাসিক মসজিদ আল-আজহার, আমর ইবনুল আস, সাঈদা জয়নবসহ দেশটির সব মসজিদ ও বিভিন্ন খোলা মাঠে জামাতের সহিত নামাজ আদায় করে পশু কোরবানি দিয়ে ঈদের আনন্দ ভাগাভাগি করছেন স্থানীয় এবং প্রবাসীরা।
মিশরীয় রীতি অনুযায়ী, ফজরের নামাজ শেষ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই 'আল্লাহু আকবার, আল্লাহু আকবার, লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু, আল্লাহু আকবার, আল্লাহু আকবার, ওয়া লিল্লাহিল হামদ' ধ্বনিতে মসজিদ, মসজিদ সংলগ্ন ও বিভিন্ন ক্লাবের নির্ধারিত মাঠে আসতে থাকেন মুসল্লিরা।
সূর্যোদয়ের ঠিক ২০ মিনিট পর সারা দেশের মসজিদ ও খোলা মাঠে একযোগে ঈদের জামাত শুরু হয়। ইমাম প্রথম রাকাতে ৭ তাকবীর ও দ্বিতীয় রাকাতে ৫ তাকবীরের সঙ্গে নামাজ আদায় করেন। নামাজ শেষে ইমাম যথারীতি খুতবা দেন। তবে এ দেশে বেশিরভাগ মুসুল্লি নামাজের সালাম ফিরিয়েই মসজিদ ও ঈদগাহ ছেড়ে বের হয়ে আসেন।
শাফী মাজহাবের অনুসারী মিশরীয়রা নামাজের পর ইমামের সঙ্গে হাত তুলে মোনাজাত পড়েন না এবং ঈদ উপলক্ষ্যে তাদেরকে বাংলাদেশের মুসুল্লিদের মতো কোলাকুলি করতেও দেখা যায় না। তবে যে সকল মাঠে বা মসজিদে বাংলাদেশিরা নামাজ আদায় করেন, তারা আমাদের দেশের রিতি অনুযায়ী নিজেদের মধ্যে কুলাকুলি করতে দেখা যায়। যা দেখে স্থানীয়রা অবাক হয় বটে।
মিশরে কর্মরত প্রবাসী বাংলাদেশিরা তাদের পরিবারের সদস্যদের নিয়ে নিজ নিজ এলাকাসহ রাজধানী কায়রোর বড় মসজিদগুলোতে ঈদের নামাজ আদায় করেন। নামাজ শেষ হওয়ার পর রাস্তায় কসাইদের হাঁকডাক শোনা যায়। তারা 'গাজ্জার গাজ্জার' বলে মানুষের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন। 'হেদাইয়া' (হাদিয়া) বা পারিশ্রমিকের বিনিময়ে কোরবানির পশু জবাই করে কেটে দিয়ে যান। একটি খাসি/ দুম্বা জবাই, চামড়া ছাড়ানো ও বড় বড় টুকরো করে কেটে দেওয়ার হাদিয়া বাংলাদেশি টাকায় প্রায় ১ হাজার ৫০০। গরু, মহিষ ও উটের ক্ষেত্রে তা ৩ হাজার টাকা। ঈদের জামাতের পর থেকেই উৎসবমুখর হয়ে ওঠে পুরো দেশ। নানা ধরনের আয়োজন করা হয় দেশজুড়ে।
এ দেশের দাতব্য সংস্থা ও ধনী ব্যক্তিরা গবিরদের মধ্যে প্রচুর পরিমাণে কোরবানির মাংস বিতরণ করে থাকে। এ দিনে সবাই পরিবার পরিজন ও বন্ধুবান্ধব সহ পরিচিত কারো সঙ্গে দেখা হলেই বলে, কোল্লু সানাত ওয়ানত তাইয়ীব বা কোল্লু ওয়ানতুম বাখাইয়ের বলে শুভেচ্ছা জানায় যার অর্থ, 'বছরটি আপনার ভালো কাটুক'।
নয়া শতাব্দী/এসআর
মন্তব্য করুন
আমার এলাকার সংবাদ