১৯৮১ সালের এই দিনে চট্টগ্রামের ফটিকছড়িতে জন্ম নেয়া ‘পূর্ণিমা’র পুরো নাম ‘দিলারা হানিফ রীতা’। ‘পূর্ণিমা’ নামে চলচ্চিত্রে তার আগমন ঘটে ১৯৯৮ সালে জাকির হোসেন রাজু পরিচালিত ‘এই জীবন তোমার আমার’ ছবিতে নায়িকা হিসেবে। প্রথম ছবিতেই নায়ক হিসেবে পেয়েছিলেন সেই সময়ের প্রতিশ্রুতিশীল অভিনেতা রিয়াজকে। সঙ্গে বাংলা চলচ্চিত্রে দুই কিংবদন্তী ফারুক ও ববিতাকে। যদিও প্রথম ছবি বাণিজ্যিক সফলতার মুখ দেখেনি, কিন্তু নায়িকা হিসেবে সকলের মনে স্থান করে নিলেন। এই সিনেমায় রিয়াজ ও পূর্ণিমার লিপে কুমার শানু ও মিতালী মুখার্জির গাওয়া ‘শতবার পৃথিবীতে আসবো আমি তোমাকেই শুধু ভালোবাসবো আমি’ গানটি বেশ জনপ্রিয়তা পায়।
সময়কাল ১৯৯৭- এফডিসির ঝলমলে আলো আর ক্যামেরা সামনে ষোড়শী একটি মেয়ে। মিষ্টি হাসি দিয়ে যাত্রা শুরু করলো চলচ্চিত্রে তার পথচলা। সেই শুরু- আজ অবধি আলো ছড়িয়ে তিনি বাংলা চলচ্চিত্রের ইতিহাসে অন্যতম সেরা সুন্দরী নায়িকা- ‘পূর্ণিমা’। আজ (১১ জুলাই) তার জন্মদিন।
‘পূর্ণিমা’ নায়িকা হিসেবে তুমুল জনপ্রিয়তা লাভ করেন ২০০৩ সালে মতিউর রহমান পানুর যৌথ প্রযোজনায় ‘মনের মাঝে তুমি’ ছবিতে। এরপর ২০০৬ সালে নির্মাতা এস এ হক অলিকের ‘হৃদয়ের কথা’ দিয়ে সৃষ্টি হল বাংলা ছবির ইতিহাস। দুটি ছবিরই শ্রুতিমধুর গানে তার অভিনয় মন জয় করলো সিনেমা প্রেমীদের। রিয়াজের সঙ্গে তার জুটি পরিনত হলো বাংলা চলচ্চিত্রের অন্যতম জনপ্রিয় রোমান্টিক জুটি।
নায়িকা পূর্ণিমার জন্মদিন আজ
বাংলা চলচ্চিত্রে দুই যুগ ধরে তার অভিনয় ক্যারিয়ারে দর্শকদের উপহার দিয়েছেন একের পর এক নন্দিত ও প্রশংসিত ছবি। ২০১০ সালে কাজী হায়াৎ পরিচালিত ‘ওরা আমাকে ভাল হতে দিলো না’ ছবির জন্য সেরা অভিনেত্রী হিসেবে পেয়েছেন ‘জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার’। এছাড়াও তার পুরস্কারের ঝুলিতে রয়েছে বাচসাস পুরস্কার, মেরিল প্রথম আলো পুরস্কার সহ অজস্র সম্মাননা।
আজকের জন্মদিন নিয়ে বিশেষ কোন আয়োজন নেই পূর্ণিমার। করোনা’র এই ক্রান্তিকালে পরিবারের সাথেই সময় কাটবে তার। আগামী ঈদে পূর্ণিমা’কে কোন নাটকে অভিনয়েও দেখা যাচ্ছেনা। তবে এরইমধ্যে তিনি প্রায় শেষ করেছেন দু’টি সিনেমার কাজ। একটি ওবায়দুল কাদেরের সাহিত্য অবলম্বনে ‘গাঙচিল’ এবং অন্যটি ‘জ্যাম’। তবে সিনেমা দু’টি কবে নাগাদ মুক্তি পেতে পারে এখনো নিশ্চিত নয়। কারণ করোনার কারণে বিশেষত বাংলাদেশের মানুষের জীবন এখন বিপর্যস্ত।
ব্যক্তিজীবনে ঘর বেঁধেছেন চট্টগ্রামের ছেলে আহমেদ জামাল ফাহাদের সঙ্গে। ২০০৭ সালের ৪ নভেম্বর পারিবারিকভাবে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন তারা। তাদের সংসারে রয়েছে একটি কন্যা সন্তান- ‘আরশিয়া উমাইজা’। ধীরে ধীরে চলচ্চিত্র থেকে অনেকটা অনিয়মিত হলেও ব্যক্তিজীবন ও চলচ্চিত্রজীবন দুই মাধ্যমেই নিজেকে বর্ণিল করে রেখেছেন তিনি। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম দিয়ে ভক্তদের সঙ্গে রেখেছেন সুসম্পর্ক- যা তার ভক্তদের কাছে অনেক আনন্দের। তাই হয়ত তার জন্মদিনে ভক্তরা ভালোবেসে লিখেছেন- ‘করোনাকাল উপেক্ষা করে পূর্ণিমা তিথি পড়ে গিয়েছে। রাত্রি, তবু কোথাও অন্ধকার নেই আজ। চারিদিকে পূর্ণিমার আলোর কারুকাজ। আজ যদি কোথাও আঁধার নামে, পূর্ণিমার আলোয় ভেসে যাবে সব। আজ পূর্ণিমা রাতের পূর্ণ চাঁদের মতোই অনিন্দ্য সুন্দর চিত্রনায়িকা পূর্ণিমার জন্মদিন। শুভ জন্মদিন- দুই প্রজন্মের মনে অবিরত মুগ্ধতা ছড়ানো নায়িকা।
নয়া শতাব্দী/এম
মন্তব্য করুন
আমার এলাকার সংবাদ