ধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা ২০২৪ সালে অনুষ্ঠেয় দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে দেশব্যাপী নির্বাচনি প্রচারণা শুরুর অংশ হিসেবে গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেলে যশোরে এক মহাসমাবেশে দেয়া ভাষণে তার দলের নির্বাচনি প্রতীক ‘নৌকা’ মার্কায় ভোট চেয়েছেন। দক্ষিণাঞ্চলের মানুষকে আগামী দিনে আরও উন্নয়নের প্রতিশ্রুতি দিয়ে আওয়ামী লীগের সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘বিগত দিনেও দেশের উন্নয়ন করেছি, আপনারা সুযোগ দিলে আগামী দিনেও উন্নয়ন করব। কাজেই ওয়াদা দেন, আবারও নৌকায় ভোট দিয়ে আমাদের জয়যুক্ত করবেন’। এর আগে সকালে বাংলাদেশ বিমানবাহিনী একাডেমি যশোরে ‘রাষ্ট্রপতি কুচকাওয়াজ (শীতকালীন) ২০২২’ এ যোগদান অনুষ্ঠানে দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘কোভিড-১৯, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ এবং নিষেধাজ্ঞার কারণে পুরো বিশ্ব অর্থনৈতিক মন্দা প্রত্যক্ষ করলেও আমাদের অর্থনীতি এখনও গতিশীল এবং নিরাপদ।’
মহাসমাবেশে দেয়া ভাষণে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আপনারা আমাদেরকে নৌকা মার্কায় ভোট দিয়ে জয়যুক্ত করে আপনাদের সেবা করার সুযোগ দিয়েছেন। আমি আপনাদের কাছে ওয়াদা চাই আগামী নির্বাচনেও আপনারা নৌকা মার্কায় ভোট দিয়ে আওয়ামী লীগকে আপনাদের সেবা করার সুযোগ দেবেন।’ যশোর-খুলনা অঞ্চলের দুঃখ ভবদহের প্রসঙ্গ তুলে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘এই অঞ্চলের কিছু স্থান এখনও জলাবদ্ধ রয়েছে। আমরা কপোতাক্ষ খননের মাধ্যমে প্রায় ৮২ কিলোমিটার নাব্যের জন্য প্রকল্প নিয়েছি, যাতে এই নদে নৌকা চলাচল করতে পারে। ভবদহ অঞ্চলের নদীগুলো ড্রেজিং করার লক্ষ্যে দ্বিতীয় প্রকল্প হাতে নিয়েছি। এতে এই অঞ্চলের মানুষের ভোগান্তি থাকবে না।’
শেখ হাসিনা বলেন, ‘যশোরের যে স্টেডিয়ামে (শামস-উল হুদা স্টেডিয়াম) বঙ্গবন্ধু আশা-আকাঙ্ক্ষার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন, সেই স্টেডিয়াম এখন জরাজীর্ণ। এই স্টেডিয়াম সংস্কারের জন্য ইতোমধ্যে ৩২ কোটি টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। এটিকে ১১ স্তরবিশিষ্ট আধুনিক স্টেডিয়াম করা হবে।’ দক্ষিণাঞ্চলের মানুষকে আগামী দিনে আরও উন্নয়নের প্রতিশ্রুতি দিয়ে আওয়ামী লীগের সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, বিগত দিনেও দেশের উন্নয়ন করেছি, আপনারা সুযোগ দিলে আগামী দিনেও উন্নয়ন করব। কাজেই ওয়াদা দেন, আবারও নৌকায় ভোট দিয়ে আমাদের জয়যুক্ত করবেন। ‘আপনাদের সেবা করার সুযোগ দেবেন কিনা,’ দুই হাত তুলে ওয়াদা করতে বললে জনতা দুই হাত তুলে চিৎকার করে তাতে সম্মতি দেয়। বিএনপি আমলের অরাজকতার উল্লেখ করে তিনি বলেন, বিএনপি সন্ত্রাস, হত্যা রাহাজানি, নির্যাতন আর জেল, জুলুম, মামলা ব্যতীত জনগণকে কিছুই দিতে পারে নাই।
