ঢাকা, শনিবার, ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৬ আশ্বিন ১৪৩১, ১৭ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬

ঠুঁটো জগন্নাথ বিইআরসি

প্রকাশনার সময়: ০৫ জুলাই ২০২৩, ০৯:৪২

নির্বাহী আদেশে বিদ্যুৎ ও গ্যাসের দাম নির্ধারণ করায় ভেঙে পড়ছে রেগুলেটরের চেন অব কমান্ড। বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশনকে (বিইআরসি) আর পাত্তাই দিতে চাইছে না বিতরণ কোম্পানিগুলো।

বিদ্যুৎ খাতের কোম্পানিগুলোর মধ্যে অনেকটা শৃঙ্খলার সংস্কৃতি চালু হচ্ছিল মাত্র। কিন্তু বিধিমালা না থাকায় আগে থেকেই অনেকটা গাঁছাড়া ভাব ছিল জ্বালানি ও খনিজসম্পদ বিভাগের কোম্পানিগুলোর মধ্যে। এখন কেউই আর পাত্তা দিতে চাইছে না।

আগে দাম বাড়াতে গেলে অনেক প্রশ্নের মুখে পড়তে হতো কোম্পানিগুলোকে, অনেক বিব্রতকর পরিস্থিতিতে পড়তে হতো। যে কারণে বিইআরসিকে অনেকটা সমীহ করে চলত, আর এখন ততটাই অবহেলার নজির দেখা যাচ্ছে। কোম্পানিগুলো আর বিইআরসির পাওনাও ঠিকমতো পরিশোধ করছেন না।

এমনকি গ্যাস উন্নয়ন তহবিলের নামে গ্রাহকের জমা টাকাও আটকে রেখেছে কোনো কোনো কোম্পানি। এক তিতাস গ্যাস ট্রান্সমিশন অ্যান্ড ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানির কাছেই বকেয়া পড়েছে ৩০ কোটি টাকা। টাকা জমার জন্য চিঠি দিলেও গুরুত্ব দিচ্ছে না তিতাস গ্যাস।

বিইআরসির সাবেক সদস্য মকবুল ই-এলাহী চৌধুরী বলেছেন, নির্বাহী আদেশটা করাই হয়েছে বিইআরসিকে পাত্তা না দেয়ার জন্য। নির্বাহী আদেশের বিষয়টি বিইআরসিকে ঠুঁটো জগন্নাথ বানানো হয়েছে। এর মাধ্যমে কোম্পানিগুলোর ওপর নিয়ন্ত্রণ হারিয়েছে। এতে করে অর্থনীতিতে প্রভাব পড়বে, চুরির মাত্রা বেড়ে যাবে। কোম্পানিগুলো যে চেক অ্যান্ড ব্যালান্স রক্ষা হতো সেই জায়গাটি ভেঙে গেছে।

বিইআরসি সূত্র জানায়, দেশীয় গ্যাস অনুসন্ধান, উত্তোলন, উন্নয়ন ও সংস্কারে অর্থায়নের জন্য ২০০৯ সালের ৩০ জুলাই বিইআরসি এক আদেশে ‘গ্যাস উন্নয়ন তহবিল’ গঠন। তহবিল সংগ্রহের জন্য গ্রাহকের ওপর প্রতি ঘনমিটারে ৪৬ পয়সা বাড়তি বিল আরোপ করা হয়। কম মূল্যে ভোক্তাদের কাছে গ্যাস সরবরাহ করাই ছিল ওই তহবিলের মূল উদ্দেশ্য। গত বছর জুনের ৪ বিইআরসির অপর এক আদেশে গ্যাস উন্নয়ন তহবিল থেকে প্রতি ঘনমিটারে ৩ পয়সা হারে কেটে বিইআরসি গবেষণা তহবিল গঠন করা হয়েছে। সেই তহবিলের টাকাও জমা দিতে গড়িমসি করছে।

শুধু অর্থ জমা নয়, জনস্বার্থে জারিকৃত বিইআরসির আদেশকেও খুব একটা পাত্তা দিচ্ছে না বিতরণ কোম্পানিগুলো। গ্রাহক কর্তৃক খোলাবাজার থেকে গ্যাসের প্রি-পেইড মিটার স্থাপনের বিষয়ে দফায় দফায় চিঠি দিলেও কোম্পানিগুলো কুক্ষিগত করে রেখেছে প্রি-পিইড মিটারের প্রসঙ্গটি।

