বিচ্ছেদের প্রায় এক বছর পর সাবেক স্বামী হারুনুর রশীদ অপুর বিরুদ্ধে নির্যাতনের অভিযোগ তুললেন দেশের জনপ্রিয় অভিনেত্রী শবনম ফারিয়া। স্বামীর নির্যাতনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী এলমা চৌধুরী হত্যার ঘটনায় ফারিয়া নিজের নির্যাতিত হওয়ার ঘটনাকে সামনে তুলে আনেন।
গত বুধবার রাতে দেয়া স্ট্যাটাসে ফারিয়া লিখেছিলেন, ‘মৃত মেয়েটার ছবি দেখার পর বার বার আমি দেড়/দুই বছর পিছনে ফিরে যাচ্ছিলাম। মনে পড়ছে, কিভাবে আমি দেবী সিনেমার পুরো প্রোমোশন ভাঙ্গা হাত নিয়ে করেছি। যখন কেউ জানতে চেয়েছে, কি হয়েছে? বলেছিলাম সিঁড়ি থেকে পড়ে ব্যথা পেয়েছি! আমার সাহস ছিল না সবাইকে বলার যে কিভাবে ব্যথা পেয়েছি। কারণ আমি জানতাম এই মানুষটার সাথেই থাকতে হবে, নইলে মানুষ কি বলবে!’
কিন্তু বিচ্ছেদের এত দিন পর কেন নিজের সঙ্গে ঘটে যাওয়া নির্যাতনের বিষয়ে প্রকাশ্যে মুখ খুললেন ফারিয়া। এ বিষয়টি ব্যাখ্যা করে বৃহস্পতিবার আরেকটি ইংরেজি ভাষায় ফেইসবুক পোস্টে ফারিয়া লিখেছেন, ‘আমার মনে হয়, বিষয়টি পরিষ্কার করা দরকার। কারও ভাবমূর্তি নষ্ট করার কিংবা অ্যাটেনশন পাওয়ার কোনো ইচ্ছে আমার ছিল না (যদিও না চাইলেও আমি সব সময় অ্যাটেনশন পেয়ে যাই)। আগের পোস্টটি দেওয়ার মূল কারণ হলো, এই সমাজের প্রতি আঙুল তোলা।’
দুর্বিষহ এই ঘটনা সামনে আনা মোটেই সহজ ছিল না ফারিয়ার কাছে। সে জন্যই এতটা সময় লেগেছে বলে জানান তিনি। ফারিয়া লিখেছেন, ‘এই ঘটনা সামনে আনা মোটেও সহজ ছিল না। যদি হতো, তাহলে আরও আগেই এটা প্রকাশ্যে আনতাম। আমি দেখেছি, কীভাবে মানুষ পরিস্থিতি উল্টে আমার দিকে আঙুল তুলেছে। ঠিক এই কারণেই আমরা অনেক বেশি পারিবারিক নির্যাতন দেখছি। এই সমাজ পুরুষদের বাহবা দেয়, আর নারীকে লজ্জা দিতে পছন্দ করে। যদি তুমি মরে যাও, মানুষের মন খারাপ হবে। কিন্তু যদি তুমি নিজেকে রক্ষা করতে বিবাহবিচ্ছেদ করো, তাহলে ‘‘তুমি খারাপ’’।’
কিন্তু নিজের দাম্পত্যের অভিজ্ঞতা তিক্ত হলেও বিয়ের বিরুদ্ধে কিংবা বিচ্ছেদের পক্ষে নন ফারিয়া। কেউ তাঁর কাছে বিচ্ছেদের ব্যাপারে পরামর্শ চাইলে, তিনি সময় নিয়ে ভেবেচিন্তে সিদ্ধান্ত নিতে বলেন।
ফারিয়া লিখেছেন, ‘বিয়ে একটি অসাধারণ ব্যাপার। আমি বিচ্ছেদকে নিরুৎসাহিত করি। এমনকি আমার কোনো বন্ধু যদি ডিভোর্সের ব্যাপারে বলে, আমি তাদের প্রথমেই বলি, ‘‘সময় নাও’’। কেউ মারা গেলে সমাজের মানুষ কান্না করে। কিন্তু যখন কারও বিবাহবিচ্ছেদ হয়, পুরো ঘটনা জানার আগেই মানুষ ধরে নেয়, এটা নারীর ব্যর্থতা। তারা নারীর দোষ খুঁজতে চেষ্টা করে, তার চারিত্রিক সনদ অব্দি দিয়ে দেয়, আর আমরা সবাই হাসি!’
উল্লেখ্য, ২০১৯ সালের জানুয়ারিতে হারুনুর রশীদ অপুকে বিয়ে করেন ফারিয়া। বিয়ের ঠিক ১ বছর ৯ মাসের মাথায় আনুষ্ঠানিকভাবে বিচ্ছিন্ন হন ফারিয়া ও অপু।
নয়া শতাব্দী/এমআর
মন্তব্য করুন
আমার এলাকার সংবাদ