প্রধানমন্ত্রী ব্যাংকে রিজার্ভ ও তারল্য নিয়ে বিএনপি-জামায়াত চক্রের ছড়ানো গুজব সম্পর্কে দেশবাসীকে সতর্ক করে দিয়ে বলেন, এই গুজবে কান দেবেন না কারণ বাংলাদেশ অর্থনৈতিকভাবে শক্তিশালী অবস্থানে রয়েছে এবং ব্যাংকে অর্থের কোনো সংকট নেই। যদিও, বিশ্ব অর্থনৈতিক মন্দার মধ্য দিয়ে যাচ্ছে।
আমাদের কাছে পর্যাপ্ত টাকা থাকায় ব্যাংকে টাকা নিয়ে আমাদের কোনো সমস্যা নেই। আর ব্যাংকে টাকা নেই এই কথাটা মিথ্যা। গত বুধবারও তিনি বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নরসহ মিটিং করে দেখেছেন টাকার কোনো সমস্যা নাই। প্রত্যেকটা ব্যাংকে যথেষ্ট টাকা আছে বলেন তিনি।
শেখ হাসিনা বলেন, আমাদের রেমিট্যান্স আসছে, বিদেশ থেকে বিনিয়োগ আসছে, আমদানি-রফতানি আয় বৃদ্ধি পেয়েছে, ট্যাক্স কালেকশন বৃদ্ধি পেয়েছে, বিশ্বের অন্য দেশ যেখানে হিমশিম খাচ্ছে সেখানে বাংলাদেশ এখনও যথেষ্ট শক্তিশালী আছে।
যশোর জেলা স্টেডিয়াম ও এর আশপাশের গলি-পথসহ এলাকার জনসমাগম এক অভূতপূর্ব দৃশ্যের অবতারণা করে। যশোর ও এর আশপাশের জেলা থেকে আওয়ামী লীগের ফ্রন্ট ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীসহ সর্বস্তরের মানুষ ভোর থেকে জনসভাস্থলে জমায়েত হতে থাকে। ব্যাপক জনসমাগমে সমগ্র এলাকা বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে এক জনসমুদ্রে রূপ নেয়। বেলা ২টা ৩৮ মিনিটে শেখ হাসিনা নৌকা আকৃতির মঞ্চে উঠলে বিভিন্ন স্লোগানে আকাশ-বাতাস মুখরিত করে তাকে স্বাগত জানানো হয়।
সভায় বক্তব্য দেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, প্রেসিডিয়াম সদস্য পীযূষ কান্তি ভট্টাচার্য, কৃষিমন্ত্রী ড. মো. আব্দুর রাজ্জাক ও জাহাঙ্গীর কবির নানক এবং শেখ হেলাল এমপি। যশোর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি শহিদুল ইসলাম মিলনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সমাবেশ পরিচালনা করেন দলের সাধারণ সম্পাদক শাহিন চাকলাদার, এমপি। এদিকে, সভামঞ্চের সামনে জায়গা পেতে সকাল ৯টা থেকেই যশোর জেলার আট উপজেলাসহ আশপাশে পাশের বিভিন্ন উপজেলা থেকে নেতাকর্মীরা এসেছেন। অনেকে ব্যাগে করে দুপুরের খাবারও নিয়ে এসেছেন। এছাড়া স্থানীয় সংসদ সদস্য ও আওয়ামী লীগ নেতাদের ছবি সংবলিত গেঞ্জি পরে কর্মীরা খণ্ড খণ্ড মিছিল নিয়ে জনসভায় হাজির হন। নেতাকর্মীরা হাতে শেখ হাসিনা ও শেখ মুজিবুর রহমানের ছবি সংবলিত প্ল্যাকার্ডও বহন করেন। এ জনসভাটি জনসমুদ্রে পরিণত হয়। জনসভাস্থলে ঠাঁই না পেয়ে জনসাধারণ শহরের ঈদগাহ ময়দান, টাউনহল মাঠ, আদালত চত্বর, জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে, সিভিল কার্টে মোড়ে অবস্থান নিয়ে মাইকে প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য শোনেন।
