ঢাকা, শুক্রবার, ২৭ ডিসেম্বর ২০২৪, ১২ পৌষ ১৪৩১, ২৪ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

গাজায় পৌঁছালো বাংলাদেশের ত্রাণ

প্রকাশনার সময়: ১৩ মার্চ ২০২৪, ২০:২৮

পবিত্র রমজানের তৃতীয় দিনে অসহায় গাজাবাসীর সাহায্যার্থে ‘হেল্প গাজা’ প্রচারাভিযানের ধারাবাহিকতায় বাংলাদেশসহ বিশ্বের ৮০টি দেশের প্রতিনিধিদের অংশগ্রহণে দুই হাজার টন খাদ্যসহ ১শ ট্রাকের একটি বহর মিশরের রাফা সীমান্ত দিয়ে গাজা উপত্যকায় প্রবেশ করেছে।‌

এসব ত্রাণসামগ্রীর মধ্যে রয়েছে- চাল, পাস্তা, মটরশুটি, চিনি, তেল, চা, খেজুর, পনির, শিশুদের জন্য দুধ, জুস ছাড়াও শীত নিবারণের কম্বল, পরিচ্ছন্ন ও ব্যক্তিগত ব্যাবহারিক সামগ্রী।

এ বিষয়ে আল-আজহার বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলাদেশি শিক্ষার্থী হোজাইফা খান জানান, আল-আজহার কতৃপক্ষের অনুমতিক্রমে The World One Ummah Faundetion চ্যারাটি ফান্ডের মাধ্যমে রমজানের শুরুতেই বাংলাদেশি টাকায় মোট ৩৫ লাখ টাকার ত্রাণ পাঠিয়েছি গাজার অসহায় মানুষের জন্য। এই অর্থ আল-আজহার বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নরত বাংলাদেশি শিক্ষার্থীরা Human first, Azhar welfare society Bangladesh ও White pigeon নামের ছাত্র সংগঠনের মাধ্যমে সংগ্রহ করা হয়।

তাছাড়াও বাংলাদেশের একটি স্বনামধন্য বেভারেজ কোম্পানি ৪৮ লাখ টাকার ত্রাণ পাঠানোর জন্য উপায় বের করতে World one ummah faundetion-এর সঙ্গে যোগাযোগ করেছে।

মিশরের বিখ্যাত আল আজহার বিশ্ববিদ্যালয়ের জাকাত অ্যান্ড চ্যারিটি ফান্ড জানায়, গত ৭ অক্টোবর গাজা উপত্যকায় যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে এ পর্যন্ত গাজায় ত্রাণের যত চালান গেছে, তারমধ্যে রমজানের চালানটি বৃহত্তম। বাংলাদেশ ছাড়াও আরও যে ৮টি দেশের ত্রাণ এই চালানে যুক্ত হয়েছে, দেশগুলো হলো— ইন্দোনেশিয়া, ভারত, যুক্তরাজ্য, সৌদি আরব, ফ্রান্স, চীন, কানাডা এবং জার্মানি।

গত ৭ অক্টোবর ইসরায়েলের ইরেজ সীমান্তে অতর্কিত প্রতিরোধ হামলা চালায় গাজা উপত্যকার নিয়ন্ত্রণকারী স্বাধীনতাকামী হামাসের যোদ্ধারা। হামলাকালে ইসরায়েলি বাহিনী প্রতিরোধের চেষ্টা করলে সামরিক-বেসামরিক ইসরায়েলি ও বিদেশি নাগরিকসহ এক হাজার ২০০ জনেরও বেশি মানুষ নিহত হন। হামাসের যোদ্ধারা জিম্মি হিসেবে ধরে নিয়ে যায় ২৪০ জন ইসরায়েলি এবং অন্যান্য দেশের নাগরিককে।

১৯৪৮ সালে ফিলিস্তিনের ভূমিতে রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার পর গত ৭৫ বছরের ইতিহাসে সেদিন প্রথম একদিনে এতজন মানুষের হত্যা দেখেছে ইসরায়েল। সেই হামলার জবাবে সেদিন থেকেই গাজায় অভিযান শুরু করে ইসরায়েলি বিমান বাহিনী এবং তার এক সপ্তাহ পর বিমান বাহিনীর সঙ্গে যোগ দেয় স্থল বাহিনীও।

কার্যতঃ গাজায় ইসরাইলী বাহিনী গণহত্যা চালিয়ে এ পর্যন্ত নিহত হয়েছেন ৩১ হাজারেরও বেশি ফিলিস্তিনিকে হত্যা করেছে। আহত হয়েছে আরও প্রায় ৭২ হাজার। হতাহতদের মধ্যে একটি বড় অংশই নারী, শিশু, কিশোর-কিশোরী এবং বেসামরিক লোকজন। এছাড়া ইসরায়েলি বাহিনীর বোমায় ঘরবাড়ি হারিয়ে বাস্তুচ্যুত হয়েছেন লাখ লাখ ফিলিস্তিনি।

এই যুদ্ধের শুরু থেকে হামাস ও ইসরায়েলের সরকারের মধ্যে মধ্যস্থতা করে আসছে যুক্তরাষ্ট্র, কাতার ও মিসর। হামাসের হাতে থাকা অবশিষ্ট জিম্মিদের মুক্ত করতে এই তিন দেশের উদ্যোগে গাজায় রমজান মাস থেকে ছয় সপ্তাহের যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব তোলা হয়েছিল, কিন্তু যুদ্ধের দুই পক্ষ হামাস ও ইসরায়েলের সরকারের মধ্যে বনিবনা না হওয়ায় বহু আকাঙ্ক্ষিত যুদ্ধবিরতি আর হয়নি।

উল্লেখ্য, গত ৭ অক্টোবর, ২০২৩ সাল থেকে ব্যাপক ইহুদিবাদী আগ্রাসনে এখন পর্যন্ত ৩১ হাজারের ও বেশি ফিলিস্তিনি শহিদ এবং ৭১ হাজারের অধিক আহত হয়েছেন। এদের মধ্যে বেশিরভাগ শিশু, মহিলা এবং বৃদ্ধ।

নয়াশতাব্দী/এনএস

নয়া শতাব্দী ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

এ সম্পর্কিত আরো খবর
  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

আমার এলাকার সংবাদ