বাংলাদেশে ভারতীয় টিভি চ্যানেলের সংখ্যা সবচেয়ে বেশি। এখন পর্যন্ত টিভি চ্যানেলের রেটিং পয়েন্ট (টিআরপি) প্রতিষ্ঠানগুলোর পরিসংখান তা-ই বলে। সম্প্রতি ‘ক্লিন ফিড’ আইনে বাংলাদেশে বিদেশি চ্যানেলের সম্প্রচার বন্ধ করে দেয়া হলে তা নিয়ে চলছে আলোচনা-সমালোচনা।
বাংলাদেশের অধিকাংশ নাগরিকেরই প্রশ্ন, আমাদের দেশে ভারতের চ্যানেল সম্প্রচার হয়, কিন্তু ভারতে বাংলাদেশি চ্যানেল সম্প্রচার হয় না কেন? এই প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে গেলে প্রথমেই যে বিষয়টি আসে তা হলো ভারতে টিভি চ্যানেল সম্প্রচারে শুল্ক বা ভ্যাট জটিলতা।
জানা গেছে, পশ্চিমবঙ্গে বাংলাদেশের একটি চ্যানেল চালানোর ক্ষেত্রে বছরে এক একটি এমএসওদের (মাল্টি সার্ভিস অপারেটর/ক্যাবল অপারেটর) পেছনে আর্থিক ব্যয় হতে পারে প্রায় ভারতীয় মুদ্রায় ৭ কোটি রুপি বা তার বেশি।
পশ্চিমবঙ্গে সাত থেকে আটটি বড় মাপের স্যাটেলাইট চ্যানলে সম্প্রচারের এমএসও রয়েছে। ফলে একটি এমএসওকেও যদি এই পরিমাণ অর্থ দিতে হয় তা হলে সবকটি এমএসওতে বাংলাদেশের চ্যানেল চালাতে গেলে বিপুল পরিমাণ অর্থ ব্যয় হবে শুধু পশ্চিমবঙ্গে বাংলাদেশের চ্যানেল চালানোর জন্য। সে ক্ষেত্রে বাংলাদেশের চ্যানেল পশ্চিমবঙ্গে চালানো হলে বাংলাদেশের চ্যানেল মালিকদের লাভ কতটা ঘরে ঢুকবে তা নিয়ে সন্দেহ থেকেই যায়। বিজ্ঞাপনদাতারা সে ক্ষেত্রে কতটা আগ্রহ দেখাবেন তা নিয়েও সংশয় রয়েছে।
কলকাতার বাংলাদেশ উপ-দূতাবাসের বিদায়ী প্রধান সচিব (প্রেস) মোফাকখারুল ইকবাল গণমাধ্যমে বলেন, ‘পশ্চিমবঙ্গে বাংলাদেশের চ্যানেল চালানোর ক্ষেত্রে ক্যাবল নেটওয়ার্ক সংস্থাগুলো মোটা অঙ্কের অর্থ দাবি করে। যে কারণেই বাংলাদেশের চ্যানেল ব্যবসায়ীরা পশ্চিমবঙ্গে চ্যানেল চালানোর ক্ষেত্রে আগ্রহ হারিয়ে ফেলেন।’
এমনিতে বাংলাদেশের চ্যানেল সম্প্রচারে ভারতে কোনো নিষেধাজ্ঞা নেই। এদেশের অনেক নাটক পশ্চিমবঙ্গে যথেষ্ট জনপ্রিয়। মানুষ ইউটিউবের মাধ্যমে সেসব নাটক দেখে থাকেন। তবে বাংলাদেশের কোনো টিভি চ্যানেল ভারত তথা কলকাতা ও পশ্চিমবঙ্গে দেখা যায় না। ডিশ অ্যান্টেনার মাধ্যমে সীমান্তবর্তী কিছু স্থানে দুয়েকটি চ্যানেল দেখা গেলেও সামগ্রিকভাবে কলকাতার ক্যাবল নেটওয়ার্কে দেখা যায় না বাংলাদেশের কোনো চ্যানেল।
সংশ্লিষ্ট সূত্র বলছে, মূলত কলকাতার এমএসওদের সঙ্গে সমঝোতা না থাকার কারণে পশ্চিমবঙ্গে বাংলাদেশের চ্যানেল দেখা যায় না। এই বিষয়ে পশ্চিমবঙ্গের একটি এমএসও সংস্থার ডিস্ট্রিবিউটর বলেন, ‘আমরা যতদূর জানি তাতে ভারতের আকাশে বাংলাদেশের চ্যানেল চালানোর ক্ষেত্রে সেই অর্থে বাধা নেই।
তবে বাংলাদেশের চ্যানেল চালাতে গেলে পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন এমএসওকে তাদের চার্জ প্রদান করতে হবে। সেই চার্জ প্রদান না করার কারণে বাংলাদেশের চ্যানেল পশ্চিমবঙ্গে দেখা যায় না।’
নয়া শতাব্দী/এমআর
মন্তব্য করুন
আমার এলাকার সংবাদ