ঢাকা, শুক্রবার, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৫ আশ্বিন ১৪৩১, ১৬ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬

মুক্তি পাচ্ছে দুই চলচ্চিত্র

প্রকাশনার সময়: ০৪ নভেম্বর ২০২২, ০৯:৩৮

প্রচলিত প্রেম এবং অ্যাকশনধর্মী গল্পের বাইরেও বেশ ভালো চলচ্চিত্র নির্মাণ করা হয়। কিন্তু জীবন সংগ্রামের গল্পে নির্মিত এসব চলচ্চিত্র বিকল্পধারার অজুহাতসহ নানা কারণে আলোচনায় আসে না। পরিচালক, প্রযোজক বা সংশ্লিষ্ট শিল্পীরাও ঠিক সেভাবে মূল্যায়ন পান না। অতি সম্প্রতি তেমনি ব্যতিক্রমী দুটি চলচ্চিত্র নিয়ে বেশ আলোচনা চলছে। তার মধ্যে একটি ‘কুড়া পক্ষীর শূন্যে উড়া’ এবং অন্যটি ‘সাঁতাও’। এরইমধ্যে চলচ্চিত্রটি দুটির ট্রেলার মুক্তির বেশ প্রশংসা পাচ্ছে। তারপরেও চলচ্চিত্র দুটি দর্শকদের কাছে পৌঁছা নিয়ে নানা শঙ্কা তৈরি হয়েছে। জানা গেছে, আজ শুক্রবার রাজধানীর স্টার সিনেপ্লেক্সে মুক্তি পাচ্ছে ‘কুড়া পক্ষীর শূন্যে উড়া’। অন্যদিকে ‘সাঁতাও’ চলচ্চিত্রটি আগামী বছরে ২৭ জানুয়ারি মুক্তি পাবে।

‘কুড়া পক্ষীর শূন্যে উড়া’: দেশের হাওরাঞ্চলের শ্রমজীবী মানুষের জীবন সংগ্রামের গল্প নিয়ে নির্মাণ করা হয়েছে চলচ্চিত্র ‘কুড়া পক্ষীর শূন্যে উড়া’। মুহাম্মদ কাইউম পরিচালিত চলচ্চিত্রের প্রধান দুই চরিত্রের অভিনয় করেছেন জয়িতা মহলানবীশ ও উজ্জ্বল কবির হিমু। এছাড়াও গুরুত্বপূর্ণ অভিনয় করেছেন আবুল কালাম আজাদ, সুমী ইসলাম, সামিয়া আকতার বৃষ্টি, বাদল শহীদ, মাহমুদ আলমসহ অনেকে। ‘কুড়া পক্ষীর শূন্যে উড়া’ চলচ্চিত্রটি আজ একটি প্রেক্ষগৃহে চলচ্চিত্র পরীক্ষামূলক মুক্তি পাচ্ছে। পরিচালক মুহাম্মদ কাইউম বলেন, ‘যারা দেখাবে, থিয়েটার বা হলমালিকদের যে ধরনের মানসিকতা; তারা একটু অন্য ধরনের কাজ হলে মনে করে সেইটা ব্যবসা সফল হবে না, এটা তারা দেখাতে ইন্টারেস্টেড না। আমরা চেষ্টা করছি দেখা যাক কী করা যায়। অচিরেই হয়তো হবে, অল্প কিছু প্রেক্ষাগৃহে হলেও হবে।’ জানা গেছে, দেশের বৃহত্তর হাওরাঞ্চল সুনামগঞ্জে ‘কুড়া পক্ষীর শূন্যে উড়া’ চলচ্চিত্রের পুরোটা চিত্রায়ন হয়েছে। রাজধানীর পান্থপথের স্টার সিনেপ্লেক্সে আজ থেকে আগামী ১০ নভেম্বর পর্যন্ত প্রতিদিন সকাল ১১টা এবং বিকেল ৪.৩০মিনিট দুটি করে ‘কুড়া পক্ষীর শূন্যে উড়া’ চলচ্চিত্রটি প্রদর্শিত হবে।

