ঢাকা, শনিবার, ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৬ আশ্বিন ১৪৩১, ১৭ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬

প্রজন্মকে জানতে হবে বঙ্গবন্ধুর রাজনৈতিক দর্শন 

প্রকাশনার সময়: ১৪ আগস্ট ২০২১, ০৫:১১

বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রাম এবং রক্তক্ষয়ী মুক্তিযুদ্ধে বিজয়ের মধ্য দিয়ে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান শুধু বাঙালি জাতির জনকেই পরিণত হননি, বাঙালির বঙ্গবন্ধু হয়ে উঠেছিলেন বিশ্বের নির্যাতিত মানুষের মুক্তিসংগ্রামের নেতা। তার নেতৃত্বে সংগঠিত বাঙালির স্বাধীন সংগ্রাম হয়ে উঠেছিলো বিশ্বের নির্যাতিত মানুষের মুক্তিসংগ্রামে প্রেরণার উৎস।যে মানুষটি সারাটা জীবন কাটিয়েছেন দেশকে পরাধীনতার হাত থেকে মুক্ত করার জন্য, একটা স্বাধীন সার্বভৌম দেশ দেখবার জন্য। সেই মানুষটিই হচ্ছেন জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান।কিন্ত ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট ঘাতক চক্রের হাতে বঙ্গবন্ধু হত্যা হওয়ার পর বিশ্ব নেতারা মর্মাহত হয়েছেন। বঙ্গবন্ধু নিহত হওয়ার মধ্য দিয়ে বিশ্ব একজন নির্যাতিত মানুষের নেতাকে হারালো বলে তারা মন্তব্য করেন। তাই তো তিনি হয়ে উঠেছেন হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি, এবং বিশ্বরাজনীতির অবিসংবাদিত কিংবদন্তি তথা বাংলা ও বাঙালি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকীতে জানাই বিনম্র শ্রদ্ধা। আমরা শুনেছি, মানুষটি ছোটকাল থেকেই ছিলেন পরোপকারী। রাজনৈতিক জীবন শুরু হওয়ার আগেই গ্রামের হতদরিদ্র মানুষের দুঃখ-কষ্ট দেখে তার নিজের মধ্যেই তা প্রকটভাবে নাড়া দিত। তিনি শীতার্তদের নিজের চাদর দান করতে কুণ্ঠা বোধ করেননি। আজীবন সত্যনিষ্ঠ একজন ন্যায়পরায়ণ মানুষ ছিলেন তিনি। তার রাজনৈতিক জীবন পর্যবেক্ষণ করলে দেখতে পাই তার সততা, নিষ্ঠা ও একাগ্রতা। তিনি বক্তৃতা করতেন সহজ-সরল ভাষায়, সাধারণ মানুষের মুখের কথা তিনি তার বক্তৃতায় তুলে ধরতেন। তিনি সাধারণ মানুষকে ভালোবাসতেন। তিনি যেখানে গেছেন সাধারণ মানুষ তার আপনজন হয়ে যেত। শুধু তাই নয়,বিশ্বের অনেক কিংবদন্তি নেতা বাঙালি জাতির জনক, হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে বিশ্বনেতার মর্যাদা দিয়েছেন। কারণ, তিনি একটি দল বা একটি দেশের নেতা ছিলেন না, তিনি ছিলেন সারা বিশ্বের নিপীড়িত, নির্যাতিত গণমানুষের নেতা।

