ঢাকা, শুক্রবার, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৫ আশ্বিন ১৪৩১, ১৬ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬
ডিজিটাল কনটেন্ট

রেমিট্যান্স আয়ের নতুন দুয়ার

প্রকাশনার সময়: ০৬ নভেম্বর ২০২১, ০৬:০৯ | আপডেট: ০৬ নভেম্বর ২০২১, ১১:১৪

বিশ্বায়নের এই যুগে গান, নাটক কিংবা সিনেমা কেবলমাত্র দেশের গণ্ডিতেই সীমাবদ্ধ নেই। অনলাইন প্ল্যাটফর্মে যখন তা উন্মুক্ত হয় তখন বিশ্বের যে কোনো প্রান্ত থেকেই যে কেউ প্রিয় শিল্পীর গান শুনতে পারেন কিংবা দেখতে পারেন পছন্দের নাটক কিংবা সিনেমা। এমন ডিজিটাল কনটেন্টের মাধ্যমে দেশের রেমিট্যান্স (বৈদেশিক মুদ্রা) আয়েও নতুন দুয়ার তৈরি হয়েছে। শিল্পীরাও রয়্যালিটি পাচ্ছেন, এদিকে নিয়মিতই আসছে রেমিট্যান্স।

জানা যায়, বছরে নিম্নে ৫ হাজার ডলার থেকে শুরু করে সর্বোচ্চ ১২ হাজার ডলার আয় করে এখন পর্যন্ত ৫০ শিল্পী রেমিট্যান্সে অবদান রাখছেন। পাশাপাশি শীর্ষ ১০টি অডিও প্রযোজনা প্রতিষ্ঠানও বছরে তিন লাখ ডলার আয় করছে। আর তা সম্ভব হচ্ছে কপিরাইটকৃত গানের আইএসআরসি কোডের (ইন্টারন্যাশনাল স্ট্যান্ডার্ড রেকর্ডিং কোড) মাধ্যমে।

কীভাবে রেমিট্যান্স আয় হচ্ছে? এ প্রসঙ্গে বাংলাদেশ কপিরাইট অফিসের রেজিস্ট্রার (যুগ্ম সচিব) জাফর রাজা চৌধুরী প্রয়াত রক আইকন আইয়ুব বাচ্চুর উদাহরণ টেনে বলেন, ‘জেডএইচ স্টুডিওর একজন ভদ্রলোক আইয়ুব বাচ্চুর কাজটি করেছেন। তিনি এবং আইয়ুব বাচ্চুর পরিবারকে নিয়ে আমরা একাধিকবার বৈঠক করে এই কাজটি করেছি। স্বত্বাধিকারী অর্থাৎ আইয়ুব বাচ্চুর পরিবার শঙ্কিত বোধ করছিলেন যে, প্রতিষ্ঠানটির ওপর ট্রাস্ট করা যায় কি না। সে কারণে আমরা দু’পক্ষের মাঝে থেকে তাদের যোগাযোগ করিয়ে দিয়েছি এবং সময়ে-সময়ে কাজের অগ্রগতি সম্পর্কে মনিটর করেছি।

অবশেষে এক বছর পর জেডএইচ স্টুডিও আইয়ুব বাচ্চুর কমপ্লিট একটা ডিজিটাল ওয়েবসাইট করে দেয় এবং সেখানে তার যতগুলো গান রয়েছে, সবগুলো গানেরই আইএসআরসি কোড করে দেয়। এই কোডটি থাকলে একটি গান যতবারই ভিউ হোক না কেন, গানটির এসেট আইডি যার কাছে আছে অটোমেটিক্যালি তার ইনকাম হিসেবে সংযুক্ত হবে। প্রক্রিয়াটি বেশ টেকনিক্যাল। আমি বলব যথেষ্ট অ্যাডভান্স টেকনোলজির একটা বিষয়। এখন কেউ যদি আইয়ুব বাচ্চুর গান কাভারও করেন তবে অসুবিধা নেই, ওই ভিউ থেকে আইয়ুব বাচ্চুর নিজস্ব চ্যানেলের আয় হিসেবে তা যোগ হয়ে যাবে।’

যোগ করে জাফর রাজা চৌধুরী বলেন, ‘আমাদের তো সবার দায়িত্ব নেয়া সম্ভব না। আমরা শুধু আইয়ুব বাচ্চুর বিষয়টি উদাহরণ হিসেবে দেখানোর চেষ্টা করেছি যে, আপনিও যদি আপনার গানটি সংরক্ষণ করেন-এসেট আইডি বা আইএসআরসি কোড তৈরি করে নেন এবং সঠিকভাবে আপনার চ্যানেলটি পরিচালনা করেন তবে এ ক্ষেত্রে আপনিও রয়্যালিটি পেতে পারেন। পাশাপাশি এ থেকে রেমিট্যান্সও আয় হবে।’

প্রসঙ্গত, আইয়ুব বাচ্চুর ওয়েব সাইটের ২৭২টি গান থেকে অর্জিত ৫ হাজার ডলার বা বাংলাদেশি মুদ্রায় ৪ লাখ টাকা রয়্যালিটি সম্প্রতি শিল্পীর পরিবারের কাছে হস্তান্তর করেছে কপিরাইট অফিস। জানা যায়, বিদেশে বসে কেউ যদি দেশের শিল্পীদের গান শোনেন তবে সেখান থেকে রয়্যালিটি অর্জিত হয় বেশি। বিজ্ঞাপনের কারণেই রয়্যালিটির পরিমাণ বেড়ে যায়।

কপিরাইট অফিস জানায়, বর্তমানে তারা বাউল সম্রাট শাহ আবদুল করিমের গানগুলো নিয়ে কাজ করছেন। সম্প্রতি এই শিল্পীর ছেলে শাহ নূর জালাল এসেছিলেন, তার সঙ্গে ওয়েব সাইট তৈরি করার বিষয়ে আলাপ হয়েছে।

জানা গেছে, বেশ কয়েক বছর ধরে আবদুল কুদ্দুস বয়াতি, শেখ সাদী খান, প্রিন্স মাহমুদ, জেমস, মনির খান, এসডি রুবেল, বাদশা বুলবুল, সেলিম চৌধুরী, শুভ্র দেব, কনা, হাবিব ওয়াহিদ, ইমরানসহ বেশ কয়েকজন শিল্পী দেশে রেমিট্যান্স আনায় ভূমিকা রাখছেন। তাদের মধ্যে কয়েকজন নবীন শিল্পীও আছেন। এই শিল্পীদের নামে নিয়মিত বৈদেশিক মুদ্রা আসছে বলে জানান রেজিস্ট্রার অব কপিরাইটস।

নয়া শতাব্দী/এমআর

নয়া শতাব্দী ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

এ সম্পর্কিত আরো খবর
  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

আমার এলাকার সংবাদ