ইসরায়েলি বাহীনির হামলায় গাজার পরিস্থিতি মারাত্মক আকার ধারণ করলে, রেড ক্রিসেন্টের সহযোগিতায় হাজার হাজার ফিলিস্তিনি নারী ও শিশু শরনার্থী হয়ে মিশরে প্রবেশ করেন।
জন্মভূমি ত্যাগ করে পার্শ্ববর্তী দেশটিতে আশ্রয় নিতে বাধ্য হওয়া এসব অসহায় ফিলিস্তিনিদের সহযোগিতার জন্য রাজধানী কায়রোসহ বিভিন্ন শহরে খোলা হয়েছে চট্টগ্রামের ঐতিহাসিক ‘মেহমানখানা’।
বিভিন্ন দেশ ও আন্তর্জাতিক সংস্থার পাশাপাশি এই ‘মেহমানখানা’র আয়োজন করেছে মিশরের এনজিও সংস্থা ইজিপশিয়ান ইয়ুথ কাউন্সিলের সহযোগিতায় যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক বাংলাদেশের আলহাজ্ব শামসুল হক ফাউন্ডেশন (আশ)।
বিখ্যাত আল-আজহার বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলাদেশি কিছু শিক্ষার্থী স্বেচ্ছাসেবীদের নিয়ে নিজ হাতে এসব খাবার তৈরি করছেন আশ ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান প্রকৌশলী মুহাম্মদ নাছির উদ্দিন।
এসময় উপস্থিত গাজার অসহায় শরনার্থীরা আয়োজক সংস্থা আশ-কে ধন্যবাদ জানানোর পাশাপাশি নিজেদের মর্মান্তিক দুদর্শাও তুলে ধরেন এই প্রতিনিধির কাছে। বিশেষ করে নিজেদের ঘনিষ্ঠ স্বজন হারানোর পর যে দুয়েকজন এখনো জীবিত আছেন বলে তারা জেনেছেন, তাদের মিশরে আনার বিষয়ে সহযোগিতা চেয়ে আন্তরিক অনুরোধ করেন মিশর সরকারসহ আন্তর্জাতিক সংস্থার কাছে।
এসময় মায়ের সঙ্গে মেহমানখানায় আসা মায়াবী চেহারার ৮ বছরের শিশু তা'লা ও পাঁচ বছরের সিলা, তাদের বাবাকে তাদের কাছে এনে দেওয়ার আকুতি জানায়, যা করুণ পরিস্থিতির সৃষ্টি করে।
শামসুল হক ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান প্রকৌশলী মুহাম্মদ নাছির উদ্দিন জানান, গাজাবাসীর জন্য আশ ফাউন্ডেশন রেডক্রসের তত্ত্বাবধানে যুদ্ধাবস্থার প্রথম থেকেই কায়রো থেকে রাফাহ সীমান্ত দিয়ে সরাসরি গাজায় জরুরি খাবার সামগ্রীর পাশাপাশি কাফনের কাপড়, স্যানিটারি ন্যাপকিন পাঠানোর উদ্যোগগুলো ইতোমধ্যে বেশ প্রশংসিত হয়েছে। আমরা এবার রাজধানী কায়রোসহ বিভিন্ন শহরে অবস্থানরত ফিলিস্তিনি শরণার্থীদের জন্য মেহমানখানার ব্যবস্থা করেছি।
তিনি আরও জানান, চট্টগ্রামে করোনার সময় থেকে অদ্যাবধি চলমান মেহমানখানার একটি শাখা নিয়ে মিশরে এসেছি নির্যাতিত অসহায় গাজাবাসীর পাশে দাঁড়াতে। মেহমানখানায় খাবার পরিবেশনের পাশাপাশি অসহায় পরিবারগুলোর জন্য বিশেষ ফুড প্যাকেজ বিতরণ কর্মসূচিও অব্যাহত।
খুব শীঘ্রই গাজার অসহায় বাচ্চাদের জন্য আশ ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে একটা এতিমখানা তৈরির কাজ শুরু হচ্ছে জানিয়ে নাছির উদ্দিন বলেন, গাজা থেকে মিশরে আসা শরনার্থী শিশুদের মধ্য থেকে ১শ এতিম শিশুকে বাংলাদেশে নিয়ে শামসুল হক ফাউন্ডেশনের এতিমখানায় পালন করতে চাই। এসময় বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দৃষ্টি আকর্ষণ করে প্রকৌশলী নাসির উদ্দিন বলেন, এ বিষয়ে কায়রোস্থ বাংলাদেশ দূতাবাসের মাধ্যমে আবেদন করবো। সরকার সুযোগ দিলে মিশরে অবস্থানরত গাজার এতিম শিশুদের বাংলাদেশে নিয়ে লালন-পালন করা সম্ভব। এ বিষয়ে আশ ফাউন্ডেশন মাঠ পর্যায়ের সহযোগিতা দিতেও প্রস্তুত।
নয়াশতাব্দী/এএইচ/এনএস
মন্তব্য করুন
আমার এলাকার সংবাদ