বঙ্গবন্ধুর সাদাসিধে জীবন যাপনের কথা ভেবে বিশ্বের অনেক নেতারাই রীতিমতো বিস্মিত। অনেকেই আবার বলেছেন, তিনি শুধু বাংলাদেশের নেতাই ছিলেন না, ছিলেন দক্ষিণ এশিয়ার গুরুত্বপূর্ণ নেতা। তাঁকে বিশ্বের অন্যতম আলোচিত নেতা হিসেবে আখ্যা দিয়েছেন অনেকেই। বঙ্গবন্ধুকে এভাবে যাঁরা স্বীকৃতি দিয়েছেন, সম্মান দেখিয়েছেন বা শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করেছেন, তাঁদের কেউই এ দেশের নাগরিক নন। তাঁরা বিশ্বনেতা, বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্র বা সরকারপ্রধান অথবা সরকারের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি। বাংলাদেশ সফরে এসে বঙ্গবন্ধু স্মৃতি জাদুঘর দেখার পর তাঁরা বঙ্গবন্ধু সম্পর্কে নিজের হাতে মন্তব্য লিখেছেন। এসব মন্তব্য হয়ে উঠেছে জাদুঘরের মূল্যবান সম্পদ।বঙ্গবন্ধু সম্পর্কে সাধারণ মানুষের প্রতিক্রিয়া জানা বা বোঝার সুযোগ থাকলেও বিশ্বনেতা বা অতি গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তির মন্তব্য দেখার সহজ সুযোগ নেই। এসব মন্তব্য সযত্নে তুলে রাখা হয়।প্রতিবেশী দেশ ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি মনে করেন, এই স্মৃতি জাদুঘর পরিদর্শন তাঁর জন্য বড় সম্মান ও বিরল সুযোগ। বঙ্গবন্ধুকে বড় মাপের নেতা আখ্যা দিয়ে ভারতীয় জনগণের পক্ষ থেকে ২০১৫ সালের ৬ জুন তাঁর প্রতি শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করেন তিনি। মোদির মূল্যায়ন হচ্ছে, একজন বড় মানবতাবাদী হিসেবে শেখ মুজিবুর রহমান সব মানুষের সমতা ও সুযোগের পক্ষে ছিলেন। বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে চির অটুট বন্ধনে বঙ্গবন্ধুর যে লক্ষ্য ছিল, তা উপলব্ধি করার প্রতিশ্রুতি দেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী।ভারতের সাবেক রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখার্জি বঙ্গবন্ধুকে সাহসী নেতা আখ্যা দিয়ে লিখেছেন, আই স্যালুট দ্য ব্রেভ লিডার অব অল টাইমস। একটি নতুন রাষ্ট্রের জন্মদাতাকে এভাবে হত্যা করায় গভীর দুঃখ প্রকাশ করেন তিনি। প্রণব লিখেছেন, এই বাড়ি থেকে শেখ মুজিব বাংলাদেশের মানুষকে মুক্তিযুদ্ধে অংশ নিতে নেতৃত্ব দেন এবং এই বাড়িতেই তাঁকে হত্যা করা হয়। বিশ্বনেতাদের অনেকেই নিজের ভাষায় বঙ্গবন্ধুর প্রতি শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করেছেন। জাপানি, চীনা, আরবি, হিন্দি, উর্দুসহ নানা ভাষায় তাঁরা বঙ্গবন্ধু সম্পর্কে লিখেছেন।

