ঢাকা, রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

বঙ্গবন্ধু হত্যায় পাকিস্তান ও মার্কিন মদদ

প্রকাশনার সময়: ১৮ আগস্ট ২০২১, ০৩:২০

পঁচাত্তরের ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে হত্যা যে অভ্যুত্থানের মাধ্যমেই হয় তা স্পষ্ট ছিলো বিশ্ব গণমাধ্যমের প্রতিবেদনে। ক্ষমতায় আসা খুনী মোশতাক সরকার যে পাকিস্তান ও মার্কিন মদদপুষ্ট তাও উঠে আসে বিভিন্ন বিশ্লেষণে। একইসঙ্গে সে সময় পৃথিবীতে দুই পরাশক্তির স্নায়ুযুদ্ধের বাস্তবতায় সমাজতন্ত্র, ধর্মনিরপেক্ষতা ও উদারনীতিতে বিশ্বাসী হওয়াটাই বঙ্গবন্ধুকে হত্যার মূল কারণ, তার ইঙ্গিত মেলে।

আলজেরিয়ায় জোট নিরপেক্ষ আন্দোলনের এই মঞ্চে শতাধিক বিশ্ব নেতার সামনে বলিষ্ঠ কন্ঠেই বিশ্বের নিপীড়িত ও মেহনতি মানুষের পক্ষে দাঁড়িয়েছিলেন সদ্যোজাত বাংলাদেশের রাষ্ট্রপ্রধান বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। পরাশক্তির নেতৃত্বে বিভক্ত পৃথিবীতে এমন সাহসী কন্ঠস্বরকে যে দমিয়ে দেয়া হবে, তা সেইদিনই বুঝেছিলেন কিউবার তৎকালীন রাষ্ট্রপ্রধান ফিদেল কাস্ট্রো। সতর্ক করেন, ‘এখন থেকে একটি বুলেট তার পিছু নিয়েছে।’

ঠিক দুই বছর পর ৭৫-এর ১৫ আগস্ট এই নির্মম হত্যাকাণ্ড প্রত্যক্ষ করে বিশ্ব। কেন এই হত্যাযজ্ঞ? আর কারাই বা ছিলো এর পেছনে। বাংলার মানুষ ওইদিনই সত্য উদঘাটন করতে না পারলেও প্রায় সব মার্কিন গণমাধ্যমে স্পষ্ট ছিলো পাকিস্তান ও মার্কিনপন্থি মদদ।

ভারতের আনন্দবাজার পত্রিকা জানায়, প্রথম বিশ্ববাসীকে খবরটি দেয় ঢাকার মার্কিন দূতাবাস। টাইমস অব ইন্ডিয়া, স্টেটম্যানসহ বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে উঠে আসে অবরুদ্ধ বাংলাদেশের পরিস্থিতি। আর বন্ধুরাষ্ট্র রাশিয়ার গণমাধ্যম বলে- স্বাধীনতা বিরোধী শক্তির উত্থানে বাধাগ্রস্ত হবে বাংলাদেশের ভবিষতের উন্নয়ন।

ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম দ্য ডেইলি টেলিগ্রাফ, টাইমস অব লন্ডনে প্রকাশিত হয় বঙ্গবন্ধু হত্যায় অপূরণীয় ক্ষতির দিকগুলো। সবচেয়ে বিস্তারিত বর্ণনা প্রথম প্রকাশিত হয় এক সপ্তাহ পর গার্ডিয়ান পত্রিকায়। সাংবাদিক লরেন্স লিফশুলজ ও মার্টিন উলাকটের লেখা প্রথম পাতার ওই প্রতিবেদনে প্রকাশিত হয় নেপথ্যের নানা তথ্য।

পরবর্তীতে লিফশুলজ-এর তিন দশকের গবেষণায় বের হয়ে আসে তৎকালীন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী হেনরি কিসিঞ্জারের সমাজতন্ত্রবিরোধী ও প্রতিশোধমূলক চিন্তার বাস্তবায়ন করতে সিআইএ’র যোগসাজশে স্বাধীনতাবিরোধীরা ১৫ আগস্টের নীলনকশা সাজায়।

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর পৃথিবীর বুক থেকে মেহনতি মানুষের কন্ঠস্বরকে চিরতরে স্তব্ধ করে দিতে গোপনে মদদ চালায় পুঁজিবাদী গোষ্ঠী। কঙ্গোর লুমুম্বা, চিলির আলেন্দ’র মতো বাংলায় বিদায় নিতে হয় শেখ মুজিবকে। তবু আজও জাগরূক মুজিববাদ-বঙ্গবন্ধু চিরঞ্জীব।

নয়া শতাব্দী ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

এ সম্পর্কিত আরো খবর
  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

আমার এলাকার সংবাদ