তারা নিজেরা প্রকল্প নিয়ে কয়েকগুণ বেশি দামে মিটার কিনে স্থাপন করছে। গত বছরের ৪ জুন গ্যাসের দাম বৃদ্ধির আদেশে বিতরণ কোম্পানিগুলোর সিস্টেম লস ২ শতাংশের নিচে নামিয়ে আনার নির্দেশ দেয় বিইআরসি। গণশুনানিতে তিতাস বলেছিল তাদের সিস্টেম লস সাড়ে ৮ শতাংশের মতো।

আন্তর্জাতিক মানদণ্ড অনুযায়ী গ্যাসের আদর্শ সিস্টেম লস বিবেচনা করা হয় ২ শতাংশের নিচে। সেখানে বাংলাদেশের সামগ্রিক সিস্টেম লস ৬ শতাংশের ওপরে। অর্থাৎ ৪ শতাংশ গ্যাস সিস্টেম লসের নামে চুরিকে জায়েজ করা হচ্ছে। বর্তমানে দৈনিক কমবেশি ২৬০০ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস সরবরাহ করা হচ্ছে পাইপলাইনে। সে হিসেবে দৈনিক ১০২ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস চুরি হয়ে যাচ্ছে লাইন থেকে।

যার ৩০ দিনের যোগফল দাঁড়ায় ৩১২০ মিলিয়ন ঘনফুটে। তখন বলা হয়েছিল চুরি ঠেকানো গেলে চড়াদামে স্পট মার্কেট থেকে এলএনজি আমদানি করার প্রয়োজন পড়ে না। গণশুনানিতে বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশনের তৎকালীন চেয়ারম্যান আবদুল জলিল বলেছিলেন, ‘গ্যাসের আদর্শ সিস্টেম লস হচ্ছে ২ শতাংশের নিচে। বিশ্বের কোথাও ২ শতাংশের ওপরে সিস্টেম লস নেই। সাড়ে ৮ শতাংশ সিস্টেম লস গ্রহণযোগ্য নয়, মাত্রা গ্রহণযোগ্য পর্যায়ে নামিয়ে আনতে হবে।’

কিন্তু বিইআরসির সেই নির্দেশনা তিতাস গ্যাস মানছে বলে মনে হচ্ছে না। সিস্টেম লস আগের তুলনায় অনেকে বেড়ে গেছে পেট্রোবাংলা সূত্র দাবি করেছে। তিতাস গ্যাসের এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেছেন, তিতাসের প্রকৃত সিস্টেম লস অনেক বেশি। গড় বিল আদায় করার কারণে সেই ক্ষতি সামাল দিয়ে এসেছে তিতাস। বিশেষ করে প্রায় ২৪ লাখ মিটারবিহীন আবাসিক গ্রাহক তিতাসের জন্য শাপে বর হিসেবে কাজ করেছে। এক হিসাবে দেখা গেছে, প্রি-পেইড মিটার ব্যবহারকারী গ্রাহকরা সর্বোচ্চ ৪০ ঘনমিটার গ্যাস ব্যবহার করছেন। তিতাস গত জুনের আগে পর্যন্ত ৭৮ ঘনমিটারের বিল আদায় করেছে। জুনের পর থেকে দুই চুলার জন্য ৬০ ঘনমিটারের বিল আদায় করা হচ্ছে।

মিটারবিহীন গ্রাহকরা মাসে ৪০ ঘনমিটারের নিচে ব্যবহার করলেও প্রতিমাসে ৬০ ঘনমিটারের বিল দিয়ে আসছে। সে হিসাবে প্রতি মাসে ৪৮০ লাখ ঘনমিটার গ্যাসের বাড়তি বিল আদায় করছে তিতাস। এ হিসাব যোগ করলে সিস্টেম লসের পরিমাণ আরও বেড়ে যায়। কোনোভাবেই চুরি ঠেকাতে পারছে না তিতাস।