‘সাঁতাও’: গণঅর্থায়নে নির্মিত ‘সাঁতাও’ চলচ্চিত্রের ট্রেলার প্রকাশের পর থেকেই প্রশংসায় ভাসছে। চলচ্চিত্রটি নির্মাণ করেছেন খন্দকার সুমন। আইডিয়া এক্সচেঞ্জের ব্যানারে চলচ্চিত্রটি প্রযোজনা করেছেন শরিফ উল আনোয়ার সজ্জন। পরিচালনার পাশাপাশি কাহিনী, চিত্রনাট্য ও সংলাপ লিখেছেন খন্দকার সুমন। আগামী ২৭ জানুয়ারি চলচ্চিত্রটি মুক্তি পাবে। চলচ্চিত্রের প্রধান চরিত্রে অভিনয় করেছেন আইনুন পুতুল ও ফজলুল হক। আরও অভিনয় করেছেন মো. সালাউদ্দিন, সাবেরা ইয়াসমিন, স্বাক্ষ্য শাহীদ, শ্রাবণী দাস রিমি, তাসমিতা শিমু, মিতু সরকার, ফারুক শিয়ার চিনু, আফ্রিনা বুলবুল, রুবল লোদী, কামরুজ্জামান রাব্বী, আব্দুল আজিজ মন্ডল, বিধান রায়, জুলফিকার চঞ্চল, বিনয় প্রসাদ গুপ্ত, সুপিন বর্মণ, রেফাত হাসান সৈকত, আব্দুল্লাহ আল সেন্টু, আলমগীর কবীর বাদল, রবি দেওয়ান, দীনবন্ধু পাল, হামিদ সরকার, মো. হানিফ রানা, আকতার হোসেন, আজিজুল হাকিম শিউস, সাইফুল ইসলাম লিটন, রাসেল তোকদার, মজনু সরকার, আবু কালাম, সিদ্দীক আলী, সুজন মাহমুদ, তাহসিনা আকতার তন্বী, নিশাত তাহিয়াত মিমন এবং তিস্তাবাজার এলাকাবাসী। চলচ্চিত্রটির সম্পাদনা, রং-বিন্যাস, এফেক্ট ও টাইটেল, সাউন্ড ডিজাইন ও সাউন্ড মিক্সিং করেছেন সুজন মাহমুদ। শব্দ গ্রহণে ছিলেন নাহিদ মাসুদ। চিত্রগ্রহণ সজল হোসেন, ইহতেশাম আহমদ টিংকু ও খন্দকার সুমন। আবহসংগীত করেছেন মাহমুদ হায়াৎ অর্পণ। চলচ্চিত্রের গানে কণ্ঠ দিয়েছেন কামরুজ্জামান রাব্বী, লায়লা তাজনূর সাউদী, লিমা হক। শিল্প নির্দেশনা দিয়েছেন রবি দেওয়ান। পোশাক পরিকল্পনায় আফ্রিনা বুলবুল। নৃত্য পরিচালনা করেছেন ফাহিম রায়হান। রূপসজ্জা করেছেন ফরহাদ রেজা মিলন ও পোস্টার ডিজাইন করেছেন সাজ্জাদুল ইসলাম সায়েম।

‘সাঁতাও’ চলচ্চিত্রের গল্পে দেখা যাবে, গ্রামের কৃষক ফজলু বিয়ের পর বুঝতে পারে নতুন সংসারে পুতুল একাকিত্ব অনুভব করছে। পুতুলের একাকিত্ব দূর করতে ফজলু একটি গাভী কিনে আনে। পুতুল তার সংসারে নতুন সঙ্গী পেয়ে বাবার বাড়ি ছেড়ে আসার কষ্টগুলো কিছুটা ভুলতে শুরু করে। এই দিকে নদীর উজানে একের পর এক বাঁধের কারণে ভাটি অঞ্চল শুকিয়ে যাচ্ছে। এমন প্রতিকূল পরিবেশে ফজলুর মত কৃষকদের কৃষি কাজে নানা সমস্যা সম্মুখীন হতে হয়। অবিরাম বৃষ্টিপাত আর উজানের ঢল এসে উপচে না পড়া পর্যন্ত বাঁধগুলোর দরজা বন্ধ রাখা হয়। আবার বাঁধের দরজাগুলো খুলে দিলে আটকে থাকা বিশাল জলধারা নদীতে প্রবাহিত হতে শুরু করে। নদীর গভীরতা কম থাকায় হঠাৎ প্রবাহিত জলধারা নিম্নাঞ্চলে প্লাবিত হয়ে পশু-পাখিসহ জনজীবনে অভিশাপ বয়ে আনে। নদীর এমন বিরূপ আচরণে ফজলু এবং পুতুলের সুখী সংসার বিষাদময় হয়ে ওঠে। নির্মাতা সুমন বলেন, চলচ্চিত্র মুক্তির ক্যাম্পেইনের কোনো টাকা আমার হাতে ছিল না। পরিকল্পনা করলাম ‘সাঁতাও’-র স্মারক টি-শার্ট শুভেচ্ছা মূল্য ধরে বিক্রয় করব। কাছের মানুষেরা বলল কেবল ফ্রি দিলে মানুষ টি-শার্ট পরবে। শুভেচ্ছা মূল্য দিয়ে কেউ পরবে না। আমি তাদের বলেছিলাম আমি কেবল মানুষের উপরেই বিশ্বাস রাখি। এরপর তিনি পাঁচ হাজার টাকা পুঁজি নিয়ে কিছু টি-শার্ট বানাবেন। শুরুতে চলচ্চিত্রের টিমের সদস্যদের এর মডেল বানালেন। আর সে ছবিগুলো যখন আস্তে আস্তে ফেসবুকে আপলোড হতে থাকল তখন মানুষের মধ্যে সাড়া পড়ল। সুমনের ভাষায়, ‘আমার মানুষের প্রতি বিশ্বাস মিথ্যে প্রমাণিত হয়নি। এখন পর্যন্ত চারশ’ টি-শার্ট বিভিন্ন জন আমাদের কাছ থেকে নিয়েছেন তিনশ’ টাকা মূল্যে। সেগুলো থেকে অর্জিত অর্থে আমরা ছবির নয়টি প্রমোশনাল ভিডিও শুটিং করেছি।

নয়া শতাব্দী ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

এ সম্পর্কিত আরো খবর
  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

আমার এলাকার সংবাদ