বিরোধী জোটের মোকাবিলায় শিগগিরই মাঠে নামছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন ১৪ দলীয় জোট। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে মাঠ দখলে রাখার অংশ হিসেবে এবং বিরোধী জোটকে রাজনৈতিকভাবে মোকাবিলার জন্য আটঘাট বেঁধেই মাঠে নামছে ক্ষমতাসীন দলের নেতৃত্বে থাকা এই জোট।
ছয় মাসে আগেও বিএনপি ও জামায়াতের রাজনৈতিক কোনো কর্মসূচি ছিল না। সংবাদ সম্মেলন আর আলোচনা সভা ঘিরে চলেছে তাদের রাজনীতি। ফলে অনেকটাই ঝিমিয়ে পড়েছিল ক্ষমতাসীন ১৪ দলীয় জোট। সেমিনার সভায় বিরোধী জোটের বক্তব্যের জবাব দিয়েই চুপসে থেকেছেন ১৪ দলের নেতারা। এখন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে মাঠ দখলের মরিয়া চেষ্টা চালাচ্ছে বিএনপি। গোপনে ভোটের মাঠ সাজাতে ব্যস্ত নিবন্ধন হারানো জামায়াতও। এমন প্রেক্ষাপটে ঘুম ভেঙেছে ক্ষমতাসীনদের। তাই বিরোধী জোটকে মোকাবিলা করা, নিজেদের তৃণমূলকে ঐক্যবদ্ধ ও সক্রিয় করার তাগিদে প্যাকেজ কর্মসূচি নিয়ে মাঠে নামছে ১৪ দলীয় জোট।
সোমবার ১৪ দলীয় জোটের অন্যতম শরিক জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল-জাসদের প্রতিষ্ঠার ৫০ বছর পূর্তি উপলক্ষে আয়োজিত এক সমাবেশে উপস্থিত ছিলেন জোটের কেন্দ্রীয় একাধিক নেতা। সমাবেশে উপস্থিত থেকে তারা বক্তব্য দিয়েছেন। তাদের বক্তব্যে উঠে এসেছে, সংকটকে কাজে লাগিয়ে ষড়যন্ত্র বাড়ছে, অপপ্রচার চলছে। যারা এ সমস্ত করছে তাদের কণ্ঠরোধ করতে হবে, ষড়যন্ত্রের প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে। সমাবেশে অংশ নেয়া ১৪ দলের বিভিন্ন শরিক দলের শীর্ষ নেতারা ঐক্যবদ্ধ থাকার প্রতিশ্রুতি দেন।
এ সময় ১৪ দলীয় জোটের নেতৃত্বদানকারী দল আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘মুক্তিযুদ্ধের সপক্ষের সব শক্তি ঐক্যবদ্ধ থাকলে কেউ হারাতে পারবে না। ১৪ দল, ইনু ভাই, আপনারা ঠিক থাকুন। ঐক্যবদ্ধ থাকলে আমরাই বিজয়ের বন্দরে পৌঁছে যাব।’ ১৪ দল ঐক্যবদ্ধ আছে বলেও দাবি করেন তিনি।
হাসানুল হক ইনু বলেন, ‘২০২৩ সাল মুক্তিযুদ্ধের সপক্ষের শক্তির বিজয় অর্জন করার যুদ্ধ। নির্বাচন বানচালের চক্রান্ত বন্ধ করার যুদ্ধ। আর অর্থনৈতিক সংকট সমাধান করার যুদ্ধ। এই তিন যুদ্ধ মোকাবিলা করতে মুক্তিযুদ্ধের সপক্ষের শক্তির সবাইকে কঠিন ঐক্যের মধ্যে থাকতে হবে।’ জাতীয় পার্টির (জেপি) সাধারণ সম্পাদক শেখ শহীদুল ইসলাম বলেন, ‘আমাদের ঐক্য অটুট আছে। এটা অটুট থাকবে।’
বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক ফজলে হোসেন বাদশা বলেন, ‘বিভিন্ন বিভাগে সমাবেশ করে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শক্তিকে ভয় দেখানোর চেষ্টা করছে। শেখ হাসিনার নেতৃত্বে একটি দিন ধার্য করুন। দেখা যাক, তারা কোথায় দাঁড়াতে পারে। আমরা ১৪ দলকে ধরে রাখতে চাই। মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শক্তিকে ধরে রাখতে চাই।’
গণতন্ত্রী পার্টির সাধারণ সম্পাদক শাহাদাত হোসেন বলেন, ‘আজকে ষড়যন্ত্র চলছে। এই ষড়যন্ত্র ভেঙে দিয়ে মুক্তিযুদ্ধের ধারাকে অব্যাহত রাখার জন্য সবাইকে আহ্বান জানাই।’
১৪ দলের নেতারা জানান, গণতান্ত্রিক ধারাবাহিকতা, স্থিতিশীলতা, শান্তি, নিরাপত্তা, উন্নয়ন ও যুদ্ধাপরাধীদের বিচার কাজ বাধাগ্রস্ত করা এবং বিএনপি-জামায়াত অশুভ জোটের দেশবিরোধী ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে জাতীয় গণজাগরণ সৃষ্টির উদ্দেশ্যে এখন থেকে মাঠে থাকবেন কেন্দ্রীয় ১৪ দলের নেতারা। ১৪ দল নেতারা মনে করেন, জনসমর্থনহীন বিএনপি ৫ জানুয়ারির নির্বাচন বানচাল ও রাজপথে সরকারবিরোধী শক্তিশালী আন্দোলন গড়ে তুলতে না পারায় হতাশ হয়ে পড়েছে। ভেঙে গেছে সাংগঠনিক শক্তি। যার জন্য নেতাকর্মীদের চাঙ্গা করতে দলটি এখন মরিয়া। এজন্য সারাদেশে গণসমাবেশের মতো কর্মসূচি নিয়ে তারা মাঠে নেমেছে। জবাব দিতে আওয়ামী লীগের পাশাপাশি এক গুচ্ছ কর্মসূচি নিয়ে ১৪ দলও মাঠে নামবে।
নয়াশতাব্দী/জেডআই
মন্তব্য করুন
আমার এলাকার সংবাদ