অবৈধ লাইন উচ্ছেদ অভিযান জোরদার করা হলেও খুব একটা কাজে আসছে না। কারণ সকালে অভিযানে সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হলে বিকালেই আবার চালু হচ্ছে। বিদ্যুৎ ও গ্যাসের গ্রাহক পর্যায়ে মূল্য নির্ধারণের একক এখতিয়ার ছিল বিইআরসির হাতে। কয়েক বছর ধরেই বিদ্যুতের পাইকারি ও খুচরা এবং গ্যাসের খুচরা পর্যায়ে দাম নির্ধারণ করে আসছে সংস্থাটি। গত ডিসেম্বরে বিইআরসি আইন ২০০৩ সংশোধনের মাধ্যমে বিইআরসির পাশাপাশি নির্বাহী আদেশেও দাম সমন্বয় করার সুযোগ করে দেয়া হয়েছে। বিইআরসির সাবেক সদস্য মকবুল ই-এলাহী চৌধুরী বলেছেন, নির্বাহী আদেশটা করাই হয়েছে বিইআরসিকে পাত্তা না দেয়ার জন্য। নির্বাহী আদেশের বিষয়টি বিইআরসিকে ঠুঁটো জগন্নাথ বানানো হয়েছে। এর মাধ্যমে কোম্পানিগুলোর ওপর নিয়ন্ত্রণ হারিয়েছে। এতে করে অর্থনীতিতে প্রভাব পড়বে, চুরির মাত্রা বেড়ে যাবে। কোম্পানিগুলো যে চেক অ্যান্ড ব্যালান্স রক্ষা হতো সেই জায়গাটি ভেঙে গেছে।

ক্যাবের জ্বালানিবিষয়ক উপদেষ্টা ড. শামসুল আলম বলেছেন, ব্যবসায়ী নিজের মূল্য নিজে নির্ধারণ করতে পারে না। তেমন একটি কাজ করে ফেলেছে, এর সুদূরপ্রসারী প্রভাব পড়বে। এমনিতেই নানা কারণে আইন অনুযায়ী, কাজ করতে পারেনি বিইআরসি। এখন ক্লিনিক্যালি ডেটথ বলা চলে। এর মাধ্যমে ভয়াবহ শূন্যতা তৈরি করেছে, বিচারিক প্রক্রিয়াকে বাঁধাগ্রস্ত করেছে, নেতিবাচক প্রভাব পড়তে শুরু করেছে।

তিনি বলেন, ইউটিলিটিগুলোর কতরকম অসঙ্গতি ধরা পড়ে গণশুনানিতে। এতে করে তাদের ওপর এক ধরনের চাপ তৈরি হয়, দিনে দিনে একটি কালচারে পরিণত হতে যাচ্ছিল। সেই প্রক্রিয়াকে গলাটিপে হত্যা করছে। বিচারিক প্রক্রিয়াকে মানতে চায় না, সম্মান দেখাতে চায় না। গলাটিপে ধ্বংস করা হচ্ছে বিইআরসিকে।

নির্বাহী আদেশে বিদ্যুৎ ও গ্যাসের দাম নির্ধারণ করায় ভেঙে পড়ছে রেগুলেটরের চেইন অব কমান্ড। বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশনকে (বিইআরসি) আর পাত্তাই দিতে চাইছে না বিতরণ কোম্পানিগুলো।

বিদ্যুৎ খাতের কোম্পানিগুলোর মধ্যে অনেকটা শৃঙ্খলার সংস্কৃতি চালু হচ্ছিল মাত্র। কিন্তু বিধিমালা না থাকায় আগে থেকেই অনেকটা গাঁছড়া ভাব ছিল জ্বালানি ও খনিজসম্পদ বিভাগের কোম্পানিগুলোর মধ্যে। এখন কেউই আর পাত্তা দিতে চাইছে না। আগে দাম বাড়াতে গেলে অনেক প্রশ্নের মুখে পড়তে হতো কোম্পানিগুলোকে, অনেক বিব্রতকর পরিস্থিতিতে পড়তে হতো।

