জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে বাংলাদেশে বন্যা, ঘূর্ণিঝড়, খরা, অতিবৃষ্টি অনাবৃষ্টি, জলোচ্ছ্বাস, নদী ভাঙন এবং মাটিতে লবণাক্ততা বৃদ্ধি পাচ্ছে। বাংলাদেশ বিভিন্নভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধির ফলে ২০৫০ সালের মধ্যে বাংলাদেশের প্রায় ১৭ শতাংশ এলাকা পানিতে তলিয়ে যাবে এবং দেশের ২ কোটি মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়ে পড়বে। তাই বাংলাদেশ সরকারের কাছে অভিযোজন প্রক্রিয়া বাড়ানো, জলবায়ু শরণার্থীদের টেকসই পুনর্বাসন করাসহ বেশ কয়েকটি দাবি জানিয়েছে সেইভ ফিউচার বাংলাদেশ।
শুক্রবার (২৫ মার্চ) জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে আয়োজিত এক জলবায়ু ধর্মঘট থেকে এসব দাবি জানানো হয়।
সংগঠনের অন্যান্য দাবিগুলো হচ্ছে— উপ কূলীয় এলাকায় সুপেয় পানির স্থায়ী সমাধান করা; উপকূল জুড়ে টেকসই ব্লক বাঁধ নির্মাণ করা; উপকূলীয় অঞ্চলের মানুষদের জীবনমান উন্নয়নে পদক্ষেপ নেয়া; পাঠ্যবইয়ে জলবায়ু শিক্ষা যুক্ত করা; পরিবেশের ক্ষতি করে যেসকল প্রকল্প সেগুলো এবং পরিবেশ দূষণকারী কার্যক্রম বন্ধ করা; দেশের পাহাড়-টিলা, বনাঞ্চল, গাছ-পালা বন্যপ্রাণী এবং নদী, জলাশয় সর্বোপরি পরিবেশ, প্রতিবেশ রক্ষা করা ও পুনরুদ্ধারে পদক্ষেপ নেয়া এবং পরিবেশ দূষণ, প্লাস্টিক দূষণ ও বায়ুদূষণ রোধে কার্যকর পদক্ষেপ নেয়া।
এছাড়া বিশ্ব নেতাদের কাছে দাবি জানিয়ে বলা হয়, প্যারিস অ্যাগ্রিমেন্ট বাস্তবায়ন করতে হবে। বৈশ্বিক উচ্চতা ১.৫ ডিগ্রিতে নামিয়ে আনতে হবে। কার্বন নিঃসরণ শূন্যের কোঠায় নামিয়ে আনতে ও জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় দ্রুত পদক্ষেপ নিতে হবে। জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে ক্ষতিগ্রস্ত দেশগুলোকে প্রতিশ্রুত ক্ষতিপূরণ দিতে হবে। জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে বাংলাদেশ সবচেয়ে বেশি ক্ষতিময় দেশ। বাংলাদেশের দিকে বিশেষ নজর দিতে হবে।
ধর্মঘটে বলা হয়, বৈশ্বিক কার্বন নির্গমনের ০.৪৭ শতাংশেরও কম অবদান রাখা সত্ত্বেও ১৬ কোটি মানুষের দেশ বাংলাদেশ জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত এবং জলবায়ু ঝুঁকিতে থাকা দেশগুলোর অন্যতম। বৈশ্বিক উষ্ণায়নের ফলে হিমালয়ের হিমবাহ গলতে থাকায় সমুদ্র পৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধি পাচ্ছে এবং প্রাণঘাতী দুর্যোগের ঝুঁকি আরও বাড়ছে। জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব সারাবিশ্বে দৃশ্যমান। বর্তমানে আমরা মহাসংকটের মধ্যে রয়েছি। জলবায়ু পরিবর্তনের পিছনে উন্নত দেশগুলো সবচেয়ে বেশি দায়ী। বিশ্ব নেতারা জরুরিভাবে জলবায়ু পদক্ষেপ না নিয়ে সময় অপচয় করে; জলবায়ু সংকট দীর্ঘ করছে। তারা প্রতিশ্রুতি দিচ্ছেন, কিন্তু তা হলো ফাঁকা প্রতিশ্রুতি।
ধর্মঘটে উপস্থিত ছিলেন, সেইভ ফিউচার বাংলাদেশের প্রধান সমন্বয়ক নয়ন সরকার, স্টামফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের চেয়ারম্যান ড. আহমেদ কামরুজ্জামান মজুমদার।
নয়া শতাব্দী/জেআই
মন্তব্য করুন
আমার এলাকার সংবাদ