পর্নো ছবিতে কাজ করতে এসে এখন আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছে একটাই নাম, ইয়াসমিনা আলি। সংবাদ মাধ্যমের সঙ্গে কথা বলতে গিয়ে এই আফগানি তরুণী যেসব কথা বলেছেন তার জন্যই চর্চায় ইয়াসমিনা৷ ওই সংবাদ মাধ্যমে প্রকাশিত তার বক্তব্য অনুযায়ী, যুদ্ধবিধ্বস্ত আফগানিস্তানে তাঁর জন্ম৷ সেসময় দেশের বেশিরভাগ স্থানেই তালিবানি সন্ত্রাস কায়েম ছিল৷ যদিও পরে তিনি ৯ বছর বয়সে ব্রিটেনে চলে আসেন৷ বর্তমানে ইয়াসমিনা পর্নো ছবির দুনিয়ায় খুবই পরিচিত এক নাম৷
ইসলাম ধর্মকে কটাক্ষ করে ইয়াসমিনা জানান, ইসলাম এবং তার কালো অধ্যায়ের বিষয়ে তিনি অনেক কিছু জানেন৷ পোশাকের ওপর কড়াকড়ি রয়েছে, নিয়ম ভঙ্গ করলে শারীরিক দণ্ডও দেওয়া হয়৷ জোর করে বিয়ে দেওয়া হয়৷ সবথেকে খারাপ পরিস্থিতিতে ইসলামের ভূমিকা নিয়েও মুখ খুলেছেন তিনি৷ ইয়াসমিন আলি জানান, তাঁর বাবা-মা তাকে জানিয়েছেন, যে কোনও কিছুর থেকে গুরুত্বপূর্ণ ইসলাম৷ এমনকি মা-বাবা এবং সন্তানের মধ্যে ভালোবাসার থেকেও তার মূল্য অনেক বেশি৷ এই ধর্ম অনুযায়ী তার বাবা-মা তাকে কি পোষাক পরা উচিত সেই নির্দেশ দিতেন৷ আলি জানান, নরকে যাওয়ার ভয়ের মধ্যেই বড় হয়েছেন তিনি৷
প্রতিটি আধুনিক বিষয়কে ঘৃণার চোখে দেখতে শিখিয়েছে তার অভিভাবক এমনটাই বলেন তিনি৷ সভ্য এবং ধর্মনিরপেক্ষ পরিস্থিতিকেও ঘৃণার চোখে দেখাতে শেখান৷ আর তার এই বক্তব্য ইতিমধ্যেই তাকে সংবাদ শিরোনামে তুলে এনেছে।
ইয়াসমিন শেষ পর্যন্ত আফগানিস্তান থেকে পালিয়ে যেতে সক্ষম হন। আফগানিস্তানে তালেবানের নিয়ন্ত্রণ পুনঃপ্রতিষ্ঠিত হলে তিনি পড়াশোনার জন্য যুক্তরাজ্যে চলে যান। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে ইয়াসমিনা একজন শক্তিশালী ও আত্মবিশ্বাসী নারী হয়ে উঠেন এবং তিনি তার নিজের শর্তে জীবনকে এগিয়ে নিতে শুরু করেন।
ইয়াসমিনা আলী পর্নোগ্রাফির জগতে প্রবেশ করেন এবং দ্রুত সেই জগতে শীর্ষ পারফর্মার হয়ে ওঠেন। তিনি নিজেকে নারীবাদী কর্মী এবং একমাত্র আফগান পর্নোস্টার বলে মনে করেন। তার মতে, তালেবানরা তার সম্পর্কে সব কিছু জানে এবং তার ওয়েবসাইট থেকে তথ্য নিয়ে তাকে। ইয়াসমিনা এটাও মনে করেন, তালেবানরা নানা কারণেই তাকে ঘৃণা করে। স্পেক্টেটর ওয়ার্ল্ড নামের একটি সাময়িকীতে একটি নিবন্ধে লিখেছেন ইয়াসমিনা আলী। তিনি লেখেন, মানুষকে দমিয়ে রাখার ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সব মতাদর্শের বিরুদ্ধে তিনি কথা বলেন।
তিনি লেখেন, আমি যেভাবে এটি (পর্নোগ্রাফি) দেখি, আমি এখানে মুক্ত শ্বাস নিতে পারি এবং আমার আমার জীবনকে পূর্ণভাবে উপভোগ করতে পারি’। ইয়াসমিনা জানান, তার জীবনযাপন নিয়ে অন্যরা কি মনে করলো, তা তিনি পাত্তা দেন না। কেউ যদি তাকে ঈর্ষা করে, তাহলে তারা মনে করে তাদের চাইতে সে বেশি আনন্দে আছে। ইয়াসমিনা দাবি করেন, কিছু লোক তার জীবনযাপনের একমত নাও হতে পারে, তবে তিনি তার পেশাকে উপভোগ করেন। নিজ মাতৃভূমি ছেড়ে আসা নিয়েও তার কোন অনুশোচনা নেই।
তিনি আরো বলেছিলেন, পর্নোগ্রাফিক জগতে প্রবেশ করা একটি কঠিন সিদ্ধান্ত ছিল, তবে তিনি খুশি যে তিনি এটি করতে পেরেছেন এবং নিজেকে প্রমাণ করতে পেরেছেন।
নয়া শতাব্দী/এমএইচআর
মন্তব্য করুন
আমার এলাকার সংবাদ