‘বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন ধরে, আনব হাসি সবার ঘরে’ প্রতিপাদ্যে শ্রদ্ধা, ভালোবাসা এবং রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় মিশরের কায়রোস্থ বাংলাদেশ দূতাবাসে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এর ১০৪তম জন্মবার্ষিকী ও জাতীয় শিশু দিবস পালিত।
রোববার (১৭ মার্চ) প্রত্যুষে জাতীয় পতাকা আনুষ্ঠানিকভাবে উত্তোলন করার মধ্য দিয়ে দিবসের কর্মসূচি সূচিত হয়। রাষ্ট্রদূত মিস সামিনা নাজ দূতাবাসের কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের নিয়ে দূতাবাস প্রাঙ্গনে জাতীয় সংগীত সহকারে জাতীয় পতাকা আনুষ্ঠানিকভাবে উত্তোলন করেন।
দুপুরে দূতাবাসের হল রুমে শিশির কুমার এর সঞ্চালনায় পবিত্র কোরআন থেকে তেলাওয়াত, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের রুহের মাগফেরাত, প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে দেশ ও জাতির শান্তি, সমৃদ্ধি ও উন্নতি কামনায় বিশেষ মোনাজাত করার পর রাষ্ট্রদূত দূতাবাসের কর্মকর্তাদের নিয়ে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন।
দিবসটি উপলক্ষ্যে ঢাকা থেকে প্রেরিত রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী এবং পররাষ্ট্রমন্ত্রীর বাণী পাঠ করে শোনান যথাক্রমে দুতাবাসের কাউন্সিলর (শ্রম) মো. ইসমাইল হুসাইন, দূতালয় প্রধান আতাউল হক ও ২য় সচিব শিশির কুমার প্রমুখ।
দিবসটি উপলক্ষ্যে ঢাকা থেকে প্রেরিত একটি প্রামান্যচিত্র প্রদর্শিত হওয়ার পর আয়োজিত বিশেষ আলোচনা সভায় রাষ্ট্রদূত সামিনা নাজ শুরুতেই সশ্রদ্ধচিত্তে স্মরণ করেন স্বাধীনতার মহান স্থপতি, সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙ্গালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে।
রাষ্ট্রদূত সামিনা নাজ তার বক্তব্যে বলেন, বঙ্গবন্ধু ছিলেন বাঙ্গালী জাতির অবিসংবাদিত নেতা যার মহান নেতৃত্বে ১৯৪৮ এর ভাষা আন্দোলন থেকে শুরু করে ১৯৭১ এর মুক্তিযুদ্ধ এবং সকল সংগ্রামে বাংলার মানুষ শোষণ, নির্যাতন, বঞ্চনা ও স্বাধীকার আদায়ে সোচ্চার হয়েছিল। রাষ্ট্রদূত উল্লেখ করেন বঙ্গবন্ধু বাঙালি জাতিকে দিয়েছেন একটি দেশ, পতাকা ও মানচিত্র। তার অসাধারণ নেতৃত্বের গুণে তিনি কেবল বাংলার অবিসংবাদিত নেতা হিসেবেই পরিগণিত হননি, নিজেকে তিনি তৎকালীন বিশ্বের একজন মহান নেতা হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছিলেন।
রাষ্ট্রদূত উল্লেখ করেন, শিশুদের প্রতি বঙ্গবন্ধুর ভালোবাসা ছিল অপরিসীম। প্রিয় মাতৃভূমি বাংলাদেশকে শিশুদের জন্য নিরাপদ আবাসভূমিতে পরিণত করার নতুন শপথ নিতেই বঙ্গবন্ধুর জন্মদিনটিকে জাতীয় শিশু দিবস হিসেবে পালন করার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয় এবং ১৯৯৬ সাল থেকে দিনটি জাতীয় শিশু দিবস হিসেবে পালিত হয়ে আসছে। বঙ্গবন্ধু বিশ্বাস করতেন, আজকের শিশুই আগামী দিনের ভবিষ্যৎ।
দিবসটি উপযাপন উপলক্ষ্যে বাংলাদেশ দূতাবাস, কায়রো বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ করে। তারই ধারাবাহিকতায় মিসর প্রবাসী বাংলাদেশি শিশুদের অংশগ্রহণে বয়স ভিত্তিক চিত্রাঙ্কন এবং রচনা প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়। এ প্রতিযোগিতায় বেশ কয়েকজন ছোট শিশু-কিশোর এই দূতাবাসে চিত্রাঙ্কন ও রচনা জমা দেয়। রাষ্ট্রদূত প্রতিযোগিতার বিজয়ীদের মাঝে পুরষ্কার বিতরণ করেন।
আয়োজিত অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন- মিশরের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে কর্মরত বাংলাদেশি শিক্ষক, বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থায় কর্মরত বাংলাদেশি কর্মকর্তা, মিশরে প্রসিদ্ধ বাংলাদেশি ব্যবসায়ী, বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নরত বাংলাদেশি শিক্ষার্থী, পেশাজীবী, শ্রমজীবীসহ বিপুল সংখ্যক প্রবাসী বাংলাদেশি, মিডিয়া ব্যক্তিত্ব এবং দূতাবাসের কর্মকর্তা, কর্মচারীরা।
অনুষ্ঠান শেষে উপস্থিত সকলকে রমজানের পবিত্রতা বজায় রেখে বাঙালি ঐতিহ্যে ইফতার ডিনারের ব্যবস্থা করা হয়।
নয়া শতাব্দী/এসআর
মন্তব্য করুন
আমার এলাকার সংবাদ