দেশের অর্থনীতি এখনও যথেষ্ট নিরাপদ: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, কোভিড-১৯ মহামারি, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ ও নিষেধাজ্ঞার ফলে সারাবিশ্ব অর্থনৈতিক মন্দার মধ্য দিয়ে গেলেও দেশের অর্থনীতি এখনও যথেষ্ট গতিশীল ও নিরাপদ রয়েছে। তিনি বলেন, ‘আমি বলতে পারি যে, কোভিড-১৯, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ এবং নিষেধাজ্ঞার কারণে পুরো বিশ্ব অর্থনৈতিক মন্দা প্রত্যক্ষ করলেও আমাদের অর্থনীতি এখনও গতিশীল এবং নিরাপদ।’ প্রধানমন্ত্রী বলেন, তার সরকার বৈশ্বিক মন্দা কাটিয়ে উঠতে অত্যন্ত সজাগ ও সক্রিয়। প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশ বিমান বাহিনী একাডেমি যশোরে ‘রাষ্ট্রপতি কুচকাওয়াজ (শীতকালীন) ২০২২’ এ যোগদান অনুষ্ঠানে দেয়া ভাষণে একথা বলেন।
দেশপ্রেম, আন্তরিকতা, জনগণের আস্থা ও বিশ্বাস অর্জনের গুরুত্ব তুলে ধরে দেশ ও জনগণের প্রতি দায়িত্ববোধের কথা মাথায় রেখে বিমান বাহিনীর নবীন কর্মকর্তাদের দায়িত্ব পালনের নির্দেশ দেন প্রধানমন্ত্রী।
তিনি বলেন, অনেক দেশ যখন দুর্ঘটনা, দুর্বিপাকে পড়ে, আমরা কিন্তু তাদের সহযোগিতা করি। আবার আমাদের দেশে যখন ঝড়, বন্যা বা কোনো রকম দুর্ঘটনা ঘটে বিমানবাহিনীর সদস্যসহ সশস্ত্র বাহিনীর সব সদস্য জনগণের পাশে দাঁড়ায়, জনগণের সেবা করে।
শেখ হাসিনা বলেন, এটাই হচ্ছে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ জনগণের আস্থা ও বিশ্বাস অর্জন করা। যে কোনো একটা যুদ্ধে জয়ী হওয়ার জন্য এটা একান্তভাবে দরকার।
‘বাংলাদেশ সবার সঙ্গে বন্ধুত্বের নীতিতে বিশ্বাস করে’-জাতির পিতার রেখে যাওয়া সেই পররাষ্ট্রনীতির প্রসঙ্গ টেনে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘তারপরও দক্ষতার দিক থেকে প্রশিক্ষণ নিয়ে আমাদের সব ধরনের উৎকর্ষ বজায় রেখে চলতে হবে এবং সেই আত্মবিশ্বাস নিয়ে চলতে হবে।’ আমরা সব সময় প্রশিক্ষণের ওপর সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেই।
সরকার প্রধান বলেন, দেশমাতৃকার প্রতি এবং দেশের জনগণের প্রতি দায়িত্ববোধ থাকতে হবে। যেটা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব তাঁর ভাষণেও বলেছেন যে দেশ ও দেশের জনগণের প্রতি দায়িত্ববোধ, এটাই হচ্ছে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। তিনি বলেন, ‘কাজেই, আমি আশা করি, আমাদের নবীন যারা আজ থেকে নতুন কর্মস্থলে যোগ দেবেন তাদের জন্য এই কথা অনেক প্রযোজ্য।’