যে কারণে বিইআরসিকে অনেকটা সমীহ করে চলত, আর এখন ততটাই অবহেলার নজির দেখা যাচ্ছে। কোম্পানিগুলো আর বিইআরসির পাওনাও ঠিকমতো পরিশোধ করছেন না। এমনকি গ্যাস উন্নয়ন তহবিলের নামে গ্রাহকের জমা টাকাও আটকে রেখেছে কোন কোন কোম্পানি। এক তিতাস গ্যাস ট্রান্সমিশন অ্যান্ড ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানির কাছেই বকেয়া পড়েছে ৩০ কোটি টাকা। টাকা জমার জন্য চিঠি দিলেও গুরুত্ব দিচ্ছে না তিতাস গ্যাস।

বিইআরসি সূত্র জানায়, দেশীয় গ্যাস অনুসন্ধান, উত্তোলন, উন্নয়ন ও সংস্কারে অর্থায়নের জন্য ২০০৯ সালের ৩০ জুলাই বিইআরসি এক আদেশে ‘গ্যাস উন্নয়ন তহবিল’ গঠন। তহবিল সংগ্রহের জন্য গ্রাহকের ওপর প্রতি ঘনমিটারে ৪৬ পয়সা বাড়তি বিল আরোপ করা হয়। কম মূল্যে ভোক্তাদের কাছে গ্যাস সরবরাহ করাই ছিল ওই তহবিলের মূল উদ্দেশ্য। অন্যদিকে, গত বছর জুনের ৪ বিইআরসির অপর এক আদেশে গ্যাস উন্নয়ন তহবিল থেকে প্রতি ঘনমিটারে ৩ পয়সা হারে কেটে বিইআরসি গবেষণা তহবিল গঠন করা হয়েছে। সেই তহবিলের টাকাও জমা দিতে গড়িমসি করছে। শুধু অর্থ জমা নয়, জনস্বার্থে জারিকৃত বিইআরসির আদেশকেও খুব একটা পাত্তা দিচ্ছে না বিতরণ কোম্পানিগুলো। গ্রাহক কর্তৃক খোলাবাজার থেকে গ্যাসের প্রি-পেইড মিটার স্থাপনের বিষয়ে দফায় দফায় চিঠি দিলেও কোম্পানিগুলো কুক্ষিগত করে রেখেছে প্রি-পিইড মিটারের প্রসঙ্গটি।

তারা নিজেরা প্রকল্প নিয়ে কয়েকগুণ বেশি দাম মিটার কিনে স্থাপন করছে। গত বছরের ৪ জুন গ্যাসের দাম বৃদ্ধির আদেশে বিতরণ কোম্পানিগুলোর সিস্টেম লস ২ শতাংশের নিচে নামিয়ে আনার নির্দেশ দেয় বিইআরসি। গণশুনানিতে তিতাস বলেছিল তাদের সিস্টেম লস সাড়ে ৮ শতাংশের মতো।

আন্তর্জাতিক মানদণ্ড অনুযায়ী গ্যাসের আদর্শ সিস্টেম লস বিবেচনা করা হয় ২ শতাংশের নিচে। সেখানে বাংলাদেশের সামগ্রিক সিস্টেম লস ৬ শতাংশের ওপরে। অর্থাৎ ৪ শতাংশ গ্যাস সিস্টেম লসের নামে চুরিকে জায়েজ করা হচ্ছে। বর্তমানে দৈনিক কমবেশি ২৬০০ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস সরবরাহ করা হচ্ছে পাইপলাইনে। সে হিসেবে দৈনিক ১০২ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাসলাইন থেকে চুরি হয়ে যাচ্ছে।

যার ৩০ দিনের যোগফল দাঁড়ায় ৩১২০ মিলিয়ন ঘনফুটে। তখন বলা হয়েছিল চুরি ঠেকানো গেলে চড়াদামে স্পট মার্কেট থেকে এলএনজি আমদানি করার প্রয়োজন পড়ে না। গণশুনানিতে বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশনের তৎকালীন চেয়ারম্যান আব্দুল জলিল বলেছিলেন, গ্যাসের আদর্শ সিস্টেম লস হচ্ছে ২ শতাংশের নিচে। বিশ্বের কোথাও ২ শতাংশের ওপরে সিস্টেম লস নেই।

