ঢাকা, শুক্রবার, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৫ আশ্বিন ১৪৩১, ১৬ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬
শোবিজ অঙ্গনে ‘মৃত্যু গুজব’

সমাধান কোন পথে

প্রকাশনার সময়: ৩১ অক্টোবর ২০২১, ০৬:৪৬ | আপডেট: ৩১ অক্টোবর ২০২১, ১৩:০৭

শোবিজ অঙ্গনের শিল্পীদের নিয়ে মাঝেমধ্যেই ছড়িয়ে পড়ে মৃত্যুর গুজব। এর আগে ফকির আলমগীর, এন্ড্রু কিশোর, এটিএম শামসুজ্জামান, আজম খান, আইয়ুব বাচ্চু, নিপুসহ অনেকে সুস্থ থাকলেও তাদের নিয়ে ‘মৃত্যু গুজব’ রটে যায় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে। অনেক সময় ফ্যাক্ট চেক না করে বিভিন্ন ভূঁইফোড় অনলাইন পোর্টাল থেকেও এ ধরনের সংবাদ প্রচার করা হয় বলে দাবি করছেন অভিনয় জগতের মানুষেরা। এমন খবর ছড়ানোর কারণে এসব বরেণ্য শিল্পীর পরিবারের সদস্যরা সংবাদমাধ্যমের কাছে বিভিন্ন সময় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।

সম্প্রতি কিংবদন্তি অভিনেতা আলমগীরের মৃত্যুর গুজব ছড়িয়ে পড়ে ফেসবুকে। এ বিষয়ে অভিনেতার স্ত্রী সংগীতশিল্পী রুনা লায়লা বলেন, ‘ভাবাই যায় না যে এরকম মন-মানসিকতা হতে পারে মানুষের! একজন সুস্থ মানুষ সম্পর্কে এভাবে মৃত্যুর গুজব ছড়িয়ে তার পরিবারকে অস্বস্তিকর পরিস্থিতিতে ফেলায় কার কী লাভ হয়েছে বা সেই মানুষগুলোইবা কী মজা পাচ্ছে, তাও জানি না। এ ধরনের ঘটনায় মানুষের মধ্যে বিভ্রান্তির সৃষ্টি হয়। আত্মীয়স্বজন, বন্ধু-বান্ধবরা উদ্বিগ্ন হয়ে আমাদের একের পর এক ফোন দিয়েই যাচ্ছেন যে, কী হলো! কী হলো!’

যোগ করে শতাব্দীর শোবিজকে তিনি বলেন, ‘আমার মনে হয় ব্যাপারগুলো উদ্দেশ্য প্রণোদিতভাবেই অনেক পোর্টাল প্রচারের কাটতি বাড়ার জন্য এমনটা করে। কিন্তু এটা তো অমানবিক একটা জিনিস; না জেনেই গুজব ছড়িয়ে দেয়ার কোনো যৌক্তিকতা তো আমি দেখি না। আমার মেয়ে লন্ডনে থাকে, বেচারি বলে- আমি ঘুমাচ্ছিলাম, হঠাৎ ফোন পেয়ে আমি তো ভয় পেয়ে গিয়েছিলাম যে কী সর্বনাশ হলো!’

তবে এই ধরনের গুজব বন্ধে কী করা যেতে পারে বলে মনে করেন? রুনা লায়লা বলেন, ‘কর্তৃপক্ষ (আইন প্রণয়নকারী সংস্থা) যারা এই ব্যাপারে ইনভেস্টিগেশন করে থাকেন, তারা যদি খতিয়ে দেখেন এই বিষয়গুলো কারা করছেন বা কেন করছেন এবং পদক্ষেপ নেন, তবেই তো এই গুজব ছড়ানোর বিষয়গুলো বন্ধ হবে। আর এইসব গুজব বন্ধ করতেই হবে, কারণ শুধু উনার (আলমগীর) ব্যাপারই না কয়েকদিন পরপরই মিডিয়ার অনেক মানুষের নামেই মৃত্যুর গুজব ছড়িয়ে পড়ে। সাইবার ক্রাইমে যারা আছেন, তাদের উচিত এইগুলো বন্ধ করা।’

সংগীতশিল্পী রুনা লায়লা জানান, অভিনেতা আলমগীরের নামে প্রথমে মৃত্যুর কথা লেখা হয় একটা ভূঁইফোড় অনলাইন পোর্টালে। পরে এটা ছড়িয়ে পড়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে। সংগীতশিল্পীর ভাষ্য, ‘এই ক্ষেত্রে গণমাধ্যমেরও বস্তুনিষ্ঠ সাংবাদিকতা করা প্রয়োজন। কারণ একটা জিনিস নিশ্চিত হয়ে তারপরই এটা নিয়ে লেখা উচিত।’

এদিকে বর্ষীয়ান অভিনেতা আবুল হায়াত মনে করেন, সরকার যদি কঠিন অ্যাকশন নেয়, মানুষজন যদি হুজুগে কিছু করতে ভয় পায়, তবেই তা বন্ধ হতে পারে। শতাব্দীর শোবিজকে তিনি বলেন, ‘সরকার কঠিন অ্যাকশন নিলেই তা বন্ধ করা সম্ভব হবে। কারণ আমাকে নিয়ে কেউ গুজব ছড়ালে, আমি তো আর তাকে গিয়ে মারতে পারবো না। বড়জোর আমি একটা অভিযোগ দায়ের করতে পারব।

আর এই অভিযোগটা তো আমি সরকারের কাছেই করব, তাই না? এখন সরকার যদি কঠিন অ্যাকশন নেয়, মানুষজন যদি হুজুগে কিছু করতে ভয় পায়, তবেই তা বন্ধ হতে পারে। এছাড়া সামাজিকভাবে কাজ করতে হবে। সেটা রাজনীতিক নেতারা করবে, যারা সামাজিক আন্দোলন করে তারা করবে।

তবে সরকার একা করলে কিছুই হবে না, সব দলকে নিয়েই এই ব্যাপারে কাজ করতে হবে। সরকারি দল-বিরোধী দল সবাইকেই এসবের বিরুদ্ধে সোচ্চার হতে হবে।’

নয়া শতাব্দী/এমআর

নয়া শতাব্দী ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

এ সম্পর্কিত আরো খবর
  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

আমার এলাকার সংবাদ