বারী সিদ্দিকী মারা গেছেন আজ পাঁচ বছর। বাঙালি পাঁচ বছর হলো গুণী এই শিল্পীকে হারিয়েছে। কিন্তু তিনি রয়ে গেছেন কোটি বাঙালির হৃদয়পুরে। কোটি কণ্ঠ গায় তার গান। নাগরিক জীবন থেকে শুরু করে কৃষক-জেলের মননে বেজে ওঠে প্রিয় বারীর গান। এক ‘শুয়াচান পাখি আমি ডাকিতাছি তুমি ঘুমাইছ নাকি’ গানের জনকের কি আর মৃত্যু হতে পারে? তিনি সব সময় রয়ে যাবেন বিস্তৃত বাংলার পথে-প্রান্তরে। তার বাঁশির সুর শুনে প্রজন্ম থেকে প্রজন্ম বলে উঠবেন’ আমাদের একজন বারী সিদ্দিকী ছিলেন’।
প্রখ্যাত সংগীতশিল্পী ও বাঁশিবাদক আবদুল বারী সিদ্দিকীর পঞ্চম মৃত্যুবার্ষিকী আজ। ২০১৭ সালের আজকের এই দিনে রাজধানীর একটি হাসপাতালে ৬৩ বছর বয়সে মারা যান তিনি। বরেণ্য এই সংগীতশিল্পী লোকসংগীত ও আধ্যাত্মিক ধারার গানের মাধ্যমে মানুষের হৃদয় জয় করেন।
১৯৫৪ সালের ১৫ নভেম্বর নেত্রকোনায় জন্মগ্রহণ করেন বারী সিদ্দিকী। মাত্র ১২ বছর বয়সে ওস্তাদ গোপাল দত্তের কাছে সংগীতের তালিম শুরু হয় তার। পরে ওস্তাদ আমিনুর রহমান, দবির খান, পান্নালাল ঘোষসহ অসংখ্য গুণী শিল্পীর সান্নিধ্য লাভ করেন তিনি। ভারতেও গানের তালিম নিয়েছেন এই গুণী শিল্পী। পরে বাঁশির ওপর উচ্চাঙ্গসংগীতে প্রশিক্ষণ নেন তিনি।
১৯৯৫ সালে কথাসাহিত্যিক ও নির্মাতা হুমায়ূন আহমেদের ‘রঙের বাড়ই’ নামের একটি ম্যাগাজিন অনুষ্ঠানে প্রথম সংগীত পরিবেশন করেন বারী সিদ্দিকী। হুমায়ূন আহমেদের ‘শ্রাবণ মেঘের দিন’ চলচ্চিত্রে ছয়টি গান গেয়ে পান জনপ্রিয়তা। এরপর আরও কিছু চলচ্চিত্রে প্লেব্যাক করেছেন তিনি। চলচ্চিত্রের গানে আকাশছোঁয়া জনপ্রিয়তা পাওয়ার পরপরই বাজারে আসে তার দুটি একক অ্যালবাম।
বারী সিদ্দিকীর জনপ্রিয় হওয়া গানগুলোর মধ্যে রয়েছে ‘শুয়াচান পাখি আমি ডাকিতাছি তুমি ঘুমাইছ নাকি’, ‘পুবালি বাতাসে’, ‘আমার গায়ে যত দুঃখ সয়’, ‘ওলো ভাবিজান নাও বাওয়া’, ‘মানুষ ধরো মানুষ ভজো’ ইত্যাদি।
১৯৯৯ সালে জেনেভায় অনুষ্ঠিত বিশ্ব বাঁশি সম্মেলনে ভারতীয় উপমহাদেশ থেকে একমাত্র প্রতিনিধি হিসেবে তিনি অংশগ্রহণ করেন। তিনি প্রবাস প্রজন্ম জাপান সম্মাননা (২০১৪), সিটিসেল-চ্যানেল আই মিউজিক অ্যাওয়ার্ডস অর্জন করেন।
নয়া শতাব্দী/আরআর
মন্তব্য করুন
আমার এলাকার সংবাদ