দেশের প্রেক্ষাগৃহে আগামী ১২ নভেম্বর মুক্তি পাচ্ছে ‘রেহানা মরিয়ম নূর’। এরই মধ্যে সিনেমাটির মুক্তির সংবাদ দারুণ সাড়া ফেলেছে দর্শকদের মাঝে। কান চলচ্চিত্র উৎসবে প্রতিযোগিতা বিভাগে প্রথমবারের মতো নির্বাচিত বাংলাদেশি সিনেমা হওয়ায় ‘রেহানা মরিয়ম নূর’ প্রেক্ষাগৃহে গিয়ে দেখার আগ্রহ অনেক সিনেমাপ্রেমীর।
সিনেমাটির কেন্দ্রীয় চরিত্র ‘রেহানা’ মানে আজমেরি হক বাঁধন। তাকে নিয়ে এখন অনেক গল্প। গল্পের বাইরে আবার উপস্থিত হয় নানা গসিপও। বাঁধন তার গল্পের পেছনের গল্পগুলো ভাগাভাগি করলেন গত সোমবার। গণমাধ্যমকর্মীদের সঙ্গে এক আড্ডায় বলেছেন তার জীবনের ঘটে যাওয়া নানা গল্প। তার সাফল্যের পেছনে রয়েছে হাসি, কান্না ও আনন্দ-বেদনা। এমন সব গল্পই করেছেন তিনি বিনোদন সাংবাদিকদের সঙ্গে। তারপর কেক কেটে আড্ডার আয়োজনে মিষ্টি মুখে চলতে থাকে আলাপ।
‘রেহানা মরিয়ম নূর’-এর সফলতার রেশ না কাটতেই ছুটে গিয়েছিলেন মুম্বাই। বলিউডের নির্মাতা বিশাল ভরদ্বাজের ‘খুফিয়া’ সিনেমার শুটিং করে ঢাকায় ফিরেছেন বাঁধন। ছবির সহপ্রযোজনা প্রতিষ্ঠান সেন্সমেকারস প্রোডাকশনের আয়োজনে গুলশান ১ নম্বরের অফিসে এই আড্ডায় জানালেন চেনা গল্পের অচেনা রঙগুলো। অবশ্য বিসিএস প্রসঙ্গও বাদ পড়েনি আড্ডায়। কেননা ৪৩তম বিসিএস প্রিলিমিনারি পরীক্ষায় দু’দুটি প্রশ্ন এসেছে। সেইসঙ্গে প্রশ্ন এসেছিল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ঘ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষাতেও।
কানের লাল গালিচা, বলিউড এসবের মধ্যে ‘ইনার পিস’ কী পেলেন বাঁধন? অভিনেত্রীর ভাষ্য, ‘এখন যখন সবাই আমাকে বলেন, বাঁধন এখন তোমার এত অ্যাচিভমেন্ট, তুমি এত কিছু করে ফেলতেছো, তুমি কানে চলে গেছ, তুমি বলিউডের বিশাল ভরদ্বাজের কাজ করছ। তোমাকে নিয়ে এত আলোচনা হচ্ছে, এত বড় একটা অ্যাওয়ার্ডের জন্য নমিনেশন পেয়েছ। কিন্তু আমার সবচেয়ে বড় অর্জন হচ্ছে আমার মেয়ে আমাকে হেরে যেতে দেখছে না। আমি মনে করি, এটাই আমার বড় প্রাপ্তির জায়গা।’
এমনকি এক সময় আত্মহত্যাও করতে চেয়েছিলেন বলে জানালেন এই অভিনেত্রী। তবে তিনি ঘুরে দাঁড়িয়েছেন। বাঁধন বলেন, ‘২০০৫ সালের কথা। সে সময় আমার সঙ্গে অনেক অবিচার হয়েছে এবং পারিবারিকভাবে অনেক সহিংসতার শিকার হয়েছি। সে কারণেই আমি দু’বার আত্মহত্যার চেষ্টা করেছি। সব মিলিয়ে সে সময়টা আমার জন্য খুবই কঠিন ছিল। তখন যদি আমি মরে যেতাম অনেক নিউজ হত। যে যুদ্ধ করতে করতে মরে গেল মেয়েটি। নির্যাতিতা হতে হতে মারা গেল। যেহেতু আমি মারা যাইনি তাই আমি মনে করি এখন জীবিত ডাইনি হয়ে গেছি।’
আজমেরী হক বাঁধন আরো বলেন, ‘আমাদের সিনেমা (রেহানা মরিয়ম নূর) নিয়ে যে সাড়া পাচ্ছি প্রতিদিন তাতে আমি রীতিমতো আপ্লুত। আমি চেষ্টা করব যত বেশি হলে সম্ভব সরাসরি দর্শকদের সঙ্গে বসে সিনেমা দেখবার।’
জুলাইয়ে কান চলচ্চিত্র উৎসবে হয়েছিল সিনেমাটির ওয়ার্ল্ড প্রিমিয়ার। এরই মধ্যে সিনেমাটি ঘুরে এসেছে মেলবোর্ন ফিল্ম ফেস্টিভ্যাল, বিএফআই লন্ডন ইন্টারন্যাশনাল ফিল্ম ফেস্টিভ্যাল, হংকং এশিয়া ফিল্ম ফেস্টিভ্যাল, বুশান ইন্টারন্যাশনাল ফিল্ম ফেস্টিভ্যাল, সিডনি ইন্টারন্যাশনাল ফিল্ম ফেস্টিভ্যালসহ মোট ১৩টি আন্তর্জাতিক ফিল্ম ফেস্টিভ্যাল থেকে। অপেক্ষায় আছে সিঙ্গাপুরসহ আরো বেশ কিছু দেশে যাওয়ার। আর বাংলাদেশের হয়ে ‘রেহানা মরিয়ম নূর’ প্রতিযোগিতা করতে যাচ্ছে ৯৪তম অস্কারের ইন্টারন্যাশনাল ফিচার ফিল্ম বিভাগে।
নয়া শতাব্দী/এমআর
মন্তব্য করুন
আমার এলাকার সংবাদ