অপরদিকে ভিয়েতনামের প্রেসিডেন্ট, কোরিয়ার প্রধানমন্ত্রী, মিসরের শিক্ষামন্ত্রী, নাইজেরিয়ার শিক্ষামন্ত্রীসহ বিভিন্ন দেশের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিরা তাঁদের অনুভূতির কথা লিখে গেছেন।বঙ্গবন্ধু স্মৃতি জাদুঘরের কিউরেটর এবং সাবেক সচিব নজরুল ইসলাম খান প্রথম আলোকে বলেন, বিদেশি বিভিন্ন ভাষায় লেখা বিশ্বনেতাদের মন্তব্য বাংলায় অনুবাদ করার চিন্তা করছে বঙ্গবন্ধু জাদুঘর। এ ছাড়া এগুলোর একটি সংকলন প্রকাশ করা হবে।আজও বঙ্গবন্ধু স্মৃতি জাদুঘরের দেয়ালে বুলেটের চিহ্ন এবং বঙ্গবন্ধু যে সিঁড়িতে গুলির আঘাতে পড়ে গিয়েছিলেন, সেই স্থান দেখে বিশ্বনেতাদের অনেকেই মর্মাহত হয়েছেন। ২০১৭ সালের ১৯ ডিসেম্বর জাদুঘর পরিদর্শন করে তুরস্কের প্রধানমন্ত্রী লিখেছেন, বিংশ শতাব্দীর অন্যতম নেতা ছিলেন বঙ্গবন্ধু। এ কারণেই মৃত্যুর ৫০ বছরের বেশি সময় পরও শেখ মুজিবুর রহমানকে স্মরণ ও শ্রদ্ধা করা হয়। ইন্দোনেশিয়ার প্রেসিডেন্ট জোকো উইদোদো মন্তব্য বইয়ে লিখেছেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মানবজাতির জন্য ছিলেন অনুপ্রেরণার বাতিঘর।সৌদি আরবের যোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের পরিকল্পনা ও উন্নয়নবিষয়ক উপমন্ত্রী খালেদ আল ওতাইবি বঙ্গবন্ধুর সাদাসিধে জীবনযাপনের বিষয়টি জেনে মুগ্ধ হন। ২০১৭ সালের আগস্টে এসে খালেদ লিখেছেন, ‘জাতির পিতা ছিলেন একজন দুর্দান্ত অনুপ্রাণিত মানুষ, যিনি তাঁর জনগণের সংগ্রামের প্রতীক। তাঁর পরিবারকে দেখলাম এবং তাঁদের জীবনযাপনের পদ্ধতি আমাকে এই ধারণা দিল যে তাঁরা সাধারণ জীবন যাপন করতেন।আমাদের মহান নেতা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কেবল বাঙালি জাতির মুক্তির দূত ও তাদের প্রাণপ্রিয় নেতাই ছিলেন না, তিনি ছিলেন সারাবিশ্বের নিপীড়িত নির্যাতিত মানুষের প্রাণপ্রিয় নেতা, সারা বিশ্বের শোষিত বঞ্চিত মানুষের বলিষ্ট কণ্ঠস্বর। তিনি কেবল বাংলার বন্ধুই নহেন। তিনি বিশ্ববন্ধু। তিনি কেবল বাঙালি জাতির নেতাই নহেন, তিনি বিশ্বনেতা।

তাই গণপ্রজাতন্ত্রী সফল রাষ্ট্র ও জনগণের কাছে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান শ্রদ্ধা, মর্যাদা ও সম্মানের আসনে অধিষ্ঠিত। এছাড়াও জাতিসংঘের শিক্ষা, বিজ্ঞান ও সংস্কৃতি বিষয়ক সংস্থা ইউনেস্কো আমাদের স্বাধীনতার মহান স্থপতি, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উদযাপন উপলক্ষে বঙ্গবন্ধুর জীবন দর্শনের আন্তর্জাতিকীকরণ ও বিশ্বময় ছড়িয়ে দেওয়ার জন্য বঙ্গবন্ধুর নামে পুরস্কার প্রদানের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে। এই পুরস্কারের নাম হচ্ছে ‘ইউনেস্কো বাংলাদেশ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ইন্টারন্যাশনাল প্রাইজ ইন দ্য ফিল্ড অব ক্রিয়েটিভ ইকোনমি’। এই পুরস্কারের অর্থমূল্য পঞ্চাশ হাজার মার্কিন ডলার। সৃজনশীল অর্থনীতিতে উদ্যোগের জন্য দুই বৎসর পর পর তরুণদের উৎসাহিত করার জন্য এই পুরস্কারের প্রবর্তন করা হয় ২০২১ সালের নভেম্বর মাসে অনুষ্ঠেয় ইউনেস্কোর ৪১তম সাধারণ সভায় এই পুরস্কারটি প্রধান করা হবে। এই পুরস্কার প্রদানের মাধ্যমে ইউনেস্কোর শুধু বঙ্গবন্ধুকেই মর্যাদা ও গুরুত্ব দেয় নাই। এতে বাংলাদেশ ও বাঙালি জাতিকেও সম্মানিত করা হয়েছে।জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকীকে আরও সম্মানিত, গৌরবান্বিত ও মর্যাদাশীল করেছে ভারতের আন্তর্জাতিক গান্ধী শান্তি পুরস্কার। ভারতের সংস্কৃতি মন্ত্রণালয় ২০২১ সালের ২২ মার্চ বঙ্গবন্ধুকে ২০২০ সালের জন্য গান্দী শান্তি পুরস্কার এ ভূষিত করেছেন। ২০২১ সালের ২৬ মার্চ ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি মুজিববর্ষ ও স্বাধীনতার রজতজয়ন্তী অনুষ্ঠানে সশরীরে উপস্থিত হয়ে প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার হাতে এই পুরস্কার তুলে দেন। তাছাড়াও এই দূতাবাসের উদ্যোগে প্রখ্যাত ব্রাসিলিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের দক্ষিণ এশিয়া বিভাগে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নামে একটি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান চেয়ার প্রতিষ্ঠার ব্যাপারেও নীতিগত সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে। এই চেয়ারের আওতায় জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জীবন ও কর্ম এবং তাঁর অবদান নিয়ে গবেষণা করা হবে।

