মৌমাছি বেঁচে না থাকলে নাকি প্রকৃতির ভারসাম্য নষ্ট হয়ে যাবে। এমনটাই মনে করেন পরিবেশবিদরা। মৌমাছিরা মধু উৎপাদনে যে ভূমিকা পালন করে, তাতে বাস্তুতন্ত্রের ওপরও প্রভাব পড়ে বলে পতঙ্গবিজ্ঞানীদের ধারণা। কিন্তু এই মৌমাছিদের আয়ু যদি কমতে থাকে, তা হলে বিপদ আসন্ন। ৫০ বছর আগে মৌমাছিদের যা আয়ুষ্কাল ছিল তা প্রায় ৫০ শতাংশ কমে এসেছে, সম্প্রতি এমনটাই জানা গেল সমীক্ষায়।
আমেরিকার ইউনিভার্সিটি অব মেরিল্যান্ডের পতঙ্গবিজ্ঞানীরা মৌমাছিদের জীবনযাত্রা পর্যবেক্ষণ করে জানিয়েছেন, ৫০ বছর আগে ১৯৭০ সাল নাগাদ মৌমাছিদের আয়ু ছিল ৩৪.৩ দিন। বর্তমানে এই আয়ু কমে দাঁড়িয়েছে ১৭.৭ দিনে। এই সমীক্ষার সঙ্গে জড়িত এক বিজ্ঞানী বলেছেন, ‘আয়ু কমার সঙ্গে সঙ্গে মৌমাছিদের মধু উৎপাদনেও হ্রাস দেখা দিয়েছে। পরীক্ষা চলাকালীন পূর্ণাঙ্গ মৌমাছিতে পরিণত হওয়ার আগে আমরা তাদের আলাদা জায়গায় রেখেছিলাম। বদ্ধ পরিবেশে সেই মৌমাছিগুলোর খাদ্যাভাস পরিবর্তন করেও দেখা হয়েছিল। কিন্তু তাদের আয়ুষ্কালে কোনো পরিবর্তন দেখা যায়নি।’
বিজ্ঞানীদের ধারণা, পারিপার্শ্বিক পরিবেশ এবং খাদ্যাভাসের ওপর মৌমাছিদের আয়ু নির্ভর করছে না। এর নেপথ্যে কোনো জিনগত সমস্যা থাকতে পারে বলে অনুমান করছেন বিজ্ঞানীরা। তারা জানান, যদি তাদের অনুমান সঠিক হয় তা হলে জিনগত উপাদান পরিবর্তনের দিকে নজর দেবেন তারা। বিপুল পরিমাণে কীটনাশকের ব্যবহার অথবা ভাইরাসের আক্রমণ মৌমাছিদের আয়ু কমে যাওয়ার কারণ হতে পারে বলে অনুমান করছেন তারা। তবে, এখনও চূড়ান্ত কোনো সিদ্ধান্তে পৌঁছাননি পতঙ্গবিজ্ঞানীরা। পুরো বিষয়টি আরও পর্যবেক্ষণ করে দেখবেন বলে জানিয়েছেন ইউনিভার্সিটির গবেষকরা। মৌমাছির আয়ু কমে যাওয়ার প্রভাব পরিবেশ এবং মানবজীবনে কীভাবে পড়তে পারে তা নিয়েও সচেতন করছেন তারা।
নয়া শতাব্দী/আরআর
মন্তব্য করুন
আমার এলাকার সংবাদ