ঈদুল আজহা উপলক্ষে মুক্তি পেয়েছে তিনটি সিনেমা। এগুলো হলো ‘দিন দ্য ডে’, ‘পরান’ ও ‘সাইকো’। ঈদের প্রথম দিনে প্রেক্ষাগৃহে খুব একটা দর্শক উপস্থিতি ছিল না। তবে দ্বিতীয় দিন থেকে ধীরে ধীরে দর্শকের সংখ্যা বাড়ছে; যা কিনা হল মালিক ও চলচ্চিত্র সংশ্লিষ্টদের মধ্যে কিছুটা আশা জিইয়ে রেখেছে। হল কর্তৃপক্ষরা আশা করছেন দিন দিন এই সংখ্যা আরো বাড়বে।
এবার ঈদে ১০৯টি প্রেক্ষাগৃহ মুক্তি পেয়েছে অনন্ত জলিল প্রযোজিত ও অভিনীত ‘দিন দ্য ডে’। ২৪টি প্রেক্ষাগৃহে অনন্য মামুন পরিচালিত ‘সাইকো’, আর রায়হান রাফির ‘পরান’ পেয়েছে মাত্র ১১টি প্রেক্ষাগৃহ। তবে সবচেয়ে বেশি আলোচনা হচ্ছে ‘পরান’ সিনেমাটি নিয়েই। প্রেক্ষাগৃহ থেকে বের হয়ে দর্শকরা প্রশংসা করছে সিনেমাটির।
ঈদের ছবি প্রসঙ্গে স্টার সিনেপ্লেক্সের জ্যেষ্ঠ বিপণন কর্মকর্তা মেজবাহউদ্দিন বলেন, ‘ঈদের পরদিন থেকে মুক্তি পাওয়া তিনটি ছবিরই দর্শক বেড়েছে। এর মধ্যে ‘পরান’ সিনেমাটি দেখার জন্য দর্শকের আগ্রহ বেশি দেখা যাচ্ছে। তবে এবার শাকিব খানের সিনেমা ছাড়া তাকে ঈদ পরিপূর্ণ মনে হচ্ছে না।’
রাজধানীর মধুমিতা সিনেমা হলে চলছে অনন্ত জলিলের ‘দিন দ্য ডে’ সিনেমা। হলের ম্যানেজার কার্তিক বাবু বলেন, ‘প্রথম দিনের তুলনায় দর্শক বাড়ছে। তবে ঈদের ছবি হিসেবে আমরা আরো বেশি প্রত্যাশা করেছিলাম।’
‘দিন দ্য ডে’ সিনেমাটি দেখে হৃদয় আহমেদ নামের একজন দর্শক লিখেছেন, ‘ট্রেলারে যা দেখেছেন গল্পও তাই, নতুন কিছু নেই সিনেমায়। বাংলাদেশের পুলিশের সোয়াট ডিপার্টমেন্টের একজন কমান্ডো হচ্ছেন অনন্ত জলিল, এমনকি তার স্ত্রী বর্ষা যিনি সিনেমাতেও অনন্তর স্ত্রী চরিত্রে অভিনয় করেছেন তিনিও একই ডিপার্টমেন্টে আছেন। মূলত গল্পে দেখানো হয়, কাজ খুঁজতে মানুষ মধ্যপ্রাচ্যে যেতে দালাল চক্রের দ্বারস্থ হয়, কিন্তু তাদেরকে লোভ দেখিয়ে পাচার করে আফগানিস্তানে পাঠানো হয়; যেখানে বাংলাদেশের অনেক মানুষকেও জিম্মি রাখা হয়। তারপর তাদের দিয়ে নানানভাবে ড্রাগ পাচার করা হয়। মূলত তাদের রক্ষা করার জন্যই অনন্তকে বাংলাদেশ তুরস্কে পাঠায়। আর তুরস্ক থেকে ইরান, তারপর আফগানিস্তান। কীভাবে অনন্ত তাদের রক্ষা করে এবং একটা সময় অনন্তকে রক্ষা করতে কীভাবে তার স্ত্রী বর্ষাও তার কাছে ছুটে যায় সেটা নিয়েই গল্প! অনেকটা ‘টাইগার জিন্দা হ্যায়’ সিনেমার প্লট মেরে দিয়েছে!’
তিনি আরো লিখেন, ‘দিন দ্য ডে’র গল্প লিখেছেন অনন্ত জলিল নিজে, এমনকি ডায়ালগেও তিনি কাটাছেঁড়া করেছেন। গল্পে কিছুই নেই সত্যি বলতে। এত বড় একটা সিনেমার জন্য একদম দুর্বল একটা গল্পকে বাছাই করা হয়েছে। সিনেমাটা সবচেয়ে বড়সড় ধাক্কা খেয়েছে এখানে। গল্প খারাপ হলেও দেখা যায়, চিত্রনাট্য অনেক সিনেমায় ভালো হয়, তবে এখানে সমস্যা চিত্রনাট্যেও। খুব বাজেভাবে চিত্রনাট্য সাজানো হয়েছে। মানে কোনো থ্রিল নেই, মিস্ট্রি নেই! আপনি যে পরের দৃশ্যের জন্য অপেক্ষা করবেন তেমন কোনো জায়গাও নেই।’
ময়মনসিংহের পূরবী সিনেমা হলে চলছে ‘পরান’। সেখানে ঈদের দ্বিতীয় দিন সিনেমাটি দর্শকদের সঙ্গে উপভোগ করেছেন বিদ্যা সিনহা মীম, শরিফুল রাজ ও ইয়াশ রোহান। জানা গেছে, সেখানে দর্শকের ঢল নেমেছিল। তা দেখে ব্যাপক উচ্ছ্বসিত মীম। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এই অভিনেত্রী লিখেছেন, ‘সেই সকালে বেরিয়েছিলাম ময়মনসিংহের উদ্দেশে। একটু আগে বাসায় ফিরলাম। ক্লান্ত-বিধ্বস্ত, তবুও লিখছি। এই যে হলে হলে ঘুরলাম, হলভর্তি দর্শক দেখে কী আনন্দই না পেয়েছি! আপনাদের এমন সাড়া পেয়ে আমরা আপ্লুত। একজন হল মালিক যখন বলেন, অনেক বছর পর এমন হাউসফুল হলো তাদের সিনেমা হল, তখন মনে প্রশান্তি কাজ করে।’
মীম আরো যোগ করেছেন, ‘দর্শকরা যখন ‘অনন্যা’ ক্যারেক্টারটাকে গালমন্দ করছে, তখনো অন্যরকম ভালো লাগা কাজ করেছে। একজন অভিনয়শিল্পী তো তার অভিনয়ের এমন স্বীকৃতিই চায়! অনেক ধন্যবাদ আপনাদের। কৃতজ্ঞতা।’
খুলনার চিত্রালি সিনেমা হলে চলছে ‘সাইকো’। সেখানেও প্রথম দিনের পর দর্শক বাড়ছে। এমনটাই ভাষ্য হল কর্তৃপক্ষের।
নয়া শতাব্দী/এসএম
মন্তব্য করুন
আমার এলাকার সংবাদ