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকীকে ফিলিপাইনেও গুরুত্ব ও মর্যাদা দিয়ে স্মরণীয় করে রাখা হয়েছে। ফিলিপাইনের কলাম্বা শহরের হোসে রিজাল যাদুঘরে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এবং ফিলিপাইনের জাতীয় বীর ডা. হোসেন রিজালের যৌথ কাঠের প্রতিকৃতি সংবলিত একটি শিল্পকর্ম ২০২১ সালের ২১ এপ্রিল উন্মোচন করা হয়েছে। আমাদের জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবর্ষ উদযাপনের অংশ হিসেবে ফিলিপিনো শিল্পী নিকোলাস পি আকা জুনিয়রের খোদাই করা শিল্পকর্মটি ফিলিপাইনে বাংলাদেশ দূতাবাসের পক্ষ থেকে রিজাল যাদুঘরে উপহার হিসেবে দেওয়া হয়েছে।কাঠের উপর খোদাই করা কর্মটিকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও ফিলিপাইনের জাতীয় নেতা ডা. হোসেন রিজালের প্রতিকৃতি রয়েছে। খোদাই করা এই কাঠের কর্মটিতে এই মহান দুই নেতার পোট্রেটের পাশাপাশি লাল রঙের আবহ মানুষ ও জনগণের জন্য এই দুই মহান নেতার আত্ম উৎসর্গকে প্রতিফলিত করে বলে শিল্পী নিকোলাস জানিয়েছেন।জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান শুধু আমাদের জাতীয় নেতাই নহেন। তিনি আন্তর্জাতিকভাবে খ্যাতি সম্পন্ন এক বিশ্বনেতা। তিনি শুধু বাঙালি জাতির কাছেই সমাদৃত নহেন, তিনি সমগ্র বিশ্ববাসীর কাছ সমাদৃত ও সম্মানিত। তাই আমরা দেখি জাতির পিতার জন্মশতবার্ষিকীতে কেবল আমরা বাঙালিরাই নহে বরং সমগ্র বিশ্বের মানুষ পালন করেছে এবং শ্রদ্ধা জানিয়েছে। সারা বিশ্বেই বঙ্গবন্ধু বিভিন্নভাবে মর্যাদা ও গুরুত্বের সহিত শ্রদ্ধা ও ভালবাসার আসনে আসীন রয়েছেন। তিনি শুধু বাঙালি জাতির নেতাই নহেন, তিনি সমগ্র বিশ্বের নেতা। তিনি শুধু বঙ্গবন্ধুই নন তিনি বিশ্ববন্ধুও। দক্ষিণ এশিয়া গত কয়েক শতকে বিশ্বকে অনেক শিক্ষক, দার্শনিক, দক্ষ রাষ্ট্রনায়ক, রাজনৈতিক নেতা ও যোদ্ধা উপহার দিয়েছে। কিন্তু শেখ মুজিবুর রহমান সবকিছুকে ছাপিয়ে যান, তার স্থান নির্ধারিত হয়ে আছে সর্বকালের সর্বোচ্চ আসনে।

