স্বচ্ছ পানিতে ভড়া বুড়িগঙ্গা আজ দখল দূষণে জর্জরিত। এই বুড়িগঙ্গাকে দূষণমুক্ত করার দাবিতে বিশ্ব পরিবেশ দিবস উপলক্ষে ‘বুড়িগঙ্গায় গণগোসল’ ব্যতিক্রমী এক কর্মসূচির আয়োজন করে জুনিয়র চেম্বার অব কমার্স-জেসিকা (ঢাকা নর্থ), ওয়াটারকিপারস বাংলাদেশ, রিভার অ্যান্ড ডেলটা রিসার্চ সেন্টার-আরডিআরসি ও বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা)।
রোববার (৫ই জুন) রাজধানীর মোহাম্মদপুর বসিলা সেতুর নিচে এ কর্মসূচির আয়োজন করা হয়।
সরেজমিনে মো:পুর বসিলা সেতুর নিচে গিয়ে দেখা যায়, বছিলা সেতুর ঢাকা অংশে বছিলা পুরোনো সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়সংলগ্ন বুড়িগঙ্গা নদীতে একসঙ্গে গোসল করতে নামেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, শিক্ষার্থী, ব্যবসায়ী, শ্রমজীবীসহ নানা শ্রেণি পেশার মানুষ। একই রঙের টি–শার্ট পরে তারা প্রায় ২০ মিনিট বুড়িগঙ্গার দূষিত পানিতে গোসল করেন। এ সময় অনেকে পানিতে নেমে দূষণরোধে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে বিভিন্ন প্ল্যাকার্ড হাতে নিয়ে দাঁড়ান। এর আগে সকাল সাড়ে ১০টা থেকে বছিলা সেতুর নিচে সংক্ষিপ্ত আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়।
তারা বলেন, এর মানে এই নয় যে সারা দেশের মানুষকে বুড়িগঙ্গায় গোসল করতে বলা হচ্ছে। গণগোসলের একমাত্র উদ্দেশ্য হলো, বুড়িগঙ্গায় একসঙ্গে গোসলের মতো পরিবেশ তৈরি করতে হবে।
বাপার সাধারণ সম্পাদক শরীফ জামিল বলেন, বুড়িগঙ্গায় গোসল করলে স্বাস্থ্যঝুঁকি আছে। এজন্য আমি এর পক্ষে নই। এরপরও কেন এই কর্মসূচি তার ব্যাখ্যা হলো; এটা নদীদূষণের বিরুদ্ধে একধরনের প্রতিবাদ। বুড়িগঙ্গার পাড়ে যারা বসবাস করে, তারা প্রতিনিয়ত এই পানিতে গোসল করে। হয় তাদের শরীরে এই পানি সয়ে গেছে, না হয় ভবিষ্যতে বড় ধরনের কোনো রোগে আক্রান্ত হবে এসব মানুষ।
মেগাপ্রকল্পের মাধ্যমে মেঘনা নদী থেকে রাজধানীতে পানি আনতে নেয়া পরিকল্পনার কঠোর সমালোচনা করে শরীফ জামিল বলেন, ঢাকার চারপাশের নদী আছে। অথচ এসব নদী দূষণমুক্ত করার উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে না।
রিভার অ্যান্ড ডেলটা রিসার্চ সেন্টারের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ এজাজ বলেন, বুড়িগঙ্গা নদীর সঙ্গে ২৫১টি সুয়ারেজ লাইন আছে। ওয়াসা এর সঙ্গে সম্পৃক্ত। তাই তাদের আগে ঘুম ভাঙাতে হবে। এ ছাড়া বেসরকারি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের অন্তত ২৩১টি ময়লা ফেলার স্থান আছে। যেসব বর্জ্য সরাসরি নদীতে এসে পড়ছে। এসব বন্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নিতে হবে। তাহলেই বুড়িগঙ্গার পানি দূষণমুক্ত রাখা সম্ভব হবে।
সভায় আরো বক্তব্য দেন- বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব প্রফেশনালসের (বিইউপি) শিক্ষক শরীফ নীর, বাপার নির্বাহী সদস্য ইবনুল সাঈদ রানা, যুব বাপার সদস্যসচিব রাওমান স্মিতা, বনলতা নারী উন্নয়ন সংস্থার নির্বাহী পরিচালক ইশরাত জাহান, নিরাপদ চিকিৎসা চাই–এর মহাসচিব উম্মে সালমা প্রমুখ।
নয়া শতাব্দী/জেআই
মন্তব্য করুন
আমার এলাকার সংবাদ