ঢাকা, রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

সবচেয়ে বুদ্ধিমান যে সামুদ্রিক প্রাণী

প্রকাশনার সময়: ২৩ আগস্ট ২০২২, ২০:২১

সাগরের অথৈ জলরাশিতে এমন অনেক জীবের অস্তিত্ব বিদ্যমান, যার সম্পর্কে প্রতিদিন নতুন তথ্য উদঘাটন হচ্ছে আর বিজ্ঞান শুধু হতবাক হচ্ছে। স্থলভাগের প্রাণী সম্পর্কে যতটুকু জানা গেছে, জলভাগের প্রাণী সম্পর্কে ততটাই অন্তরালে রয়ে গেছে মানুষ।

সামুদ্রিক প্রাণীদের মধ্যে সবচেয়ে বুদ্ধিমান বলা হয় অক্টোপাসকে। কারণ, তারা ক্ষণস্থায়ী এবং দীর্ঘস্থায়ী দুই ধরনের স্মৃতিই ধারণ করে রাখতে পারে। এমনকি তারা জলের ভেতর গোলকধাঁধা থেকেও বের হয়ে আসতে পারে। যদি কোনো অক্টোপাসকে বোতলে আটকে রাখা হয়, তবে খুব অনায়াসে সে মুখ খুলে বের হয়ে আসতে পারবে। এমনই এক ঘটনা ঘটেছিলো ২০১৫ সালে।

২০১৫’র এপ্রিলে নিউজিল্যান্ডের জাতীয় অ্যাকুরিয়াম থেকে একটি অক্টোপাস পালিয়ে যায়। রাতের বেলা অ্যাকুরিয়ামের ট্যাঙ্কটির ঢাকনা আধখোলা ছিল। এই সুযোগ নিয়ে অক্টোপাসটি বের হয়ে যায়। এরপর একটি কক্ষ পার হয়ে ড্রেনে পড়ে। সবশেষে ৫০ মিটার পাইপ বেয়ে নিচের খোলা সমুদ্রে চলে যায়।

বিভিন্নসময়ে বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, একটি অক্টোপাসের নিউরন সংখ্যা প্রায় ৫০০ মিলিয়ন, যা একটি কুকুরের নিউরন সংখ্যার সমান। সিটেল একাডেমির প্রাণিবিদরা বিলি নামের এক অক্টোপাসের শক্তি ও বুদ্ধি পরীক্ষা করার জন্য তাকে একটি বোতলের মধ্যে খাবার আটকে দেন। বিলি ৫ মিনিট সময় নেয় বোতলটি খোলার জন্য। তবে অক্টোপাসের মতো প্রাণীর জন্য এটা খুব বেশি অবাক করার বিষয় নয়। কারণ তারা ছুরির সাহায্য ছাড়াই শামুক ও ঝিনুকের খোলস খুলে ফেলতে পারে।

এরা শুধু বুদ্ধিমানই নয়, এরা বেশ স্মার্ট আর দুষ্টুও হয়। অনেক সময় তারা দুষ্টুমির ছলে জেলেদের নৌকা আটকে দেয়। এমনকি তারা কাঁকড়ার খোলস ছাড়িয়ে তাদের মাংস খেয়ে উদরপূর্তি করতে পারে। গবেষকরা অক্টোপাসের বুদ্ধিমত্তা নিয়ে নানাভাবে গবেষণা করেছেন। অক্টোপাসের আটটি আচরণ প্রমাণ করে, তারা পৃথিবীর বুদ্ধিমান প্রাণীদের একটি। অক্টোপাস যে ছদ্মবেশ ধারণে ওস্তাদ এটা সবারই জানা। নিজেদের আকৃতি, নড়াচড়া এবং আচরণকে অন্তত ১৫টি বিভিন্ন প্রজাতির শিকারের অনুরূপ পরিবর্তন করে শিকারগুলোকে কাছে আসতে প্রলুব্ধ করে এরা। বিবর্তনের ধারায় টিকে থাকতে এ ছদ্মবেশ তাদের মূল অস্ত্রও।

জলের ভেতর তৈরি হওয়া বিভিন্ন গোলকধাঁধাকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে তারা সহজেই সেখান থেকে বের হয়ে আসতে পারে। রসিকতায়ও কম যায় না এরা। বিষন্নতায় ভুগতে থাকলে আমরা যেমন দাঁত দিয়ে নখ কাটি, অক্টোপাসও এমন অবস্থায় নিজেদের উপাঙ্গ কামড়ে খেয়ে বিষন্নতা কাটানোর চেষ্টা করে। অক্টোপাসের স্নায়ুতন্ত্র মানুষের থেকে সম্পূর্ণ ভিন্ন ধাঁচের। মস্তিষ্কের আকারও বেশ বড়। অথচ তাদের মাঝে ভিন্ন ভিন্ন মানুষকে চিনতে পারা সহ অনেক বিস্ময়কর দক্ষতা রয়েছে বলেও প্রমাণ পেয়েছেন বিজ্ঞানীরা। আর এসব কারণেই অক্টোপাসকে সামুদ্রিক প্রাণীদের মধ্যে সবচেয়ে বুদ্ধিমান বলা হয়।

নয়া শতাব্দী/জেআই

নয়া শতাব্দী ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

এ সম্পর্কিত আরো খবর
  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

আমার এলাকার সংবাদ