এর আগে সকালে ঢাকা থেকে হেলিকপ্টারযোগে যশোর আসেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সকাল সাড়ে ১০টায় যশোর বিমানবাহিনী একাডেমির প্যারেড গ্রাউন্ডে অবতরণ করেন তিনি। এ সময় বিমানবাহিনী প্রধান এয়ার চিফ মার্শাল শেখ আব্দুল হান্নান প্রধানমন্ত্রীকে স্বাগত জানান।
প্যারেড গ্রাউন্ডে প্রধানমন্ত্রীকে সশস্ত্র সালাম জানায় বিমানবাহিনীর চৌকস সদস্যরা। প্রধানমন্ত্রী খোলা জিপে করে প্যারেড পরিদর্শন এবং সালাম গ্রহণ করেন। পরে তিনি সেরা ক্যাডেটদের হাতে ‘সোর্ড অব অনার’, ‘চিফ অব এয়ার স্টাফ ট্রপি’ এবং ‘কমান্ড্যান্টস ট্রপি’ তুলে দেন।
প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত ক্যাডেটদের ফ্লাইং ব্যাজ পরিয়ে দেন এবং বিভিন্ন সাফল্যের স্বীকৃতিস্বরূপ সম্মাননায় ভূষিত করেন। ৮১ নম্বর বাফা কোর্সে সার্বিক প্রশিক্ষণে সর্বোচ্চ চৌকস সাফল্যের জন্য স্কোয়াড্রন সিনিয়র অফিসার খন্দকার ইমামুর রহমান সোর্ড অব অনার লাভ করেন। অনুষ্ঠানে মনোজ্ঞ ফ্লাইফাস্ট এবং এরোবেটিকস প্রদর্শন করেন বিমান সেনারা।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, শুধু অপারেশন এবং প্রশিক্ষণই নয়, আমরা বাংলাদেশ বিমানবাহিনীতে কর্মরত এবং অবসরপ্রাপ্ত সব সদস্যের জীবনযাত্রার মানোন্নয়নে নানামুখী কল্যাণমূলক উদ্যোগ গ্রহণ করেছি।
তিনি বলেন, আমি চাই আমাদের ক্যাডেটদের জীবন সুন্দর হোক, সফল হোক এবং বাংলাদেশ যেন আমাদের ক্যাডেটদের নিয়ে গর্ব করতে পারে। তাছাড়া শান্তিরক্ষা মিশনেও আমাদের বিমান সেনারা কাজ করে এবং পৃথিবীর বিভিন্ন দেশের সঙ্গে চলতে হয়। সে জন্য প্রশিক্ষণের কথা সবসময় মনে রাখতে হবে এবং প্রশিক্ষণের ওপরই সবচেয়ে গুরুত্ব দিতে হবে। প্রশিক্ষণ উৎকর্ষ বৃদ্ধি করে এই কথা সবসময় মনে রাখতে হবে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা স্বাধীন দেশ এবং মহান মুক্তিযুদ্ধে বিজয় অর্জন করেছি। আমরা বিজয়ী জাতি। আমরা বিশ্ব দরবারে সবসময় মাথা উঁচু করে চলব— এটাই আমাদের লক্ষ্য। শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশ বিমানবাহিনীর রয়েছে এক গৌরবময় ইতিহাস। জাতির পিতার উদাত্ত আহ্বানে সাড়া দিয়ে মহান মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে ১৯৭১ সালের ২৮ সেপ্টেম্বর একটি ড্যাকোটা বিমান, একটি অটার বিমান ও একটি অ্যালুয়েট হেলিকপ্টারসহ ৫৭ সদস্য নিয়ে ‘কিলো ফ্লাইট’ নামে এ বাহিনী যাত্রা শুরু করে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব বাংলাদেশের ভূ-রাজনৈতিক অবস্থান ও সামরিক কৌশলগত দিক বিবেচনায় রেখে একটি আধুনিক, শক্তিশালী ও পেশাদার বিমানবাহিনী গঠনের স্বপ্ন দেখেছিলেন। তার দূরদর্শী ও বলিষ্ঠ সিদ্ধান্তে স্বাধীনতার পরপরই বিমানবাহিনীতে সংযোজিত হয় সেই সময়কার অত্যাধুনিক সুপারসনিক যুদ্ধবিমান, পরিবহন বিমান, হেলিকপ্টার এবং এয়ার ডিফেন্স রাডার।
