গত ১২ নভেম্বর প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পেয়েছে বাংলাদেশ কান চলচ্চিত্র উৎসবে প্রথম অফিসিয়াল মনোনয়ন পাওয়া চলচ্চিত্র ‘রেহানা মরিয়ম নূর’। এটি নির্মাণ করেছেন আবদুল্লাহ মোহাম্মদ সাদ। টানা দুই সপ্তাহ ধরে ছবিটি দেশের ১১টি প্রেক্ষাগৃহে চলছে। এ ছবি দেখে অনেকে সোশ্যাল মিডিয়ায় নিজের অভিমত ব্যক্ত করছেন। তবে সাম্প্রতিক সময়ে ‘রেহানা মরিয়ম নূর’ নিয়ে সমালোচনা করেন পরবাসী লেখক তসলিমা নাসরিন। আর তার পোস্টের পাল্টা জবাব দেন সুরকার ও গীতিকার প্রিন্স মাহমুদ। ‘রেহানা মরিয়ম নূর’ প্রসঙ্গে বিতর্কে জড়ানো এই দুজনের কথাগুলো হুবহু তুলে ধরা হলো শতাব্দীর শোবিজ পাঠকদের জন্য।
তসলিমা নাসরিন গত রোববার তার ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে লেখেন, ‘প্রথম কানে গিয়েছে বাংলাদেশের কোনো ছবি, খুব স্বাভাবিক যে, সেই ছবিটি দেখার আগ্রহ খুব হবে আমার। ছবিটি দেখার সৌভাগ্য হলো কাল রাতে। রেহানা মরিয়ম নূর ছবিটির প্রধান চরিত্রে আমার মনে হয়নি আছেন কোনো সৎ বা উদার কোনো মানুষ। প্রথম থেকেই তিনি রগচটা, রুক্ষ, স্বার্থপর, একগুঁয়ে, আত্মকেন্দ্রিক। ধার্মিক রেহানাকে যদি নারীবাদী হিসেবে দেখানোর চেষ্টা হয়ে থাকে, তাহলে ভুল। নারীবাদীদের সংবেদনশীল হতে হয়। যত না সংবেদনশীল তিনি, তার চেয়ে বেশি প্রতিশোধপরায়ণ। তার জন্য কোনো শ্রদ্ধা বা সহানুভূতি জন্মায় না।
ছবিটি ডেনিশ ডগমা ফিল্মের মতো হাত-ক্যামেরায় শুট করা। টানা মিড-শট। বারবারই জনমানবহীন হাসপাতালের একই করিডোর, একই ঘোলা ঘর, একই সংলাপ, একই চেহারা, একই এক্সপ্রেশান। কোনো আউটডোর নেই। কোনো আকাশ-বাতাস নেই। শ্বাস নেয়ার জায়গা নেই।
ছবিটি পূর্ণদৈর্ঘ্যরে না হয়ে কুড়ি-পঁচিশ মিনিটের স্বল্পদৈর্ঘ্যরে হলে ভালো হতো। অথবা ছবি না হয়ে কোনো ডার্ক নাটক হলে ভালো হতো। সিনেমার বড় পর্দায় না দেখিয়ে মঞ্চে দেখালে ঠিক হতো।’
পরবর্তীতে তসলিমা নাসরিনের পোস্টের সমালোচনা করে প্রিন্স মাহমুদ লেখেন, ‘আলোচিত রেহানা মরিয়ম নূর ছবিটি নিয়ে এবার সমালোচনা করেছে লেখিকা তসলিমা নাসরিন। লিখেছে, রেহানাকে তার সংবেদনশীল, সৎ বা উদার কোনো মানুষ মনে হয়নি। হাসব না কাঁদব বুঝতে পারছি না। এই নার্সিসিস্ট বেয়াদব মহিলা তো নিজেই সংবেদনশীল না। ‘আবরার এমনি এমনি মরে গেছে, হত্যা ইচ্ছাকৃত নয়’ বলার পর আমি তাকে দীর্ঘদিন একা থাকার জন্য সে অসুস্থ ও ট্রিটমেন্ট নেয়ার পরামর্শ দিলে সে আমাকে ডিলিট করে। যে নিজের সমালোচনা সহ্য করতে পারে না সে মুক্তমনা, উদার হয় কেমন করে? যে লেখা সামান্য বোঝে সেও জানে যে, তসলিমার লেখা অত্যন্ত নিম্নমানের এবং একটা কবিতা লিখেছি একটু দেখুন না-দেখুন না করে বড় বড় লেখকদের পা চেটে একটা জায়গা করে নিয়েছিল মাত্র। আর ডাক্তার বলে বড় বড় লেখকদের সহযোগী হিসেবে জায়গা পেয়ে যায়। দু’একটা নিম্নমানের বই-টই লিখল। অশিক্ষিত মৌলবাদীরাও হইহই করে উঠল। দেশের বাইরে একটা পার্মানেন্ট ব্যবস্থা হয়ে গেল। ওকে আর পায় কে? আচ্ছা, ও সিনেমার কী বোঝে? বয়সের অতৃপ্তিতে ভুগছে। কিছু বলদ ফ্যান-ট্যান জুটিয়ে সহমত দিদি-সহমত দিদি শুনতে শুনতে দিন দিন আরো অ্যাবনরমাল হয়ে যাচ্ছে। মুক্তমনা শব্দের পেছন মেরে ছেড়েছে ফাজিলটা...
বি.দ্র. পোস্টে কখনো কোনো আজেবাজে শব্দ লিখি না। এখানে যা দু’একটা লিখেছি তা বিভিন্ন বিশিষ্টজনকে নিয়ে তারই লেখা (বুলিং) শব্দগুলোর সমার্থক শব্দমাত্র। সে অধিকাংশ সময় অনর্থক একটা কন্ট্রোভার্সি শুরু করে। মূল পয়েন্ট হলো সে নিজে মুক্তমনা, উদার? মূল পয়েন্ট থেকে সরে গিয়ে লৈঙ্গিক সুবিধা নেয়ার চেষ্টায় কেঁদেকেটে একাকার না হয়ে ভাবেন। সে সারাজীবন বুলিং করে গেছে কেউ কিচ্ছু বলে নাই...।’
নয়া শতাব্দী/জেআই
মন্তব্য করুন
আমার এলাকার সংবাদ