সাড়ে ৮ শতাংশ সিস্টেম লস গ্রহণযোগ্য নয়, মাত্রা গ্রহণযোগ্য পর্যায়ে নামিয়ে আনতে হবে। কিন্তু বিইআরসির সেই নির্দেশনা তিতাস গ্যাস মানছে বলে মনে হচ্ছে না। সিস্টেম লস আগের তুলনায় অনেকে বেড়ে গেছে বলে পেট্রোবাংলা সূত্র দাবি করেছে।

তিতাস গ্যাসের এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেছেন, তিতাসের প্রকৃত সিস্টেম লস অনেক বেশি। গড় বিল আদায় করার কারণে সেই ক্ষতি সামাল দিয়ে এসেছে তিতাস। বিশেষ করে প্রায় ২৪ লাখ মিটারবিহীন আবাসিক গ্রাহক তিতাসের জন্য শাপে বর হিসেবে কাজ করেছে। এক হিসেবে দেখা গেছে, প্রি-পিইড মিটার ব্যবহারকারী গ্রাহকরা সর্বোচ্চ ৪০ ঘনমিটার গ্যাস ব্যবহার করছেন।

অন্যদিকে, তিতাস গত জুনের আগে পর্যন্ত ৭৮ ঘনমিটারের বিল আদায় করেছে। জুনের পর থেকে দুই চুলার জন্য ৬০ ঘনমিটারের বিল আদায় করা হচ্ছে। মিটারবিহীন গ্রাহকরা মাসে ৪০ ঘনমিটারের নিচে ব্যবহার করলেও প্রতিমাসে ৬০ ঘনমিটারের বিল দিয়ে আসছে। সে হিসেবে প্রতি মাসে ৪৮০ লাখ ঘনমিটার গ্যাসের বাড়তি বিল আদায় করছে তিতাস।

এই হিসেব যোগ করলে সিস্টেম লসের পরিমাণ আরও বেড়ে যায়। কোনোভাবেই চুরি ঠেকাতে পারছে না তিতাস। অবৈধ লাইন উচ্ছেদ অভিযান জোরদার করা হলেও খুব একটা কাজে আসছে না। কারণ সকালে অভিযানে সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হলে বিকালেই আবার চালু হচ্ছে সংশ্লিষ্টদের যোগসাজশে।

বিদ্যুৎ ও গ্যাসের গ্রাহক পর্যায়ে মূল্য নির্ধারণের একক এখতিয়ার ছিল বিইআরসির হাতে। কয়েক বছর ধরেই বিদ্যুতের পাইকারি ও খুচরা এবং গ্যাসের খুচরা পর্যায়ে দাম নির্ধারণ করে আসছে সংস্থাটি। গত ডিসেম্বরে বিইআরসি আইন ২০০৩ সংশোধনের মাধ্যমে বিইআরসির পাশাপাশি নির্বাহী আদেশেও দাম সমন্বয় করার সুযোগ করে দেওয়া হয়েছে। ক্যাবের জ্বালানিবিষয়ক উপদেষ্টা ড. শামসুল আলম বলেছেন, ব্যবসায়ী নিজের মূল্য নিজে নির্ধারণ করতে পারে না। তেমন একটি কাজ করে ফেলেছে, এর সুদূরপ্রসারী প্রভাব পড়বে। এমনিতেই নানা কারণে আইন অনুযায়ী, কাজ করতে পারেনি বিইআরসি। এখন ক্লিনিক্যালি ডেটথ বলা চলে। এর মাধ্যমে ভয়াবহ শূন্যতা তৈরি করেছে, বিচারিক প্রক্রিয়াকে বাঁধাগ্রস্ত করেছে, নেতিবাচক প্রভাব পড়তে শুরু করেছে।

তিনি বলেন, ইউটিলিটিগুলোর কত রকম অসঙ্গতি ধরা পড়ে গণশুনানিতে। এতে করে তাদের ওপর এক ধরনের চাপ তৈরি হয়, দিনে দিনে একটি কালচারে পরিণত হতে যাচ্ছিল। সেই প্রক্রিয়াকে গলাটিপে হত্যা করছে। বিচারিক প্রক্রিয়াকে মানতে চায় না, সম্মান দেখাতে চায় না। গলাটিপে ধ্বংস করা হচ্ছে বিইআরসিকে।

নয়া শতাব্দী/এমআর

নয়া শতাব্দী ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

এ সম্পর্কিত আরো খবর
  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

আমার এলাকার সংবাদ