ঢাকা, শুক্রবার, ২৭ ডিসেম্বর ২০২৪, ১২ পৌষ ১৪৩১, ২৪ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

অস্ট্রেলিয়ার নামে ফিজিতে শতাধিক বাংলাদেশি বন্দি 

কাজের প্রলোভনে প্রতারণা
প্রকাশনার সময়: ২৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ১৪:৩৬ | আপডেট: ২৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ১৫:৪১

ভালো বেতন ও উন্নত জীবনের প্রলোভন দেখিয়ে অস্ট্রেলিয়া নেয়ার কথা বলে ফিজিতে নেয়া হচ্ছে শত শত দক্ষ বাংলাদেশি কর্মীকে। প্রতারণার শিকার হয়ে দেশটিতে গিয়ে চুক্তি অনুযায়ী কাজ না পেয়ে দুর্দশায় দিন কাটছে প্রবাসীর।

রাজধানীতে ট্রাভেল এজেন্সির আড়ালে ভুয়া চুক্তিপত্র দেখিয়ে এভাবেই দিনের পর দিন কর্মী পাঠাচ্ছে অন্য এজেন্সির ছাড়পত্রে। এসব প্রতারণার পরও যেন নির্বিকার জনশক্তি কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরো-বিএমইটি।

৬ লাখ টাকা খরচ করে ক্রেন চালক হিসেবে ফিজিতে গিয়েছিলেন নেত্রকোনার হিরন। চুক্তি অনুযায়ী বেতন পাবেন প্রায় ৩ লাখ টাকা। সঙ্গে কথা ছিল কয়েকমাস পরেই কাজ পাবেন পাশের দেশ অস্ট্রেলিয়ায়। তবে হয়নি কিছুই। বরং প্রায় আড়াই মাস বন্দিদশা কাটিয়ে পরিবারের সহায় সম্বল বিক্রি করে ফিরতে হয়েছে দেশে।

হিরন বলেন, ছয়দিন কাজ করে বেতন পেয়েছি ৮৮ ডলার। যেখানে আমার বেতন পাওয়ার কথা চিল সাড়ে ৫শ’ ডলার। প্রতিটি লোকই এখান থেকে বের হওয়ার জন্য কান্নাকাটি ও কষ্ট করছে, তবে বের হওয়ার কোনো উপায় নেই। কারণ ফেরার জন্য টিকিটের টাকা যোগার করার ক্ষমতা অনেকের নেই।

হিরনের মতোই ফিজি থেকে শূন্য হাতে ফিরেছেন টাঙ্গাইলের মোস্তফা। ফেসবুকে বিজ্ঞাপন দেখে ভাগ্য ফেরাতে ৩ মাস আগে ধারদেনা করে গিয়েছিলেন দেশটিতে। তবে সে আশায় গুড়ে বালি।

ভয়াবহ পরিশ্রমে অসুস্থ মোস্তফার সঙ্গে কথা হয় যেদিন তিনি ফেরেন বাংলাদেশে। জানান তার অবর্ণনীয় দুর্দশার গল্প। তিনি বলেন, ‘দেড়শ টাকা আমি বেতন পেয়েছি। ওই বেতনে আমার পকেট খরচও হয়নি। এত পরিশ্রম করেও খাওয়ার টাকা পাইনি। গ্যারেজে কাজ করতে করতে পায়ে ব্যথা পেয়েছি তারা চিকিৎসকের কাছেও নেয়নি।’

হিরন আর মোস্তফার মতোই এমন শতাধিক বাংলাদেশি নিরুপায় হয়ে এখন অবস্থা করছেন ফিজিতে। না মিলছে চুক্তিপত্র অনুযায়ী কাজ, না পারছেন দেশে ফিরতে। তাদের দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে রাজধানীর উত্তরার শান ট্রাভেল এজেন্সিতে যায় । গিয়ে দেখা যায়, রিক্রুটিং লাইসেন্স না থাকা সত্ত্বেও এমন শত শত কর্মীকে ভুয়া চুক্তিপত্র দিচ্ছে প্রতিষ্ঠানটি।

লাইসেন্স ছাড়া কীভাবে কর্মী পাঠাচ্ছেন? এমন প্রশ্নে জবাবে শান ট্রাভেলসের ম্যানেজার মাসুদ রানা বলেন, আমাদের এভাবে পাঠানোর এখতিয়ার নেই। আমরা উনাদের সঙ্গে ডিল করি বিএমইটি রেজিস্ট্রেশন করি সরকারিভাবেই।’

এক রিক্রুটিং এজেন্সির ছাড়পত্র কিভাবে পাচ্ছে অন্য প্রতিষ্ঠান? এমন প্রশ্নে বক্তব্য দিতে রাজি হয়নি জনশক্তি কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরোর কেউই। উল্লেখ্য, বিএমইটি'র তথ্য বলছে, গেল বছর কাজের খোঁজে ফিজিতে গেছেন ১ হাজার ৬৭ জন বাংলাদেশি।

নয়া শতাব্দী/আরজে

নয়া শতাব্দী ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

এ সম্পর্কিত আরো খবর
  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

আমার এলাকার সংবাদ