আর্থিক অনিয়ম, দুর্নীতি, অর্থ আত্মসাৎ ও সাংগঠনিক স্বেচ্ছাচারিতার দায়ে বাংলাদেশ গ্রুপ থিয়েটার ফেডারেশনের সেক্রেটারি জেনারেল কামাল বায়েজিদ এবং সম্পাদক (অর্থ) রফিকুল্লাহ সেলিমকে দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেয়া হয়েছে।
শনিবার সকালে ফেডারেশনের কার্যনির্বাহী কমিটির এক জরুরি সভায় এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয় এবং সম্পাদক (প্রচার) মাসুদ আলম বাবু স্বাক্ষরিত বাংলাদেশ গ্রুপ থিয়েটার ফেডারেশনের এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে এ তথ্য জানানো হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়- বিগত তিন বছরের ব্যয় হওয়া ১,২৪,৫১,৩৭৩.০০ (এক কোটি চব্বিশ লক্ষ একান্ন হাজার তিনশত তিয়াত্তর) টাকার হিসাব দিতে না পারায় ও সংগঠনের ব্যাংক একাউন্ট থেকে কেন্দ্রীয় পরিষদকে অবহিত না করে ২০১৯ সালের ২৯ আগস্ট ৬৮০৬০৮২ নং চেকের মাধ্যমে জনতা ব্যাংক লিমিটেড থেকে সেক্রেটারী জেনারেল কামাল বায়েজীদ নিজের একাউন্টে সংগঠনের টাকা ট্রান্সফার করেন। বিগত তিন বছর যাবত সেক্রেটারী জেনারেল একক সিদ্ধান্তে ফেডারেশনকে পরিচালিত করার অপচেষ্টায় লিপ্ত ছিলেন। এমনকি সংগঠনের গঠনতন্ত্রের শব্দ ধারা-উপধারা নিজের মতো পরিবর্তন করে সকল সদস্য সংগঠনের নিকট প্রেরণ করার মতো ধৃষ্ঠতাপূর্ণ অমার্জনীয় অপরাধ করেন। সংগঠনের গঠনতন্ত্র বিরোধী কার্যক্রমের মাধ্যমে ৪০ বছরের সংগঠনকে ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে নিয়ে গেছেন। কেন্দ্রীয় পরিষদ ও নির্বাহী পরিষদের গৃহীত সিদ্ধান্তের বাস্তবায়ন না করে তার নিজের মত করে সংগঠনকে পরিচালিত করার অপচেষ্টায় লিপ্ত ছিলেন। তার স্বৈরাচারী ও একনায়কতান্ত্রিক মনোভাবের কারণে সংগঠনের স্বাভাবিক কার্যক্রম ব্যহত হয়। তারই পরিপ্রেক্ষিতে কেন্দ্রীয় পরিষদের ৪১জন সদস্যের লিখিত ২৯টি অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে, ২২ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত কেন্দ্রীয় পরিষদ সভায় উপস্থিত ৪০জন সদস্যের সকলের সর্বসম্মতিক্রমে কামাল বায়েজীদকে সেক্রেটারি জেনারেলের দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি প্রদান করা হয়। একই সঙ্গে সিদ্ধান্ত গৃহীত হয় যে, সে ভবিষ্যতে আর কখনোই বাংলাদেশ গ্রুপ থিয়েটার ফেডারেশনে কোনো দলের হয়ে প্রতিনিধিত্ব করতে পারবেন না। এরপর থেকে এসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারী জেনারেল চন্দন রেজা সেক্রেটারী জেনালের দায়িত্ব পালন করবেন এবং সম্পাদক (অর্থ) এর দায়িত্ব পালন করবেন সম্পাদক (আন্তর্জাতিক) ড. চঞ্চল সৈকত।
ফেডারেশনের বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয় বিগত ২০২১ সালের ২৩ অক্টোবর কেন্দ্রীয় পরিষদের সভায় আর্থিক অনিয়ম, দুর্নীতি ও অর্থ আত্মসাতের দায়ে সম্পাদক (অর্থ) রফিক উল্লাহ্ সেলিম’কে তার দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দিয়ে ৩০ দিনের সময় বেধে দেয়া হয় কেন্দ্রীয় পরিষদকে অর্থের যাবতীয় হিসাব বুঝিয়ে দেয়ার জন্য। কিন্তু তিনি উক্ত হিসাব বুঝিয়ে না দেয়ার পরিপ্রেক্ষিতে আজকের কেন্দ্রীয় পরিষদ সভায় সর্বসম্মতিক্রমে রফিক উল্লাহ্ সেলিমের দলের সদস্যপদও বাতিল করা হয়। গত বছরের মার্চ মাস থেকে কেন্দ্রীয় পরিষদ কর্তৃক গঠিত উপ-কমিটি উক্ত দুইজন সম্পাদকের কাছে সমস্ত আয়-ব্যয়ের হিসাব চেয়ে আসছিল। কিন্তু তারা নানা অজুহাতে হিসাব দিতে গড়িমসি করে এবং চূড়ান্তভাবে অর্থের হিসাব দিতে ব্যর্থ হয়। তারই পরিপ্রেক্ষিতে এই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে কেন্দ্রীয় পরিষদ বাধ্য হয় বলে সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়।
নয়া শতাব্দী/এম
মন্তব্য করুন
আমার এলাকার সংবাদ