সরকারপ্রধান বলেন, আওয়ামী লীগ সরকার জাতির পিতার অপরিসীম প্রজ্ঞা এবং দূরদৃষ্টিকে সামনে রেখে বাংলাদেশ বিমানবাহিনীকে একটি যুগোপযোগী, প্রযুক্তিগতভাবে সুসজ্জিত ও আধুনিক বাহিনী হিসেবে গড়ে তুলতে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। তার সরকারের ১৯৯৬-২০০১ মেয়াদে বিমানবাহিনীতে সংযোজিত হয় চতুর্থ প্রজন্মের অত্যাধুনিক মিগ-টুয়েন্টি নাইন যুদ্ধবিমান, সি-ওয়ান থার্টি পরিবহন বিমান এবং উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন এয়ার ডিফেন্স রাডার।
তিনি আরও বলেন, ২০০৯ সাল হতে এ যাবৎ বিমানবাহিনীর আধুনিকায়ন ও অপারেশনাল সক্ষমতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে এফ-সেভেন বিজিআই যুদ্ধবিমান, সর্বাধুনিক অ্যাভিওনিক্সসমৃদ্ধ সি-ওয়ান থার্টি জুলিয়েট পরিবহন বিমান, এম আই-ওয়ান সেভেন ওয়ান এসএইচ হেলিকপ্টার, মেরিটাইম সার্চ অ্যান্ড রেসকিউ হেলিকপ্টার সংযোজনসহ আমরা নানামুখী পদক্ষেপ গ্রহণ করেছি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ১৯৭৪ সালে প্রণীত জাতির পিতার প্রতিরক্ষা নীতির আলোকে তার সরকার সশস্ত্র বাহিনীর জন্য দীর্ঘমেয়াদি ‘ফোর্সেস গোল-২০৩০’ প্রণয়ন করেছে। যা পর্যায়ক্রমে বাস্তবায়ন করা হচ্ছে।
তিনি বলেন, বিভিন্ন ধরনের বিমান, হেলিকপ্টার, রাডার ও অন্যান্য সামরিক সরঞ্জামের সুষ্ঠু, নিরাপদ ও সাশ্রয়ী রক্ষণাবেক্ষণ এবং ওভারহলিংয়ের লক্ষ্যে আমরা নির্মাণ করেছি ‘বঙ্গবন্ধু এরোনটিক্যাল সেন্টার’। দেশের অ্যাভিয়েশন সেক্টরকে এগিয়ে নেয়ার লক্ষ্যে আমাদের সরকার ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান অ্যাভিয়েশন অ্যান্ড এরোস্পেস বিশ্ববিদ্যালয়’ স্থাপন করেছে।
শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশ বিমানবাহিনী একাডেমির সুনাম আজ দেশের গণ্ডি পেরিয়ে আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে ব্যাপ্তি লাভ করেছে। বন্ধুপ্রতিম বিভিন্ন দেশের অফিসার ক্যাডেটগণ এই একাডেমিতে প্রশিক্ষণ গ্রহণ করছেন। আজ এই প্যারেডে অংশগ্রহণ করছেন নেপাল, ফিলিস্তিন ও জাম্বিয়ার অফিসার ক্যাডেটগণ। তিনি এ সময় জাতির পিতার ভাষণের উদ্ধৃতি তুলে ধরেন। জাতির পিতা মিলিটারি একাডেমিতে একদিন বলেছিলেন, ‘ইনশাআল্লাহ, এমন দিন আসবে, এই একাডেমির নাম শুধু দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় নয়, সমগ্র দুনিয়াতে সম্মান অর্জন করবে’। সত্যিই আমরা জাতির পিতার স্বপ্নকে বাস্তবে রূপ দিতে পেরেছি। তার সরকার সবসময় বিমানবাহিনীর সদস্যদের সার্বিক দক্ষতা বৃদ্ধির জন্য প্রশিক্ষণ সুবিধাদির উন্নয়ন ও আধুনিকায়নের ওপর গুরুত্ব প্রদান করে যাচ্ছে বলেও প্রধানমন্ত্রী উল্লেখ করেন।
নয়াশতাব্দী/এমএস
মন্তব্য করুন
আমার এলাকার সংবাদ