ইরাকের প্রেসিডেন্ট সাদ্দাম হোসেন বলেছিলেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হচ্ছেন সমাজতন্ত্র প্রতিষ্ঠার সংগ্রামের প্রথম শহীদ। তাই তিনি অমর। ফিলিস্তিনি নেতা ইয়াসির আরাফাত বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে বলেন, আপসহীন সংগ্রামী নেতৃত্ব আর কুসুম কোমল হৃদয় ছিল মুজিব চরিত্রের বৈশিষ্ট্য। বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর লন্ডন অবজারভার পত্রিকার এক ব্রিটিশ সাংবাদিক সাইরিল ডুন তার এক নিবন্ধে লিখেছিলেন, বাংলাদেশের হাজার বছরের ইতিহাসে শেখ মুজিবুর রহমান ছিলেন এমন একজন নেতা, যার রক্ত, জাতি, ভাষা, সংস্কৃতি এবং জন্মের পুরোটা জুড়েই ছিল পূর্ণাঙ্গ বাঙালিত্ব।জাপানি বুদ্ধিজীবী মুক্তি ফুকিউরার বঙ্গবন্ধু সম্পর্কে মুল্যায়ন ছিলো, ‘এশিয়ায় তোমাদের শেখ মুজিবের মতো সিংহ হৃদয়বান নেতার জন্ম হবে না বহুকাল। ব্রিটেনের সাবেক এমপি জেমসলামন্ডের বক্তব্য ছিল- বঙ্গবন্ধুর হত্যাকাণ্ডে বাংলাদেশই শুধু এতিম হয়নি। বিশ্ববাসী হারিয়েছে একজন মহান সন্তানকে। বঙ্গবন্ধু কোনো দলীয় নেতা ছিলেন না। দলমতনির্বিশেষে তিনি সবার জাতীয় নেতা। তিনি একটি দলের প্রধান হলেও সব দল নিয়ে জাতীয় ঐক্য গড়েছিলেন দেশ মুক্ত করার জন্য। তিনি জানতেন, ঐক্য ছাড়া দেশ স্বাধীন করা যাবে না। সব দলের মানুষও তাকে শ্রদ্ধার আসনে অলংকৃত করেছিল। তাই তিনি একটি দলের হলেও সব দলের নেতা। তার যে দিকটা বড় ছিল, জাতীয় ঐক্য। দলের প্রধান হিসেবে নয়, দেশের জনগণের নেতা হিসেবে বিভিন্ন দলের নেতারা তাকে মেনেছেন, শ্রদ্ধা করেছেন। যা আজকের সমাজে বিরল। তার পরও বলব বঙ্গবন্ধুর আদর্শ ধারণ করে আমাদের সবাইকে সোনার মানুষ হতে হবে উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, বঙ্গবন্ধু ছিলেন বিশ্বের শান্তিকামী মানুষের চেতনার মূর্ত প্রতীক। নীতির ক্ষেত্রে তিনি ছিলেন আপসহীন। বঙ্গবন্ধু ছিলেন কোমল হৃদয় ও অসীম সহ্য ক্ষমতার অধিকারী। ত্যাগী ও সংগ্রামী নেতা হিসেবে বঙ্গবন্ধুর তুলনা বিশ্বের ইতিহাসে বিরল।

লেখক: গবেষক ও কলামিস্ট

নয়া শতাব্দী/এম

নয়া শতাব্দী ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

এ সম্পর্কিত আরো খবর
  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

আমার এলাকার সংবাদ