কানাডিয়ান একটি অ্যাপস পাইকো (paico)। এই অ্যাপস ব্যবহারকারীর দেওয়া তথ্য মতে, ২০২৩ সাল থেকে বাংলাদেশে প্রতিষ্ঠানটির কার্যক্রম পরিচিতি লাভ করতে থাকে।
যাত্রা শুরুর পর থেকে দেশের অনেকের হোয়াটসঅ্যাপ নাম্বারে যোগাযোগ করতে শুরু করে পাইকোর প্রতিনিধিরা।
হোয়াটসঅ্যাপে তথ্য আদান-প্রদানের মাধ্যমে পাইকোতে প্রথমে ১০০ ডলার বিনিয়োগ করে স্বল্প সময়ে অধিক মুনাফার মাধ্যমে নগদ অর্থ আয় করার প্রলোভনের ফাঁদ পাতে প্রতিষ্ঠানটি।
যেখানে বলা হয়, পাইকোতে বিনিয়োগ করে দিনে ৫শ থেকে ১০ হাজার টাকা পর্যন্ত আয় করার সুযোগ রয়েছে। আর এই ফাঁদে পা দিয়ে দেশের হাজার হাজার যুবক মোবাইলে ইনস্টল করে পাইকোর অ্যাপস।
প্রতিষ্ঠানটির ওয়েবসাইটে দেওয়া বিভিন্ন পণ্যের ওপরে ডলার বিনিয়োগ করে প্রতিদিন একটি মুনাফার অংশ পেতে থাকে গ্রাহকরা। আবার নতুন কোনো সদস্য তৈরি করতে পারলেই, সেই গ্রাহকের আইডিতে কমিশন হিসেবে যোগ হতো ২৭ ডলার, যা বাংলা টাকার প্রায় ৩ হাজার টাকা।
এটি ছিলো গ্রাহক সংখ্যা বৃদ্ধি করার একটি বড় কৌশল। এমন কৌশলের ফাঁদে পা দিয়ে প্রতিনিয়ত বৃদ্ধি পেতে থাকে পাইকোর সদস্য সংখ্যা।
এছাড়াও প্রতিষ্ঠানটি গ্রাহকের কাছে নিজেদের স্বচ্ছতা তুলে ধরতে দিনে ২০টির বেশি পণ্যের ওপর বিনিয়োগ করার সুযোগও দিতো না। যে কৌশলের কারণের প্রতিষ্ঠানটি অনেকটাই আস্থা অর্জন করে নেয় গ্রাহকের মনে।
প্রতারিত হওয়া যুবকদের দেওয়া তথ্যে মতে, এভাবে দীর্ঘদিন চলার পরে হঠাৎ করে চলতি (মার্চ) মাসের ১ তারিখে বন্ধ হয়ে যায় প্রতিষ্ঠানটির ওয়েবসাইট। কোনো গ্রাহক লগইন করতে পারছেনা পাইকোর অ্যাপসে। দেখতে ও উত্তোলন করতে পারছেন না তাদের মুনাফা ও মূলধনের কোনো অর্থ।
দেশের হাজারো যুবকের শত শত কোটি টাকা নিয়ে হঠাৎ করে এভাবেই উধাও হয়ে যায় পাইকো নামের কানাডিয়ান ভিত্তিক এই অ্যাপসটি।
পাইকোর ফাঁদে পা দিয়ে সর্বস্বান্ত হওয়া খিলক্ষেতের বাসিন্দা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ুয়া হৃদয় নয়া শতাব্দীকে জানান, এটি ছিলো একটি প্রতারণার ফাঁদ। প্রথম দিকে তাদের কার্যক্রম দেখে যা বোঝার কোনো উপায় ছিলো না। এখানে আমি এক লক্ষ ৭৫ হাজার টাকা বিনিয়োগ করে প্রতারণার শিকার হয়েছি। এখন আর তাদের অ্যাপসে প্রবেশ করতে পারছিনা।
খিলক্ষেতের আরেক বাসিন্দা আকিব বলেন, আমিও এখানে ৮০ হাজর টাকা বিনিয়োগ করে এখন আর অ্যাপসে ঢুকতে পারছিনা।
পাইকোর অ্যাপে ৫০ হাজার টাকা বিনিয়োগ করা নাইম জানান, তার মতো দেশের হাজারও গ্রাহক স্বল্প সময়ে অধিক মুনাফার আশায় লক্ষ লক্ষ টাকা বিনিয়োগ করেছিলো। যে টাকা নিয়ে এখন লাপাত্তা প্রতিষ্ঠানটি।
এর আগেও রিং আইডিসহ দেশি-বিদেশি অনেক অনলাইন প্লাটফর্মের মাধ্যমে প্রতারিত হয়েছেন লক্ষ লক্ষ মানুষ।
তার পরেও সচেতনতা বৃদ্ধি পাচ্ছেনা মানুষের মাঝে। যে কারণে একের পরে এক এসব প্রতারক প্রতিষ্ঠানগুলো দেশের লাখ লাখ মানুষকে নিঃস্ব করে দিয়ে হাতিয়ে নিচ্ছে হাজার হাজার কোটি টাকা।
নয়াশতাব্দী/এনএস
মন্তব্য করুন
আমার এলাকার সংবাদ