ঢাকা, রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

৩২ নম্বর, বাড়ি নয় বাংলাদেশের ইতিহাস

প্রকাশনার সময়: ০৩ আগস্ট ২০২১, ০৩:৪৩ | আপডেট: ০৩ আগস্ট ২০২১, ০৩:৪৯

ইতিহাসের সাক্ষী ধানমণ্ডি ৩২ নম্বরের বঙ্গবন্ধু ভবন বাঙালির মুক্তি সংগ্রামের বাতিঘর। পাকিস্তানি শোষণ মুক্তির পথ নির্দেশনা এ বাড়ি থেকেই দিয়েছেন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমান। স্বাধীনতার ঘোষণাও আসে ঐতিহাসিক এ বাড়ি থেকেই। সদ্য স্বাধীন দেশের ভঙ্গুর অর্থনীতি সচল, যুদ্ধবিধ্বস্ত অবকাঠামো বিনির্মাণ আর জাতিগঠনে নেতৃত্ব দিয়ে বঙ্গবন্ধু যখন হাল ধরেন বাংলাদেশের, তখনই আঘাত ঘাতকের। দেশি-বিদেশী ষড়যন্ত্রে রক্তাক্ত হয় ধানমণ্ডি ৩২।

ধানমন্ডি ৩২ নম্বর আর এই বাড়ি- বাংলার সব পথ এখানে মিশে ইতিহাসের মোহনায়। স্বাধীন বাংলার স্বপ্নদ্রষ্টা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও তাঁর পরিবারের আপন আবাস। পাকিস্তানি শোষণমুক্তির আন্দোলনে উত্তাল দিনগুলোতে এ বাড়িটিই ছিলো বাঙালির ঠিকানা-আশার বাতিঘর।

বত্রিশের বৈঠকখানা থেকে জাতীয় নেতাদের মুখরতায় উঠে আসতো গুরুত্বপূর্ণ সব সিদ্ধান্ত। বাঙালির মুক্তির সনদ ৬ দফা, স্বাধীন সার্বভৌম ভূখণ্ড, অর্থনীতি, পররাষ্ট্রনীতি কিংবা সংবিধান। এ বাড়ির প্রতিটি দেয়ালেই এসব ঐতিহাসিক দলিলের দীর্ঘশ্বাস।

দোতলায় শোবার কক্ষের পাশে লাগোয়া ঘরগুলো বঙ্গবন্ধুর প্রিয় সন্তানদের। বাড়িজুড়ে খেলে বেড়াতো ছোট্ট রাসেল। রাজনীতির এই আঁতুড়ঘরেই বঙ্গবন্ধুর প্রিয় হাসুমনির সংগ্রামের পথচলা, শেখ কামাল ও শেখ জামালের মুক্তিযোদ্ধা হয়ে ওঠা।

২৫ মার্চের কালরাতে গণহত্যার পর ২৬ মার্চ প্রথম প্রহরে ৩২ নম্বর থেকেই স্বাধীনতার ঘোষণা দেন জাতির পিতা। সেদিনই এই বাড়ি থেকে শেষবারের মতো বঙ্গবন্ধুকে গ্রেফতার করে পাকিস্তানের কারাগারে পাঠানো হয়।

বঙ্গবন্ধুর চাচাতো ভাই শেখ কবির হোসেন বলেন, এখানেই থেকে তিনি স্বাধীনতার ঘোষণা দিলেন এবং পাকিস্তানের আর্মিরা তাকে নিয়ে গেল। স্বাধীনতার সেই লাখ লাখ লোকের মিছিল শুরু হতো এখান থেকে আবার মিছিল শেষও হতো এখানে এসে। যত আন্দোলন যত কিছু- সবকিছুই বঙ্গবন্ধুর বাড়ি ৩২ নম্বর থেকেই শুরু হয়।

দীর্ঘ ৯ মাসে রক্তক্ষয়ী যুদ্ধ শেষে বিধ্বস্ত এ ভূখণ্ডের বাতাসে তখনো বারুদের গন্ধ। পাকিস্তান কারাগার থেকে মুক্ত হয়ে স্বাধীন স্বদেশে পা রেখে জনতার মঞ্চ কাঁপিয়ে বঙ্গবন্ধু ফিরে আসেন তার প্রিয় ৩২ এ।

শেখ কবির হোসেন বলেন, হুকুমের আসামী বা ষড়যন্ত্রকারীদের বিচার একজন ক্রিমিনালের বিচারের চেয়েও বেশি হওয়ার কথা। অতএব জাতি জানতে চায়, সেই মহান নেতা বঙ্গবন্ধুকে যারা হত্যা করেছিল তাদের পেছনে কারা ছিল?

সাড়ে ৩ বছরের পথচলায় পূর্নাঙ্গ রাষ্ট্রব্যবস্থার ভিত গড়ে দেন বঙ্গবন্ধু। যে অগ্রযাত্রাই স্বাধীনতাবিরোধী চক্রের চক্ষুশূল হয়েছিলো। দেশীয়-আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্রে ইতিহাস মুছে ফেলার ধ্বসযজ্ঞে বলি হন বঙ্গবন্ধু ও তাঁর পরিবারের সদস্যরা। ১৫ আগস্টের কাল রাতের সাক্ষী এই ধানমন্ডি ৩২।

নয়া শতাব্দী ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

এ সম্পর্কিত আরো খবর
  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

আমার এলাকার সংবাদ