ঢাকা, রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

৩০ ডিসেম্বরকে জাতীয় প্রবাসী দিবস ঘোষণা

প্রকাশনার সময়: ২৭ ডিসেম্বর ২০২২, ১৬:৪৮

এখন থেকে প্রতি বছরের ৩০ ডিসেম্বর ‘জাতীয় প্রবাসী দিবস’ উদযাপন করা হবে। মঙ্গলবার (২৭ ডিসেম্বর) প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত মন্ত্রিসভায় এ প্রস্তাবের অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।

এদিন বিকেলে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সম্মেলন কক্ষে মন্ত্রিপরিষদ সচিব কবির বিন আনোয়ার বলেন, প্রতি বছর ৩০ ডিসেম্বর ‘জাতীয় প্রবাসী দিবস (National Expatriates' Day)’ ঘোষণা এবং দিবসটি উদযাপনের লক্ষ্যে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ কর্তৃক জারি করা বৈদেশিক কর্মসংস্থান এ বিষয়ক পরিপত্রের ‘খ’ ক্রমিকে অন্তর্ভুক্তকরণের প্রস্তাব অনুমোদন দেওয়া হয়েছে৷ আগামী ৩০ ডিসেম্বর দেশে প্রথমবারের মতো জাতীয় প্রবাসী দিবস উদযাপান করা হবে। প্রথমবার সেজন্য হয়তো বেশি জাঁকজমকপূর্ণ না হলে দিবসটি পালন করা হবে।

প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় বলছে, বিদেশে থাকা এক কোটিরও বেশি প্রবাসীকে জাতীয় উন্নয়নে অংশীদার করতে এ উদ্যোগ।

তবে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, প্রবাসীদের জন্য একটি দিবস রয়েছে। সেটি হলো জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদ গৃহীত আন্তর্জাতিক অভিবাসী দিবস (১৮ ডিসেম্বর)। দিবসটি সরকারিভাবে পালন করা হয়। এটির ১২ দিন পর আরেকটি দিবস পালন ও তার পেছনে অর্থ ব্যয় অপ্রয়োজনীয়। কেউ কেউ বলছেন, এসব দিবস পালনের বদলে প্রবাসীদের সমস্যাগুলোর সমাধানে উদ্যোগ নেওয়া জরুরি।

আন্তর্জাতিক অভিবাসী দিবস থাকার পরও কেন আরেকটি দিবস পালনের উদ্যোগ, এ বিষয়ে প্রবাসীকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের একাধিক কর্মকর্তা বলেছেন, আন্তর্জাতিক অভিবাসী দিবস মূলত অভিবাসীকেন্দ্রিক। শ্রম অভিবাসী, উদ্বাস্তু, জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে অভিবাসী ও উন্নত জীবনের আশায় প্রবাসে থাকা ব্যক্তি- সবার জন্য দিবসটি পালিত হয়। প্রবাসী দিবস তাদের জন্য, যারা বিদেশে কাজ করে অথবা ব্যবসা করে দেশে অর্থ পাঠান। এটি জাতীয়ভাবে পালিত হবে।

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে, প্রবাসী দিবস পালনের আগ্রহের কথা প্রথম জানান পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন। ২০২১ সালে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে অনুষ্ঠিত অভিবাসী দিবসের অনুষ্ঠানে তিনি ৩০ ডিসেম্বরকে প্রবাসী দিবস পালনের প্রস্তাব দেন। এরপর পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে এ সংক্রান্ত একটি প্রস্তাব প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে পাঠানো হয়। সেখান থেকে সবুজসংকেত পাওয়ার পর প্রবাসীকল্যাণ মন্ত্রণালয় প্রস্তাবটি পর্যালোচনা করে অনুমোদনের জন্য মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে পাঠায়।

৩০ ডিসেম্বর প্রবাসী দিবস পালনের বিষয়ে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের যুক্তি হলো, ওই সময় খ্রিষ্টধর্মাবলম্বীদের প্রধান ধর্মীয় উৎসব শুভ বড়দিনের ছুটি পেয়ে অনেক প্রবাসী বাংলাদেশে আসেন। সে জন্য বছরের শেষ সময়কে বেছে নেওয়া হয়েছে।

প্রবাসীকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সচিব আহমেদ মুনিরুছ সালেহীন বলেন, প্রবাসীরা বাংলাদেশের আর্থসামাজিক উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখছেন। আন্তর্জাতিক অভিবাসী দিবসে তাদের প্রতি পুরোপুরি সম্মান দেখানো যায় না। সে কারণে নতুন আরেকটি দিবস পালন করা হবে। প্রবাসীরা যাতে বাংলাদেশের উন্নয়নে সরাসরি ভূমিকা রাখতে পারেন, সে জন্য এই উদ্যোগ।

প্রবাসী দিবস পালনের পেছনে আরও কিছু যুক্তি তুলে ধরে তিনি বলেন, ভারতে প্রতিবছর প্রবাসী দিবস পালিত হচ্ছে। আয়ারল্যান্ডসহ বিশ্বের আরও কিছু দেশে এই দিবস পালিত হয়। দিবসটি পালনের উদ্দেশ্য হবে প্রবাসে থাকা বাংলাদেশি, যারা বিভিন্ন খাতে বিশেষজ্ঞ, তাদের দেশে কাজে লাগানো। তাদের বিনিয়োগ কাজে লাগানো। দেশের উন্নয়নে প্রবাসীদের কীভাবে কাজে লাগানো যায়, সে উপায় খোঁজা হবে।

বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) এক জরিপ অনুযায়ী, দেশের এক কোটির মতো মানুষ বিদেশে বসবাস করছেন, যাদের বেশির ভাগই মধ্যপ্রাচ্যে স্বল্প দক্ষ অথবা অদক্ষ শ্রমিক হিসেবে কাজ করেন।

বিশ্বব্যাংকের হিসাবে, প্রবাসী আয় বা রেমিট্যান্স আয়ে বিশ্বে বাংলাদেশের অবস্থান ৮ম। ২০২১-২২ অর্থবছরে প্রবাসী বাংলাদেশিরা বৈধ পথে ২ হাজার ১০৩ কোটি মার্কিন ডলার পাঠিয়েছেন।

নয়াশতাব্দী/জেডআই

নয়া শতাব্দী ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

এ সম্পর্কিত আরো খবর
  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

আমার এলাকার সংবাদ